বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ঢাকা

ছেলেকে হারিয়ে কান্না থামছে না মেরিনার

জেলা প্রতিনিধি, জয়পুরহাট
প্রকাশিত: ২৬ জুলাই ২০২৪, ০৪:৫২ পিএম

শেয়ার করুন:

ছেলেকে হারিয়ে মেরিনার কান্না আর থামছে না
নিহত মিনহাজুল ইসলাম

মিনহাজুল ইসলামকে দুই বছরের রেখে প্রায় ১৫ বছর আগে স্ত্রী মেরিনা খাতুনের (৪০) সঙ্গে অভিমান করে প্রবাসে চলে যান আবু বক্কর সরদার (৫০)। এরপর তিনি আর দেশে ফেরেননি। সেই থেকে মেরিনা খাতুন বাবার বাড়ি থাকতেন। একসময় গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। মাকে দেখাশোনার জন্য কিশোর মিনহাজ গার্মেন্টে চাকরি নেয়। গত ২০ জুলাই কারফিউ চলাকালে গাজীপুরে গুলিতে নিহত হয় মিনহাজ। সেই থেকে মেরিনার কান্না আর থামছে না। এখন স্বামী-সন্তানহারা তার কী হবে!

মিনহাজুল ইসলামের (১৭) বাড়ি জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার উত্তর রামশালা গ্রামে। গাজীপুরের বড়বাড়ীতে একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করত সে। থাকত খালার বাসায়। গত কোরবানির ঈদের ছুটিতে মিনহাজ বাড়ি এসে অসুস্থ মাকে খালার বাসায় নিয়ে যায়। সেখানে তার মায়ের চিকিৎসা চলছিল। গত ২০ জুলাই কারফিউ চলাকালে বন্ধুদের আমন্ত্রণে বাসা থেকে নিচে নেমেছিল মিনহাজ। পাঁচ বন্ধু মিলে বাসার পাশের সড়কে সিঙ্গারা খাচ্ছিল। এ সময় পুলিশের গুলিতে মিনহাজসহ তিনজন নিহত হয়।


বিজ্ঞাপন


নিহত মিনহাজের খালু শাহ পরান বলেন, ‘মিনহাজ আমাদের সঙ্গে পাঁচতলায় থাকত। গত ২০ জুলাই দুপুর ১২টার দিকে বন্ধুদের সঙ্গে সড়কে যায়। এ সময় কারফিউ চলছিল। এ সময় পুলিশ গুলি ছোড়ে। তার বাঁ কনুই ভেদ করে বাঁ পাঁজরে একটি গুলি লাগে। স্থানীয়রা তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।’

মিনহাজের চাচাতো ভাই মাহফুজ হোসেন বলেন, ‘আমার ভাই কোনো আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত ছিল না। সে গার্মেন্টসে চাকরি করত। ওই দিন রাস্তায় বের হওয়া মাত্র গুলিতে নিহত হয়। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।’

মিনহাজের চাচা মোতালেব হোসেন বলেন, ‘ছোটবেলায় মিনহাজের বাবা বিদেশে চলে গেলে তার মা বাবার বাড়িতে থাকতেন। তার মা অন্যত্র বিয়েও করেননি। একপর্যায়ে তিনি মানসিক রোগী হয়ে পড়েন। অসুস্থ মায়ের একমাত্র সন্তান মিনহাজের রোজগারের টাকায় তার চিকিৎসা চলত। গত কোরবানির ঈদে মাকে উন্নত চিকিৎসা করানোর জন্য ঢাকায় তার খালার বাসায় নিয়ে গিয়েছিল। কোটা আন্দোলনের সময় কারফিউতে গুলিতে সে মারা যায়। এখন টাকার অভাবে তার মায়ের চিকিৎসা থেমে গেছে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নয়ন হোসেন বলেন, ‘যেহেতু ঘটনাটি ঢাকায় ঘটেছে, তাই আমরা কিছু বলতে পারব না। আমাদের কেউ কিছু বলেওনি।’


বিজ্ঞাপন


প্রতিনিধি/একেবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর