বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সরকার পতনের এক দফা দাবিতে অসহযোগ আন্দোলনের প্রথম দিনে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় বিভাগীয় শহর রংপুর। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের দফায় দফায় সংঘর্ষে দুইজন নিহত হয়েছেন। এ সময় সাংবাদিকসহ প্রায় ৩০ জন আহত হয়েছেন।
শনিবার (৪ আগস্ট) দুপুরের দিকে নগরীর সিটি করপোরেশনের সামনে, সুপার মার্কেট, জাহাজ কোম্পানি ও পায়রা চত্বরে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
বিজ্ঞাপন
সরেজমিনে দেখা যায়, সকাল থেকেই রংপুর মহানগর ও জেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় ঘিরে লাঠিসোটা নিয়ে অবস্থান নেন আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। অন্যদিকে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীরা অবস্থান নেন নগরীর টাউন হল চত্বরে। সেই সাথে নগরীর বিভিন্ন পাড়া মহল্লার অলিগলিতে বিএনপি ও জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা অবস্থান নেন।
বেলা ১২টার দিকে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা জাহাজ কোম্পানি মোড় থেকে পায়রা চত্বরে অবস্থান নিয়ে শিক্ষার্থীদের ধাওয়া দিলে তারা সিটি করপোরেশনের দিকে চলে যায়। পরে টাউন হলকেন্দ্রিক অবস্থান নেওয়া শিক্ষার্থীরা যোগ দিলে পাল্টা ধাওয়া করেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। এতে মুখোমুখি সংঘর্ষ শুরু হয়।
ঘটনাস্থলে কয়েকজন গুরুতর আহত হন। তাদের উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে দুজনকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। তাৎক্ষণিকভাবে নিহত দুইজনের নাম-পরিচয় জানা যায়নি।
বিজ্ঞাপন

এদিকে রংপুর সিটি করপোরেশনের সামনে অবস্থান করা এনটিভির ক্যামেরাপারসন আরমান, চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের রিপোর্টার ফকরুল শাহীন, নিউজ টোয়েন্টিফোরের রিপোর্টার রেজাউল ইসলাম মানিক, একুশে টিভির ক্যামেরাম্যান আলী হায়দার রনি, ইত্তেফাকের ফটো সাংবাদিক রাশেদ রাব্বি, অনলাইনের মিজানসহ ১০ জন গণমাধ্যম কর্মীকে মারধর করেছেন আন্দোলনকারীরা।
অন্যদিকে রংপুর জেলার বিভিন্ন উপজেলায় আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে আগুন দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। রংপুর-২ (বদরগঞ্জ) আসনের আওয়ামী লীগের এমপি ডিউক চৌধুরীর বাড়িতে ভাঙচুর চালিয়ে আগুন ও পীরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে আগুন দেন আন্দোলনকারীরা। সেই সাথে মিঠাপুকুর উপজেলার পরিষদ চত্বরে ইউএনও অফিস, বেগম রোকেয়া অডিটোরিয়াম, আনসার ভিডিপিসহ বিভিন্ন দফতরে আগুন দেন আন্দোলনকারীরা।
এই মুহূর্তে রণক্ষেত্র রংপুর। দফায় দফায় সংঘর্ষ ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার পর রংপুরের প্রধান নগরীর সিটি করপোরেশনের সামনে, সুপার মার্কেট, জাহাজ কোম্পানি ও পায়রা চত্বরসহ বিভিন্ন এলাকা দখলে নিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।
প্রতিনিধি/জেবি

