গাইবান্ধা জেলার বিভিন্ন অঞ্চলে গরুর "ল্যাম্পি স্কিন" রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন পশু মালিকরা। গত এক মাসে প্রায় অর্ধলাখ গরু এ রোগে আক্রান্ত হয়। তার মধ্যে শতাধিক পশুর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় জানিয়েছে, গত ২০ দিনে ১৬ হাজার ৩৮৩ গরু ল্যাম্পি রোগে আক্রান্ত হয়। এর মধ্যে ৭৫টি গরুর মৃত্যু হয়েছে।
শুক্রবার (২ আগস্ট) সরেজমিনে গাইবান্ধা এলাকার গরুর মালিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, হঠাৎ গরুর চামড়ার বিভিন্ন স্থানে ফুলে চাকা-চাকা হয়। গরুর শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে। মুখে লালা থাকে এবং প্রচুর মাছি পড়তে থাকে গরুর গায়ে। ইতোমধ্যে মাহাবুর রহমান ও ইয়াকুব আলীর তিনটিসহ আরও অনেকের শতাধিক গরু মারা গেছে। ইতোমধ্যে এ রোগটি ছড়িয়ে পড়ছে সর্বত্র। প্রায় দুই বছর ধরে ল্যাম্পি রোগটি দেখা দেয়। এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন পশুর মালিক বা খামারিরা।
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন: চলতি বন্যায় সিরাজগঞ্জের কৃষিতে ৬৩ কোটি টাকার ক্ষতি
গাইবান্ধা জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় থেকে জানানো হয় - জেলায় প্রায় ১৭ হাজার খামার রয়েছে। এছাড়া অধিকাংশ পরিবার গরু পালন করেন। এখানে গত মাসের ১০ তারিখ থেকে এ পর্যন্ত ১৬ হাজার ৩৮৩ গরুর ল্যাম্পি হয়েছে। এসব গরুর চিকিৎসা দেওয়াসহ ৪৭০টি গরুর টিকা প্রদান করা হয়। এর মধ্যে ৭৫টি গরুর মৃত্যু হয়েছে।
শ্রীকলা গ্রামের কৃষক জমুর উদ্দিন বলেন, আমার একটি বাছুর হঠাৎ করে ল্যাম্পি রোগে আক্রান্ত হয়েছে। সঠিক কোনো চিকিৎসা সেবা পাচ্ছি না। এ নিয়ে খবুই চিন্তিত।
বিজ্ঞাপন
আরেক গৃহস্থ ইয়াকুব আলী বলেন, গরুর পালন করেই পরিবারের চাহিদা পূরণের চেষ্টা করি। এরই মধ্যে একটি বিদেশী জাতের গরু ল্যাম্পি রোগে মারা গেছে। এটির দাম প্রায় এক লাখ টাকা। এখন আমি কীভাবে ঘুরে দাঁড়াবো, তা নিয়ে নির্ঘুম রাত কাটছে।
স্থানীয় পশু চিকিৎসক মিজানুর রহমান মণ্ডল বলেন, গত সপ্তাহের তুলনায় এখন এ রোগে গরু আক্রান্ত হচ্ছে বেশি। আক্রান্ত গরুগুলোকে যত্নসহকারে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। একইসাথে এ রোগ প্রতিরোধের বিষয়ে গরুর মালিকদের নানান পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। আতঙ্কিত হওয়া বা ভয়ের কোনো কারণ নেই।
গাইবান্ধা জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মাহফুজার রজমান জানান, গরুর "ল্যাম্পি স্কিন" রোগ প্রতিরোধে মাঠে কাজ করা হচ্ছে। খামারি ও সাধারণ গৃহস্থদের সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য উঠান বৈঠক, সভা, লিফলেট বিতরণ এবং চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে।
প্রতিনিধি/ এমইউ