শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ঢাকা

বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসক সংকট, সেবা বঞ্চিত উপকূলবাসী

গোলাম কিবরিয়া,
প্রকাশিত: ১৪ মে ২০২২, ০৯:৩৫ পিএম

শেয়ার করুন:

বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসক সংকট, সেবা বঞ্চিত উপকূলবাসী
ছবি: ঢাকা মেইল

১০০ শয্যা বিশিষ্ট বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে দীর্ঘদিন ধরেই চিকিৎক সংকট রয়েছে। এ হাসপাতালে ৪২ জন ডাক্তারের পদ থাকলেও রয়েছেন মাত্র ৮ জন ডাক্তার। তাও আবার ৪ জন কনসাল্টেন্ট, ৩ জন মেডিকেল অফিসার ও ১ জন তত্ত্বাবধায়ক চিকিৎসক।

১৫ লক্ষাধিক লোকের একমাত্র হাসপাতালে চিকিৎসক সংকট হওয়ায় সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন উপকূলের মানুষ। এছাড়া হাসপাতালে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি থাকলেও নেই তার ব্যবহার। এর ফলে হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিতে এসে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ।


বিজ্ঞাপন


সরেজমিনে দেখা যায়, হাসপাতালের নিচ তলায় রেডিওলজিস্ট না থাকায় এক্সরে রুমে অযত্ন-অবহেলায় পড়ে আছে আলট্রাসনোগ্রাফি মেশিন। চক্ষু বিশেষজ্ঞ না থাকায় হাসপাতালের দ্বিতীয় তলায় অপারেশন থিয়েটারের এক কোনায় পরে রয়েছে চক্ষু পরীক্ষা করার মেশিন। অপারেশন থিয়েটারে বিশেষজ্ঞ না থাকায় কোনো অপারেশন হচ্ছে না। কবে অপারেশন হয়েছে তা কেহ বলতে পারছেন না। অপারেশন থিয়েটারের যন্ত্রপাতি মরিচা ধরে আছে। এখন তা ব্যবহার উপযোগী নয়। আলট্রাসনোলজিস্ট নেই এমন অজুহাত দেখিয়ে মূল্যবান মেশিনটিকে অযত্মে ফেলে রাখা হয়েছে। রোগীরা হাসপাতালের বাইরের বিভিন্ন বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে বেশি টাকা খরচ করে আলট্রাসনোগ্রাফি করতে বাধ্য হচ্ছেন। এতে আর্থিক ক্ষতিসহ দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন রোগী ও তাদের স্বজনরা।

চিকিৎসা নিতে আসা তরিকুল ইসলাম রতন বলেন, ‘আমার শরীলটা ভীষণ খারাপ। তবুও দীর্ঘ দুই ঘণ্টা ধরে অপেক্ষা করে দাঁড়িয়ে আছি। এরপরেও কোনো কোনো ডাক্তারের সিরিয়াল পাইনি। আজ ডাক্তার দেখিয়ে যেতে পারবো কিনা তা বলতে পারছি না।’

আরেক রোগী নাসরিন আক্তার বলেন, ‘জরুরি প্রয়োজনে আমাকে ডাক্তার আলট্রাসনোলজি করতে বলেছেন। কিন্তু এখানে কোনো আলট্রাসনোলজিস্ট নেই। তাই আমাকে বাধ্য হয়ে বাইরে থেকে বেশি টাকা খরচ করে আলট্রাসনো করতে হলো। অথচ এখানকার মূল্যবান মেশিন অযত্মে পরে আছে।’

সানজিদা আক্তার নামের আরেকজন রোগী অভিযোগ করে জানান, চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা হাসপাতালের বাইরের বিভিন্ন বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে বেশি টাকা খরচ করে আলট্রাসনোগ্রাফি করতে বাধ্য হচ্ছেন। এতে সকলেই আর্থিক ক্ষতিসহ দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। বিশেষ করে দরিদ্র মানুষের বেশি ভোগান্তি হচ্ছে।


বিজ্ঞাপন


চক্ষু পরীক্ষা করতে আসা বৃদ্ধ মোখলেস হোসেন বলেন, ‘এখানে চোখের কোনো বিশেষজ্ঞ ডাক্তার নাই। এদিকে আমার চোখে ছানি পড়েছে। দ্রুত অপারেশন করাতে হবে। এখন কোথায় চোখের অপারেশন করাবো তা বুঝতে পারছি না। শুধু চোখের অপারেশন না এই হাসপাতালে নাকি কোনো অপারেশনই হয় না। তাহলে এখানকার রোগীরা কোথায় যাবে? দ্রুত এই হাসপাতালে ডাক্তার দিলে মানুষের খুব উপকার হতো।’

বরগুনা জেলা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাক্তার মো. সোহরাব হোসেন বলেন, ‘আমাদের পর্যপ্ত চিকিৎসক না থাকার কারণে চিকিৎসা সেবা দিতে সমস্যা হচ্ছে। মাত্র একজন জুনিয়র কনসালট‍্যান্ট ও একজন গাইনি ডাক্তার দিয়ে চিকিৎসা সেবা দিতে হচ্ছে। এজাড়া, রেডিওলজিস্ট না থাকার কারণে আলট্রাসনোগ্রাফি মেশিন চালুর ব্যবস্থা করাও যাচ্ছে না।

এজে/টিবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর