সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

কবুতর চুরির অভিযোগে শিশুকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন

জেলা প্রতিনিধি, পিরোজপুর
প্রকাশিত: ২৫ জুলাই ২০২৪, ০৬:১৩ পিএম

শেয়ার করুন:

কবুতর চুরির অভিযোগে শিশুকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন

পিরোজপুরের নাজিরপুরে কবুতর চুরির অভিযোগে মো. সিয়াম ফকির (১১) নামের শিশুকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ ফিরোজা বেগম (৫৫) ও তার মেয়ে লাবনী আক্তারকে (২৬) গ্রেফতার করেছে।

বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) সকালে অভিযুক্তদের নিজ বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।


বিজ্ঞাপন


আটক ফিরোজা বেগম উপজেলার শ্রীরামকাঠী ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের কালিকাঠি  গ্রামের মৃত মন্নান মল্লিকের স্ত্রী।

ভুক্তভোগী সিয়ামের ফুফু কুরছিয়া বেগম জানান, ওই দিন সকাল সাড়ে ৮টার দিকে তিনি খবর পান তার ভাইপো সিয়ামকে তাদের পাশের বাড়ির মৃত মন্নান মল্লিকের স্ত্রী ফিরোজা বেগম (৫৫) ও তার মেয়ে লাবনী আক্তার সকাল ৬টার দিকে কবুতর চুরির অভিযোগ দিয়ে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে মারধর করছে। খবর পেয়ে সেখানে গিয়ে দেখতে পান তার সামনেই অভিযুক্ত মা ও মেয়ে সিয়ামকে গাছের সঙ্গে বেঁধে সকাল ৯টা পর্যন্ত ৩ ঘণ্টা মারধর করছেন। এ সময় তাকেও (ফুফু) তাড়িয়ে দেওয়া হয়।

আরও পড়ুন

চুয়াডাঙ্গায় ভ্যানচালক হত্যায় আসামির আমৃত্যু কারাদণ্ড

স্থানীয় পাশর্বর্তী উত্তর জয়পুর গ্রামের প্রত্যক্ষদর্শী রুবেল ব্যাপারী বলেন, ওই শিশুটিকে মারধরের চিৎকার পেয়ে ওই বাড়িতে যান। সেখানে গিয়ে দেখেন শিশুটিকে একটি সুপারি গাছের সঙ্গে বেঁধে মারধর করা হচ্ছে। এ সময় অভিযুক্ত ফিরোজা বেগম ওই শিশুটিকে মারধর ও ওই প্রত্যক্ষদর্শীকেও মারধর করতে তেড়ে আসেন। পরে থানা পুলিশের সহায়তায় শিশুটিকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।


বিজ্ঞাপন


ভুক্তভোগী শিশুটি জানায়, তাকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে কবুতর চুরির অপবাদ দিয়ে  মা-মেয়ে মিলে সুপারির গাছের সঙ্গে রশি দিয়ে বেঁধে বেদম মারধর করে। সে কবুতর চুরি করেনি বললেও তাকে  প্রায় ৩ ঘণ্টা ধরে মারধর করেন।

thumbnail_Nazirpur_News------pic

অভিযুক্ত আটক ওই দুই নারী থানায় বসে বলেন, ওই শিশু তাদের ২০টি কবুতর চুরি করেছে। তাকে কোনো মারধর করা হয়নি। শুধু বেঁধে রাখা হয়েছে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য ফারুক হোসেন হাওলাদার বলেন, শিশুটির বাবার সঙ্গে মায়ের সম্পর্ক না থাকায় শিশুটি তার দাদির কাছে থাকে। ওই দিন সকালে অভিযুক্ত মা ময়ে গিয়ে শিশুটিকে তার দাদির কাছ থেকে ধরে  নিয়ে আসে। এ সময় শিশুটির দাদি এতে বাঁধা দিলে তাকে ঠেলে কাঁদা মাটিতে ফেলে দেয়।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাক্তার জিনাত তাসনিম বলেন, শিশুটির শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতে ক্ষতের চিহ্ন রয়েছে। তার চিকিৎসা চলছে। অবস্থার বেগতিক মনে হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য সদর হাসপাতালে পাঠানো হবে।

নাজিরপুর থানার ওসি মো. শাহ আলম হাওলাদার বলেন, সকালে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে ভুক্তভোগীকে গাছের সঙ্গে বাঁধা অবস্থায় তাকে উদ্ধার করা হয়। ওই শিশুকে মারধরের অভিযোগে মা মেয়েকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর মামা অহিদুল শেখ বাদী হয়ে একটি অভিযোগ দিয়েছেন।

প্রতিনিধি/এসএস

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর