শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ঢাকা

‘ওরা আমার স্বামীকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করেছে’

জেলা প্রতিনিধি, লক্ষ্মীপুর
প্রকাশিত: ০৯ আগস্ট ২০২৪, ০১:০২ পিএম

শেয়ার করুন:

ওরা আমার স্বামীকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করেছে
নিহত মনির হোসেন আঠিয়া

ওরা অনেক খারাপ মানুষ। তারা অন্যায়ভাবে আমার স্বামী মনির হোসেন আঠিয়াকে কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে। তিন দিন হয়ে গেল - আজও পুলিশ একবারের জন্য তদন্ত করতে আসেনি। বুঝি আমার স্বামীর হত্যার সঠিক বিচার পাবো না? আমার স্বামীর নিথর দেহ তিন দিন ধরে পড়ে আছে হাসপাতালের লাশ কাটার ঘরে। জীবন সঙ্গীকে হারিয়ে তিন দিন পর গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে পেয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে কথাগুলো বলেন তাসলিমা বেগম।

বৃহস্প্রতিবার (৮ আগস্ট) বিকেলে লক্ষ্মীপুর জেলার রামগঞ্জ পৌরসভার (১ নম্বর ওয়ার্ড) সোনাপুর গ্রামে সেলিম আঠিয়ার বাড়িতে গেলে নিহত মনির আঠিয়ার স্ত্রী তাসলিমা বেগম, মেয়ে বর্ষা ও ভাগ্নি জান্নাতুল ফেরদৌসসহ স্বজনরা হত্যাকান্ডের বর্ণনা সাংবাদিকদের কাছে তুলে ধরেন।


বিজ্ঞাপন


আরও পড়ুন: শরীয়তপুর স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা

নিহত মনির আঠিয়া সোনাপুর গ্রামের মৃত আমিন উল্লাহ আঠিয়ার ছেলে।

এর-আগে,সোমবার (৫ আগস্ট) রাতে জমি সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে মনির হোসেন আঠিয়াকে রামগঞ্জ উপজেলা ফায়ার সার্ভিস এলাকায় পরিকল্পিতভাবে নৃশংসভাবে কুপিয়ে জখম করে তার প্রতিপক্ষের লোকজন। মুমূর্ষু অবস্থায় রামগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য কুমিল্লা হাসপাতালে নিলে সেখানে তিনি মারা যান। বর্তমানে তার লাশ লক্ষ্মীপুর জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে রয়েছে।

মনির হোসেন আঠিয়াকে হত্যার ঘটনায় যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। তারা হলেন - প্রতিবেশী হারুন আঠিয়ার ছেলে মো. কামাল, নাছির, মো. জসিম ও মো. আলী আঠিয়া।


বিজ্ঞাপন


নিহত মনির আঠিয়ার ভাগ্নি জান্নাতুল ফেরদৌস ঢাকা মেইলকে বলেন, তার মামা একজন ভালো মানুষ ছিলেন। অভিযুক্তরা এলাকার চিহ্নিত খারাপ মানুষ। তারা অন্যায়ভাবে তার মামাকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করেছে। দেশের চলমান পরিস্থিতির কারণে পুলিশ এখন পর্যন্ত তদন্ত করতে ঘটনাস্থলে আসেনি। আমরা এ হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।

আরও পড়ুন: চাঁপাইনবাবগঞ্জে শিক্ষার্থীর চোখ উপড়ানো লাশ উদ্ধার

নিহত মনির আঠিয়ার মেয়ে মাহমুদা খানম বর্ষা সাংবাদিকদের জানান, গত সোমবার রাতে উপজেলার ফায়ার সার্ভিস সংলগ্ন মসজিদ থেকে এশার নামাজ শেষ করে বাড়িতে ফিরছিলেন তার বাবা মনির আঠিয়া। ওই সময় তাকে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। তখন মনির আঠিয়ার আত্মচিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে এলে অভিযুক্তরা পালিয়ে যায়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত জসিম মুঠোফোনে জানান, মনির আঠিয়ার হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে তাদের জানা নেই। ঘটনার দিন তারা পলাতক ছিল। তারা আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তখনকার পরিস্থিতি খুব খারাপ ছিল। এটা মিথ্যা অভিযোগ।

অন্যদিকে রামগঞ্জ থানা পুলিশের সদস্যরা কর্মবিরতিতে ও মামলা না থাকায় এখনও ময়নাতদন্ত করা সম্ভব হয়নি ডাক্তারদের পক্ষে। তাইতো মরদেহটি পড়ে আছে সদর হাসপাতালে।

এবিষয়ে রামগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সোলাইমান বলেন, মোবাইল ফোনে নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে মনির আঠিয়া নামে এক ব্যক্তিকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। পুলিশের কর্মবিরতি থাকায় ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো সম্ভব হয়নি।

সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার অরূপ পাল বলেন, কোন মামলা না থাকায় এবং পুলিশ সদস্যরা কর্মবিরতিতে থাকায় এখনও মরদেহটির ময়নাতদন্ত করা সম্ভব হয়নি। আমরা একাধিকবার পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছি। বিষয়টি তিনি জেলা সিভিল সার্জনকে জানিয়েছেন। তবে এখনও মরদেহটি ময়নাতদন্ত করার অনুমতি পাইনি।

প্রতিনিধি/ এমইউ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর