বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী খায়রুল আলম বাদল আর নেই। শনিবার (৩০ মার্চ) দিবাগত রাত ১২টা ২০ মিনিটে হৃদরোগে আক্রান্ত হলে শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পরে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
খায়রুল আলম বাদল কিশোরগঞ্জ জেলা নিকলী উপজেলার বড়হাটি গ্রামের সন্তান। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী-সন্তানসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
বিজ্ঞাপন
খায়রুল আলম বাদল শারীরিক প্রতিবন্ধিতাকে জয় করে শিক্ষকতা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা, সাংবাদিকতা, ছবি আঁকা, ভাস্কর্য নির্মাণ, অভিনয়, বংশীবাদন, গান ও নাটক লেখাসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলো ছড়িয়েছেন।
কিশোরগঞ্জ থিয়েটার ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান কায়েস খায়রুল আলম বাদলের মৃত্যুর সংবাদটি নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, জেলার হাওর অধ্যুষিত নিকলী উপজেলার বড়হাটি গ্রামে জন্ম নেওয়া বাদল ভাই তার কর্মময় জীবনের বেশিরভাগ সময় কাটিয়েছেন কিশোরগঞ্জ জেলা শহরে। ছোটবেলায় পোলিও তার সর্বনাশা ছোবলে শিশু বাদলের পা দু’টি কেড়ে নিয়েও তার পথচলাকে থামিয়ে দিতে পারেনি।
অদম্য মনোবল নিয়ে ছোট্ট বাদল নেমেছেন হাওরের পানিতে। অনায়াসে ভেসে থেকেছেন পানির ওপর, পার হয়ে গেছেন পুকুর-নদী, পানিতে শুয়েই সুর তুলেছেন তার প্রিয় বাঁশের বাঁশিতে, সেরে নিয়েছেন নাস্তা। দু’টি পা হারিয়ে শারিরীক পঙ্গুত্ব বরণ করার পরও মানসিক দৃঢ়তা, প্রচণ্ড ইচ্ছাশক্তি ও একাগ্রতায় প্রতিভার নিরন্তর প্রকাশ ঘটিয়েছেন বাদল।
বিজ্ঞাপন
যার ছাপ পড়েছে তার অভিনয়, চিত্রকলা, লেখালেখি ও সংস্কৃতি চর্চায়। আর এভাবেই স্বপ্নডিঙায় ভেসে ভেসে হাওরের বাতাসে অনবরত সুবাস ছড়িয়ে গেছেন বাদল।
খায়রুল আলম বাদলের মৃত্যুতে কিশোরগঞ্জের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
প্রতিনিধি/এসএস