কিশোরগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচিতে সংঘর্ষের কারণে ছয়জন নিহত হয়েছে। এ সময় আহত হয়েছে শতাধিক।
রোববার (৪ আগস্ট) দুপুরে এ ঘটনা ঘটেছে। মূলত, রাতের দিকে মৃতের সংখ্যা ছয়জনে গিয়ে ঠেকে।
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন: লক্ষ্মীপুরে সংঘর্ষে ১১ জন নিহত
এসব হতাহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতালের পরিচালক ডা. আকরাম উল্লাহ ও শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম হাসপাতালের পরিচালক ডা. হেলাল উদ্দিন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সকাল ১০টার দিকে স্টেশন রোড এলাকায় দুই পক্ষ মুখোমুখি হলে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। দু’পক্ষের হাতেই লাঠিসোঁটা থেকে শুরু করে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র ছিল।
কিছুক্ষণ দুই পক্ষের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া, ঢিল ছোড়াছুড়ির পর আন্দোলনকারীদের ধাওয়ায় আওয়ামী লীগের লোকজন ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়ে। বেশ কিছু গুলির শব্দ তখন শোনা যায়। দুই পক্ষের সংঘাতে পুরো শহরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বন্ধ হয়ে যায় দোকানপাট, বিভিন্ন অফিস।
বিজ্ঞাপন
থেমে যায় যান চলাচলও। বলতে গেলে এক বিভীষিকাময় পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় পুরো শহরে। একপর্যায়ে পুরো স্টেশন রোড এলাকা কয়েক হাজার আন্দোলনকারীর দখলে চলে যায়। বিক্ষুব্ধ হয়ে তারা জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে হামলা চালায়। কার্যালয়ের সব আসবাবপত্র ভাংচুর করে অফিসে আগুন ধরিয়ে দেয়।
আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে ঘণ্টাখানেক বিক্ষোভ করে তারা। পরে খরমপট্টি এলাকায় জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশফাকুল ইসলাম টিটুর বাসাও হামলার শিকার হয়। হামলাকারীরা বাসায় আগুন ধরিয়ে দেয়। ভাংচুর করে বেশ কয়েকটি গাড়ি। সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের বাসায় ঢুকে সেখানে আশ্রয় নেওয়া কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীকেও কুপিয়ে জখম করা হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হামলা ও সংঘর্ষে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ছাত্রদল, যুবদল, ছাত্রশিবির এবং বিএনপির নেতাকর্মীরাও অংশগ্রহণ করেছেন।
আরও পড়ুন: বরিশালে বিজয় উল্লাসে জনতার ঢল
১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত রাস্তায় কোনো আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য দেখা যায়নি। মাঠে পুলিশ না থাকায় সংঘর্ষের তীব্রতা বেশি ছিল। তবে দুপুর ১টার পর রাস্তায় অবস্থান নেয় পুলিশ। তখন তাদের সঙ্গে গৌরাঙ্গবাজার এলাকায় আন্দোলনকারীদের ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া শুরু হয়। গৌরাঙ্গবাজারসহ শহরের বেশ কিছু এলাকায় এভাবে দীর্ঘ সময় পুলিশ ও আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষ চলতে থাকে। পুলিশ টিয়ারগ্যাস, রাবার বুলেট, সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালায়।
আওয়ামী লীগ মাঠ ছেড়ে চলে যাওয়ার পর দুপুর ১টা পর্যন্ত আন্দোলনকারীরা শহরের বিভিন্ন সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন। এ সময় তারা সরকারের পদত্যাগ দাবি করে নানান ধরনের স্লোগান দেন। বর্তমানে শহরে উত্তেজনা ও থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
প্রতিনিধি/ এমইউ