নড়াইলে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী ষাঁড়ের লড়াই অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিশ্ববরেণ্য চিত্রশিল্পী এস এম সুলতানের ৯৯তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত ১৫ দিনব্যাপী সুলতান মেলার অষ্টম দিনে ঐতিহ্যবাহী এ ষাঁড়ের লড়াই অনুষ্ঠিত হয়।
মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) শহরের কুড়ির ডোব মাঠে দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলা উপভোগ্য এই প্রতিযোগিতায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা ২৬টি ষাঁড় অংশ নেয়।
বিজ্ঞাপন
এদিন লড়াইয়ে অংশ নেওয়া প্রতিটি ষাঁড়ই ছিল বাহারি রংয়ের আকর্ষণীয় দেহের। এই লড়াই দেখতে দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড় ছিল লক্ষণীয়। ষাঁড়ের লড়াই দেখতে শিশু-কিশোর, মাহিলা, ছেলে, বুড়োসহ নানা বয়সী মানুষের উপস্থিতিতে মুখরিত হয়ে ওঠে মাঠটি। দর্শনার্থীরা জানান, প্রতিবছরই সুলতান মেলায় ঐতিহ্যবাহী ষাঁড়ের লড়াই অনুষ্ঠিত হয়। এই লড়াইয়ে অনেক ষাঁড় অংশ নেয়। সেই ষাঁড়ের লড়াই দেখতেই তারা বিভিন্ন জায়গা থেকে এসেছেন।
ষাঁড়ের লড়াই দেখতে আসা কলেজছাত্র মুন্না ঢাকা মেইলকে বলেন, আধুনিকায়নের ফলে আমরা প্রযুক্তিনির্ভর হয়ে পড়ছি। প্রযুক্তির পাশাপাশি আমাদের ঐতিহ্য গ্রামীণ খেলাধুলাকেও বাঁচিয়ে রাখা উচিত। আমাদের নড়াইলবাসীর ঐতিহ্য সুলতান মেলা। আমরা খুবই আনন্দিত। এ মেলায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লোকজন আসছে ষাঁড়ের লড়াই দেখতে। এটা আমাদের কাছেও ভালো লাগছে। এ ধরনের আয়োজন বেশি হলে আমরা নতুন প্রজন্ম প্রাচীন খেলাধুলা ও সংস্কৃতিতে আগ্রহী হব।
বিজ্ঞাপন
পরিবার নিয়ে ষাঁড়ের লড়াই দেখতে আসা এক নারী দর্শনার্থী মালা বেগম ঢাকা মেইলকে বলেন, বাচ্চারা আগে কখনও ষাঁড়ের লড়াই দেখেনি। সুলতান মেলায় এ ধরনের আয়োজন হয় খুব ভালো লাগে। আমরা সবাই উপভোগ করছি।
কিউট গ্রামীণ ক্রীড়া উৎসব সুলতান মেলা, নড়াইলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রশিদ মন্নু ঢাকা মেইলকে জানান, সুলতান মেলায় এ ধরনের গ্রামীণ খেলাধুলার আয়োজনের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে নতুন প্রজন্মকে এ ধরনের খেলার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়া। নতুন প্রজন্ম এ ধরনের সুষ্ঠু বিনোদনের মাধ্যমে পড়াশোনার পাশাপাশি খেলাধুলার প্রতি আগ্রহী হবে। দূর-দূরান্ত থেকে আসা দর্শনার্থীদের মিলন মেলার আয়োজন করতে পারায় আমারাও আনন্দ বোধ করি।
উল্লেখ্য, গত ১৫ এপ্রিল থেকে নড়াইলে বরেণ্য চিত্রশিল্পী এস এম সুলতানের ৯৯তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ১৫ দিনব্যাপী সুলতান মেলা শুরু হয়েছে, যা চলবে আগামী ২৯ এপ্রিল পর্যন্ত। মেলায় এস এম সুলাতানের জীবনদর্শন, শিল্পীসত্তা ও কর্মময় জীবনের ওপর প্রতিদিন সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। দেশ-বিদেশের বিশিষ্ট শিল্পীদের আঁকা ছবির প্রদর্শনী, শিশু-কিশোরের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতাসহ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন রয়েছে। এছাড়াও মেলাকে প্রাণবন্ত করে তুলতে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে রকমারি পসরা নিয়ে দোকান সাজিয়ে বসেছেন ব্যবসায়ীরা।
প্রতিনিধি/এসএস