শরীয়তপুরের নড়িয়ায় দশম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীকে অপহরণ করে তিন দিন আটকে রেখে পাঁচজন মিলে ধর্ষণ করার অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনায় নড়িয়া থানায় মামলা দায়ের করা হলে গত শনিবার (১৩ এপ্রিল) দিবাগত রাতে চারজনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী বর্তমানে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন।
বিজ্ঞাপন
মামলা সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী নড়িয়া উপজেলার ডিঙ্গামানিক ইউনিয়নের বাসিন্দা। গত বৃহস্পতিবার ঈদের দিন সন্ধ্যায় চাচাতো ভাইয়ের সঙ্গে ঘোরাঘুরি শেষে উপজেলার কেদারপুর ইউনিয়নের পাঁচগাও গ্রামে নানি বাড়িতে যাচ্ছিল ভুক্তভোগী কিশোরী। পথে চন্ডিপুর এলাকার ভিআইপি মোড় থেকে ইব্রাহিম সরদার দুদুল ও তুষার মাঝি ভুক্তভোগীর মুখ চেপে ধরে অপহরণ করে। পরে ভুক্তভোগীকে অটোতে করে নিয়ে সুরেশ্বর দরবার শরীফের একটি পরিত্যক্ত ঘরে আটকে রাখে। বৃহস্পতিবার রাতে ও শুক্রবার ওই পরিত্যক্ত ঘরটিতে ইব্রাহিম সরদার দুদুল ও তুষার মাঝি ভুক্তভোগীকে একাধিকবার ধর্ষণ করে।
গত শনিবার সকালে নাহিদ হাওলাদার, শাকিবসহ অজ্ঞাত আরও একজন সেখানে যায়। পরে তারা সবাই মিলে ভুক্তভোগীকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। পরে দুপুর বারোটার দিকে ভুক্তভোগী কিশোরী অসুস্থ হয়ে পড়লে ইব্রাহিম সরদার দুদুল তাকে সুরেশ্বর দরবার শরীফের সামনে থেকে অটোতে তুলে দেয় এবং এ ঘটনায় কাউকে না জানানোর হুমকি দেয়। বাড়ি ফিরে ভুক্তভোগী তার বোনদের কাছে ঘটনা খুলে বললে তারা তাকে নড়িয়া থানায় নিয়ে যান। নড়িয়া থানার পুলিশ রাতেই তাকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। রোববার দুপুরে সদর হাসপাতালের এক নারী চিকিৎসক ওই ছাত্রীর ডাক্তারি পরীক্ষা করেন।
এ ঘটনায় শনিবার ছাত্রীর বড় বোন বাদী হয়ে পাঁচজনের বিরুদ্ধে অপহরণ ও দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে নড়িয়া থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। পুলিশ ওই মামলার আসামি দুদুল সরদার, তুষার মাঝি, শাকিব ও নাহিদকে গ্রেফতার করেছে।
বিজ্ঞাপন
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী বলেন, ঈদের দিন হেঁটে নানার বাড়ি যাচ্ছিলাম। তখন দুদুল ও তুসার মাঝি আমাকে মুখ চেপে ধরে অটোরিকশায় সুরেশ্বর দরবার শরিফের কাছে একটি ঘরে নিয়ে আটকে রাখে। একপর্যায়ে তারা আমাকে পুড়িয়ে মেরে ফেলার ভয় দেখিয়ে ধর্ষণ করেছে। শনিবার সকালে আরও তিনজন আমাকে ধর্ষণ করে। আমি অসুস্থ হয়ে পড়লে একটি অটোরিকশায় আমাকে পাঠিয়ে দেয়।
আরও পড়ুন
এ বিষয়ে ওই কিশোরীর বড় বোন বলেন, আমার বাবা নেই। আমরা ৭ বোন মাকে নিয়ে থাকি। পাষণ্ডরা পশুর মতো আমার ছোট বোনটাকে নির্যাতন করেছে। আমি ওদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের চিকিৎসক লিমিয়া সাদিনা জানান, ওই ছাত্রীর ডাক্তারি পরীক্ষা করা হয়েছে। ডাক্তারি পরীক্ষার প্রতিবেদন পাওয়া গেলে ধর্ষণের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাবে।
জানতে চাইলে নড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ওই ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা হয়েছে। ওই মামলার এজাহারভুক্ত আসামিদের মধ্যে চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ওই ছাত্রীকে আজ আদালতে পাঠানো হয়েছে। সেখানে এ ঘটনার বিষয়ে সে জবানবন্দি দিয়েছে।
প্রতিনিধি/এসএস