বাংলাদেশ-ভারত ছিটমহল বিনিময়ের নবম বর্ষপূর্তি উদযাপন করেছেন ছিটমহলবাসী। বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ভারতের সাবেক সবচেয়ে বড় ছিটমহল দাসিয়ারছড়া ছিটমহলের বাসিন্দারা আলোর মিছিলসহ কেক কেটে নবম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করেন। স্থানীয় কালীরহাট বাজারে ৩১ জুলাই রাতে ৬৮টি মোমবাতি প্রজ্বালন করে ৬৮ বছরের বন্দি জীবনের ইতিহাস স্মরণ করেন তারা।
বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) দুপুরে ছিটমহল আন্দোলনের নেতা গোলাম মোস্তফা খান, আলতাফ হোসেন, মনির হোসেনসহ একদল বিলুপ্ত ছিটমহলবাসী দাসিয়ারছড়াকে ইউনিয়ন পরিষদ করার দাবি জানিয়ে ফুলবাড়ী ইউএনওর মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরাবর এক স্মারকলিপি প্রদান করেন।
বিজ্ঞাপন
এর আগে, কালীরহাট বাজারে ছিটমহল আন্দোলনের নেতা আলতাফ হোসেনের সভাপতিত্বে সাবেক বাংলাদেশ ভারত ছিটমহল বিনিময় সমন্বয় কমিটির আয়োজনে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. এজাহার আলী। এতে উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মেহেদী হাসান, শামিমা আক্তার পারুল ও ফুলবাড়ী থানার ওসি নওয়াবুর রহমানসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
বক্তারা জানান, দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের পর ১৯৭৪ সালের ইন্দিরা-মুজিব চুক্তি অনুযায়ী ২০১৫ সালে ছিটমহল বিনিময়ে সম্মত হয় ভারত ও বাংলাদেশ। এর সুফল পান দু’দেশের ১৬২টি ছিটমহলের প্রায় ৫৮ হাজার মানুষ। বাংলাদেশের ভূখণ্ডে যুক্ত হয় ভারতের ১১১টি ছিটমহল ও ভারতের ভূখণ্ডে যুক্ত হয় বাংলাদেশের ৫১টি ছিটমহল। ছিটমহল বিনিময় চুক্তি অনুযায়ী, ভারতের ভেতরে থাকা বাংলাদেশের ১১১টি ছিটমহলের ১৭ হাজার ১৬০.৬৩ একর জমি বাংলাদেশকে ফিরিয়ে দেয় ভারত। এ ছাড়া তারা অপদখলীয় ২ হাজার ২৬৭.৬৮২ একর ভূমিও বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তর করে। অন্যদিকে ভারতের ভেতরে থাকা বাংলাদেশের ৫১টি ছিটমহল, যার জমির পরিমাণ ৭ হাজার ১১০.০২ একরসহ অপদখলীয় ২ হাজার ৭৭৭.০৩৮ একর জমি ভারতকে ফিরিয়ে দেয় বাংলাদেশ।
সাবেক বাংলাদেশ-ভারত ছিটমহল বিনিময় সমন্বয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা খান জানান, দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের পর ৯ বছর আগে মুক্তি পাওয়া দিনটিকে স্মরণ করতে দাসিয়ারছড়ায় রাত ১২টা ১ মিনিটে মোমবাতি প্রজ্বালনসহ কেক কাটা হয়েছে। ১৮টি মসজিদে মিলাদ মাহফিল হয়েছে। মন্দিরে হয়েছে প্রার্থনা। দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে হাডুডু খেলার আয়োজন করা হয়।
ইউএনও রেহেনুমা তারান্নুম বলেন, সাবেক ছিটমহলগুলোর জনগোষ্ঠীকে দেশের মূল স্রোতের সঙ্গে একীভূত করতে রাস্তা, বিদ্যুৎ, স্কুলসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হচ্ছে। উন্নয়নের এ ধারা অব্যাহত থাকবে।
বিজ্ঞাপন
প্রতিনিধি/ এজে