গাইবান্ধার সাতটি উপজেলার মধ্যে চারটিতে বন্যা দেখা দিয়েছে। এখন পর্যন্ত সেখানকার ৩৯ হাজার ৬৫৯ পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। এসব মানুষদের নিরাপদে রাখতে বিভিন্ন উদ্যোগ ও কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে স্থানীয় প্রশাসন।
সোমবার (৮ জুলাই) সকালে গাইবান্ধা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে এ বিষয়টি জানানো হয়।
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন: গাইবান্ধা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে দুর্নীতির প্রতিবাদে সমাবেশ
প্রশাসক সূত্রে আরও জানা যায়, গাইবান্ধায় বন্যাকবলিত উপজেলা রয়েছে চারটি। এগুলো হচ্ছে - গাইবান্ধা সদর, সুন্দরগঞ্জ, সাঘাটা ও ফুলছড়ি। এসব উপজেলার ২৬টি ইউনিয়নের ৩৯ হাজার ৬৫৯ পরিবার পানিবন্দী রয়েছে। বিশেষ করে সাঘাটা উপজেলায় বন্যা আক্রান্ত পরিবারের সংখ্যা অনেকটা বেশি। বন্যা দুর্গতদের জন্য স্থায়ী-অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রের সংখ্যা ১৮১টি। এর মধ্যে সাঘাটায় ৩৬, সুন্দরগঞ্জে ৪৮, ফুলছড়িতে ২৩, সদরে ২৪, সাদুল্লাপুরে ৩৩, পলাশবাড়ীতে ৬ এবং গোবিন্দগঞ্জে ১১টি আশ্রয়কেন্দ্র চালু করা হয়েছে।
ইতোমধ্যে প্রশাসনের গৃহীত কার্যক্রমে তিন হাজার ৫০ প্যাকেট শুকনা খাবার, ৩৮৫ মেট্রিক টন জিআর চাল এবং নগদ ১৫ লাখ টাকা চারটি উপজেলায় বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ত্রাণ বিতরণ ও উদ্ধার কার্যক্রমের জন্য নৌকা ও স্পীডবোট প্রস্তুত রয়েছে। জেলা-উপজেলায় নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে। ইউনিয়নভিত্তিক বন্যার আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রয়েছে। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর থেকে জেরিকেন এবং ট্যাবলেট সরবরাহ করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: সেন্টমার্টিনে আবারও খাদ্য সংকট
বিজ্ঞাপন
স্থানীয় কুন্দেরপাড়া গণউন্নয়ন কেন্দ্র বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র ও বিভিন্ন বাঁধে ২০ ল্যাট্রিন সেট ও দু’টি নলকুপ স্থাপন করা হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রে টিনসেট স্থাপন করে শতাধিক পরিবারের অস্থায়ী বাসস্থান তৈরি এবং গবাদিপশুর জন্য পলিথিন সিট দেওয়া হয়েছে এক হাজার ফুট। ৪৫টি ইউনিয়নে ২৫০জন স্বেচ্ছাসেবক বন্যা সংক্রান্ত জরুরি সংবাদ প্রচার অব্যাহত রাখছেন। সংস্থার দুই শতাধিক দক্ষ কর্মী ভানবাসী মানুষের জন্য পাশে থেকে উদ্ধার ও ত্রাণ প্রদানে কাজ করে যাচ্ছে। ডব্লউিএফপি’র সহায়তায় ১০ হাজার পরিবারকে শুকনো খাবার হিসেবে বিস্কুট ও সাত হাজার পরিবারের মাঝে পাঁচ হাজার টাকা দেওয়ার পরিকল্পনা এবং বাঁধ ও আশ্রয়কেন্দ্রে ৩০ স্লটে ল্যাট্রিন স্থাপন করা হবে।
গাইবন্ধা জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা জুয়েল মিয়া বলেন, ৬৪৫ মেট্রিকটন জিআর চাল, ৫ লাখ টাকা এবং ২০০ প্যাকেট শুকনা খাবার মজুদ রয়েছে। বন্যার্তদের সহায়তা বিতরণ কর্মসূচি অব্যাহত আছে।
গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী হাফিজুল হক বলেন, ইতোমধ্যে সবগুলো নদ-নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। আজ সোমবার দুপুর ১২টায় ব্রহ্মপুত্রে ২৪ ও ঘাঘট নদের পানি ১৩ সেন্টিমিটার বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। এছাড়া করতোয়া ১২৩ ও তিস্তার পানি ১৭ সেন্টিমিটার নিচে রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় পানি কমেছে অনেকটা। বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি হয়েছে। নদ-নদী ও বাঁধের ঝুঁকি মোকাবিলায় কাজ করা হচ্ছে।
গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক কাজী নাহিদ রসুল জানান, প্রতিটি উপজেলায় মেডিকেল, কৃষি, স্বেচ্ছাসেবক, লাইভস্টোক দল গঠন করা হয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি সংক্রান্ত প্রচার-প্রচারণা চলমান রয়েছে। বন্যা মোবাবিলায় সব ধরনের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
প্রতিনিধি/ এমইউ

