শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

কুমিল্লার নগর রাজনীতিতে সাক্কু যেন উসাইন বোল্ট!

জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ২০ মে ২০২২, ০৮:৫২ এএম

শেয়ার করুন:

কুমিল্লার নগর রাজনীতিতে সাক্কু যেন উসাইন বোল্ট!
ছবি : সংগৃহীত

কুমিল্লা সিটি করপোরেশন যদি হয় খেলার মাঠ, তবে মনিরুল হক সাক্কু সেখানকার উসাইন বোল্ট। এই মাঠে রাজনীতির দৌড়ে তাকে হার মানানো যেন আকাশ কুসুম কল্পনা। নগর রাজনীতিতে সাক্কুর মধ্যে যে বিশেষ কিছু আছে, তা এখন স্পষ্ট। ২০০৫ থেকে ২০২২, কুসিক নির্বাচনের মাঠ দাপিয়ে বেড়িয়েছেন তিনি। নগর রেখেছেন হাতের মুঠোয়। 

২০০৫ সালে এই পৌরসভায় প্রথমবার মেয়র হয়েছেন তিনি। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর পৌরসভা থেকে সিটি করপোরেশন করা হয় কুমিল্লাকে। ২০১২ সালে অনুষ্ঠিত হয় প্রথম সিটি করপোরেশন নির্বাচন। ক্ষমতাসীন দল সেই নির্বাচনে নৌকার সমর্থন তুলে দেয় বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সম্পাদক বর্ষিয়ান রাজনীতিবিদ অধ্যক্ষ আফজাল খানের হাতে। সেবার ধানের শীষের সমর্থনে আফজাল খানের বিপরীতে মাঠে নামেন মনিরুল হক সাক্কু। সাক্কুর ধানের ভারে ৩৫ হাজার ভোটের ব্যবধানে ডুবে যায় কুমিল্লা সিটির আফজাল খানের নৌকা। 


বিজ্ঞাপন


দ্বিতীয়বার কুমিল্লা সিটি নির্বাচন আসে ২০১৭ সালে। সে সময় দলীয় প্রতীকে প্রথম ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। আওয়ামী লীগ প্রার্থী করে আফজল খানের মেয়ে বর্তমান সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য আঞ্জুম সুলতানা সীমাকে। সেবারও ধানের শীষের প্রার্থী হন সাক্কু। নির্বাচনে সীমা তার বাবার তুলনায় ভোট পান বেশি। ব্যবধান কমাতে পেরেছেন অনেকটাই। তবে জয় তুলে নিতে পারেননি। সাক্কু জয় পান ১১ হাজারের কিছু বেশি ভোটে। তিনবারের নির্বাচনে সাক্কুর পরাজয় নেই। ক্রিকেটের ভাষায় যা হ্যাটট্রিক।

এবারও সাক্কুর বিরুদ্ধে নৌকার টিকেট কেঁটেছেন মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি আরফানুল হক রিফাত। নগরীর ২৭টি ওয়ার্ডের তৃণমূল নেতাকর্মীদের একক প্রার্থী হিসেবে কেন্দ্রে নৌকার জন্য নাম যায় রিফাতের। রিফাত নৌকা পেলেও, পরদিনই কুমিল্লায় মাদকের শীর্ষ পৃষ্ঠপোষকের সংবাদ বের হয় তার নামে। শীর্ষ মাদক কারবারির তালিকায় তার নাম আসে খোদ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের গোয়েন্দা প্রতিবেদন থেকে। 

তবে এবার সাক্কুর জন্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছেন বিএনপির সহযোগী সংগঠন স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা নিজাম উদ্দিন কায়সার। তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী। এদিকে নৌকার প্রতীক বঞ্চিত মাসুদ পারভেজ খান ইমরানও ইঙ্গিত দিয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে মাঠে থাকার। এই হিসেবে সাক্কু-রিফাতের জন্য সমান সমান চ্যালেঞ্জ চোখে পড়লেও, বাহার-খান পরিবারের দ্বন্দ্বও খাদ তৈরি করতে পারে নির্বাচনে। সব মিলিয়ে সাক্কু পুরনো রাশিফলে ফিরে গেলে সিটি মেয়র হিসেবে নগর ক্ষমতায় পা দেবে চতুর্থবারের মতো। 

সাবেক মেয়র স্বতন্ত্র প্রতীকে প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কু বলেন, ‘আমার দেওয়া অঙ্গিকারের ৬৫ শতাংশ কাজ সম্পন্ন করেছি। বাকি কাজ সম্পূর্ণ করতে নির্বাচন করছি।’


বিজ্ঞাপন


নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আরফানুল হক রিফাত বলেন, ‘নেত্রী আমাকে প্রতীক দিয়েছেন। জীবন দিয়ে হলেও নেত্রীকে সিটি নির্বাচনে জয় উপহার দেবো।’

উল্লেখ্য, আগামী ১৫ জুন ইভিএমের মাধ্যমে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ২৬ মে। ২৭ মে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে। নির্বাচনে ১০৫টি কেন্দ্রে ৬৪০টি ভোট কক্ষ থাকবে। সব প্রার্থীকে আচরণবিধি মেনে চলার আহ্বান জানানো হয়েছে। নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন দুইজন তৃতীয় লিঙ্গের ভোটারসহ ২ লাখ ২৯ হাজার ৯২০ জন ভোটার।

নির্বাচনকে ঘিরে অতিরিক্ত নিরাপত্তায় মাঠে নেমেছে বিজিবি। গত ১৫ মে দুপুর থেকে নগরীতে এক প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এই প্লাটুনের নেতৃত্বে থাকছেন।

এমএস/এইউ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর