মঙ্গলবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ঢাকা

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের পক্ষে বিবৃতি

চবিতে রাতের অন্ধকারে একাধিক শিক্ষকের বাসায় হামলা

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক, চবি 
প্রকাশিত: ৩১ জুলাই ২০২৪, ০৬:১৫ পিএম

শেয়ার করুন:

চবিতে রাতের অন্ধকারে একাধিক শিক্ষকের বাসায় হামলা

কোটা সংস্কার আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের আক্রমণ, হত্যা ও গণগ্রেফতারের নিন্দা ও বিচার দাবি জানানোয় রাতের অন্ধকারে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) একাধিক শিক্ষকের বাড়িতে হামলা ও হাতবোমা বিস্ফোরণের অভিযোগ উঠেছে। 

মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) দিবাগত রাত ২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণ ক্যাম্পাসস্থ শিক্ষক কলোনিতে এই হামলার ঘটনা ঘটে।


বিজ্ঞাপন


এ বিষয়ে নিরাপত্তা চেয়ে বুধবার (৩১ জুলাই) দুপুরে চবি ভিসি, উপ-ভিসি, রেজিস্ট্রার, প্রক্টর ও শিক্ষক সমিতি বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন দর্শন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক। 

একই সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন ও অণুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আতিয়ার রহমানের বাসায়ও আক্রমণ করেন দুর্বৃত্তরা। 

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে অভিযোগপত্রে মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক লিখেন, গতরাত ২টায় আমার বাসা এসই-১৫'র সামনে আনুমানিক ১৬/১৭জন তরুণ ৬/৭টি মোটরসাইকেল নিয়ে এসে আমার নাম ধরে উচ্চস্বরে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করতে থাকে। তারা আনুমানিক ৭/৮ মিনিট অবস্থান করে। এই সময়ে তারা ৩টি হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটায়। এরপর তারা পশ্চিম দিকে চলে যায়।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে নিরাপত্তা চেয়ে তিনি আরও উল্লেখ করেন, ওই সময়ে বাসার সামনে ডিউটিরত প্রহরীদ্বয় ও আশপাশের প্রতিবেশিরা এই চরম অনাকাঙিক্ষত ঘটনার সাক্ষী। বাসার সামনে ইলেক্ট্রিক পোলে লাগানো সিসিটিভির ফুটেজ দেখে আক্রমণকারীদের চিহ্নিত করা সম্ভব। এ ঘটনার পরে ব্যক্তিগতভাবে আমি চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আশা করি এ ব্যাপারে আপনি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।


বিজ্ঞাপন


ড. মো. আতিয়ার রহমানের বাসায় আক্রমণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, রাত ২টার দিকে আমার বাসায় আক্রমণ করা হয়। একসাথে এতোগুলো মোটরসাইকেল আসায় আমার ছেলে ভয় পেয়ে ঘুম থেকে উঠে যায়। পরে সে বাসার লাইট নিভিয়ে ভিডিও করা শুরু করে। মোটরসাইকেল থেকে নেমে দুর্বৃত্তরা প্রথমে লাঠিসোঁটা দিয়ে আমার বাসার গেইটে ধুমধাম করে বিকট শব্দ করলে আমি ঘুম থেকে লাফিয়ে উঠি। তখন বাজে রাত সোয়া ২টা। বাসার ছাদ থেকে ‘ওখানে কে’ জিজ্ঞেস করলে, তখন তারা গেইটের সামনে তিনটা বোমা বিস্ফোরণ করে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। 

তিনি আরও বলেন, সারাদেশে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় আমরা আজ মানববন্ধন করেছিলাম। এরপর ভিসির সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় আমরা সব শিক্ষকরা মিলে শিক্ষকদের বাসায় হামলার বিষয়টি জানিয়েছি। তিনি দুঃখ প্রকাশ করেছেন। ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাসও দিয়েছেন।

দর্শন বিভাগের শিক্ষক মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক বলেন, আমি পুরো বিষয়টি ভিসি এবং প্রক্টরকে জানিয়েছি। আশা করি কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিবে। তবে প্রক্টর আমাকে বললো নেট সমস্যার কারণে সিসি ক্যামেরা ঠিক মতো কাজ করছে না। অথচ আমি খেয়াল করলাম যে আমার বাসার সামনের সিসি ক্যামেরাটা খুব স্বাভাবিকভাবেই চলছে।

তিনি আরও বলেন, গতরাতে হামলার পরপরই দেখলাম একটা পুলিশের গাড়িও সেদিক দিয়ে যাচ্ছে। পুলিশের তো দায়িত্ব ছিল এই বন্ধ ক্যাম্পাসে ৭-৮ টা বাইক নিয়ে এত রাতে ঘুরে বেড়ানো, বোমা ফোটানো এসব মানুষ কারা, তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা। আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে দীর্ঘ ৩০ বছর আছি, কখনও এমন কিছু হতে দেখিনি।

চবি প্রক্টর ড. ওহিদুল আলম বলেন, হামলার বিষয়ে মোজাম্মেল স্যার একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। আমরা পুলিশ প্রশাসনকে নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে বিষয়টি অনুসন্ধান করছি। পাশাপাশি পুলিশকে বলে দেওয়া হচ্ছে ক্যাম্পাসে যাতে কেউ ঘোরাফেরা করলে এখন থেকে অবশ্যই জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। 

এর আগে বুধবার দুপুরে ভিসি দফতরে সাংবাদিক হেনস্তার বিচারের বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে দেশের এই পরিস্থিতিতে জিরো পয়েন্টসহ ক্যাম্পাসের সিসিটিভি ফুটেজগুলো অকার্যকর বলে তিনি জানান। 

প্রতিনিধি/একেবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর