ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অপহরণকারী একটি চক্রের ৯ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রোববার (৭ এপ্রিল) রাত সাড়ে নয়টার দিকে জেলা শহরের কাউতলী এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এ সময় আনিসুল হক নামে এক ব্যবসায়ীকে উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- জেলা শহরের কান্দিপাড়া (মাদরাসা রোড) এলাকার দুলাল মিয়ার ছেলে শাকিল প্রকাশ লায়ন শাকিল (৩৫), তার স্ত্রী হাবিবা আক্তার (২৯), জেলা শহরের শিমরাইলকান্দি এলাকার জহিরুল হকের ছেলে এনামুল হক প্র: জুয়েল (৩০), একই এলাকার বাচ্ছু মিয়ার ছেলে জোনায়েদ (২৭), রেনু মিয়ার ছেলে সাইমন ইসলাম প্রঃ রাজু সিকদার (২৫), কসবা উপজেলার সাহাপুর এলাকার পান্নার স্ত্রী জোনাকি প্র: শিউলী (২৫), সদর উপজেলার কোড্ডা এলাকার দেলোয়ার খলিফার ছেলে সৌরভ (২২), কলেজপাড়া এলাকার মকবুল হোসেনের ছেলে বাবুল মিয়া (৪৫) ও বিরাসার এলাকার শামছু মিয়ার ছেলে পান্না চৌধুরী (৩০)।
বিজ্ঞাপন
জানা যায়, জেলার সরাইল উপজেলার চুন্টা ইউনিয়নের রসুলপুর গ্রামের ব্যবসায়ী আনিসুল হকের সঙ্গে মোবাইল ফোনে হাবিবা বেগমের কথাবার্তা হতো। এর একপর্যায়ে হাবিবা বেগমের সঙ্গে ব্যবসায়ী আনিসুল হক রোববার সন্ধ্যার দিকে জেলা শহরের পাইকপাড়া (পানির ট্যাংক) সামনে দেখা করতে যান। সেখানে আগে থেকে মাইক্রোবাসে ওঁৎ পেতে থাকা ৮/৯ জন দুষ্কৃতিকারী আনিসুলকে জোর করে মাইক্রোবাসে তুলে জেলা শহরের কাউতলী এলাকার আলম ভবনের চতুর্থ তলায় নিয়ে যান। সেখানে তাকে আটকে রেখে মারধর করেন। একপর্যায়ে ওই ব্যবসায়ীর কাছে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। টাকা না দিলে গুম করে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়।
শাকিলের স্ত্রী হাবিবা বেগম ব্যবসায়ী আনিসুল হককে টাকা না দিলে ধর্ষণ মামলা দেবে বলেও হুমকি দেয়। ভয়ে ওই ব্যবসায়ী তার স্ত্রী ও মামাকে মুক্তিপণের টাকার বিষয়ে বললে তারা টাকা সংগ্রহ করছে বলে অপহরণকারী দলকে জানায়। ওই সময় তারা ওই ব্যবসায়ীর কাছে থাকা নগদ ১৫ হাজার ৫০০ টাকা তারা নেয়। খবর পেয়ে পুলিশ রাত সাড়ে ৯ টার দিকে জেলা শহরের কাউতলী এলাকার আলম ভবনের চতুর্থ তলা থেকে ব্যবসায়ী আনিসুল হককে উদ্ধার করে ও অপহরণ চক্রের নয় সদস্যকে গ্রেফতার করে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ওসি মো. আসলাম হোসেন জানান, রাতে জেলা শহরের কাউতলী এলাকার আলম ভবনের চতুর্থ তলা থেকে ব্যবসায়ী আনিসুল হককে উদ্ধার করা হয়। এ সময় সংঘবদ্ধ অপহরণ চক্রের ৯ সদস্যকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতার শাকিল কুখ্যাত অপহরণকারী, ম্যাজিস্ট্রেটের গাড়ি ভাঙচুরসহ একাধিক মামলার পরোয়ানাভুক্ত পলাতক আসামি। অপহরণ চক্রের মূলহোতা হচ্ছে শাকিল।
বিজ্ঞাপন
ওসি আরও জানান, এই চক্রে দুইজন নারী সদস্য রয়েছে, তাদের কাজ হচ্ছে বিভিন্ন জনের সঙ্গে মোবাইল ফোনে সখ্য গড়ে তোলা। একপর্যায়ে দেখা করতে এলে অপহরণ করে নিয়ে মুক্তিপণ আদায় করত। চক্রটি ছিনতাই, চুরি ও ডাকাতির সঙ্গেও জড়িত। গ্রেফতার নয়জনের বিরুদ্ধে থাকায় একাধিক মামলা রয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
প্রতিনিধি/এমআর

