বরিশালে স্বামীর বাড়িতে না যাওয়ায় চতুর্থ শ্রেণির স্কুলছাত্রীকে (১৩) শিকলে বেঁধে অমানবিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে নিজ পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে।
শনিবার (১ জুন) রাতে তার (হাবিবা) মা মারুফা বেগমসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা তাকে শিকলে বেঁধে নিজ ঘরের মধ্যে আটক রাখে। স্বামী ও তার পরিবারের নির্যাতন সইতে না পেরে পালিয়ে তিনি পালিয়ে আসেন বলে অভিযোগ।
বিজ্ঞাপন
জেলার আগৈলঝাড়া উপজেলার বাগধা ইউনিয়নের দক্ষিণ চাঁদত্রিশিরা গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে।
ভূক্তভোগী হাবিবা আক্তার (১৩) ওই গ্রামের জামাল হাওলাদার ও মারুফা বেগম দম্পত্তির মেয়ে। তিনি দক্ষিণ চাঁদত্রিশিরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী।
স্থানীয় নুরু বাহাদুর ও জামাল তাজ জানান, দুই মাস আগে স্কুলছাত্রী হাবিবার পরিবারের সদস্যরা জোর করে সাজিদ মোল্লার সঙ্গে বিয়ে দেন। সাজিদ একই উপজেলার রাজিহার ইউনিয়নের রাংতা গ্রামের শাহজাহান মোল্লার ছেলে। বিয়ের পর স্বামী ও তার পরিবারের নির্যাতন সইতে না পেরে শনিবার সকালে পালিয়ে ওই স্কুলছাত্রী বাবার বাড়িতে আসে। তখন মা মারুফা বেগম, বাবা জামাল হাওলাদার ও দুলাভাই আলামিন আকনসহ কয়েকজন মিলে হাবিবাকে শিকল ও রশি দিয়ে ঘরের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে মারধর করে। এ ঘটনা টের পেয়ে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেয়। এরপর শনিবার রাতে আগৈলঝাড়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাহফুজ হোসেন ওই স্কুলছাত্রীকে উদ্ধারে বাসায় যান। পুলিশ আসার খবরে হাবিবার পরিবারের সদস্যরা ঘরে তালা দিয়ে পালিয়ে যান।
হাবিবার মা মারুফা বেগম বলেন, আমরা দরিদ্র হওয়ায় হাবিবার লেখাপড়া খরচ বহন করতে পারছিলাম না। তাই তাকে বিয়ে দিয়ে দেই। স্বামীর বাড়িতে ফিরে না যাওয়ার কারণে শিকলে বেঁধে রাখা হয়েছে। ১৩ বছরের স্কুলছাত্রীর বিয়েতে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় ইউপি সদস্য সাইদুল সরদারসহ স্থানীয় মাতবররা। এ বিয়ের বিষয়ে জানতে চাইলে তারা উত্তর না দিয়ে এড়িয়ে যান।
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন
বাকেরগঞ্জের পাণ্ডব নদীতে পড়ে বৃদ্ধ নিখোঁজ
আগৈলঝাড়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জহিরুল ইসলাম জানান, স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে ওই স্কুলছাত্রীকে উদ্ধারে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছিল। কিন্তু বিষয়টি পরিবারের সদস্যরা টের পেয়ে ঘরের দরজায় তালা লাগিয়ে পালিয়ে গেছে। ওই ছাত্রীকে উদ্ধারে অভিযান চলছে বলে জানান তিনি।
প্রতিনিধি/ এজে