ঘূর্ণিঝড় অশনির প্রভাবে মৌলভীবাজারে টানা বৃষ্টি হচ্ছে। মঙ্গলবার (১০ মে) ভোররাত থেকে শুরু হওয়া এ বৃষ্টিতে নিম্ন আয়ের মানুষেরা পড়েছেন বিপাকে।
শহর ঘুরে কথা হয় বিভিন্নজনের সঙ্গে। বৃষ্টি মাথায় নিয়ে, কঠিন শ্রমে রিক্সার চাকা ঘুরিয়ে সংসারের চাকা সচল রাখা রিক্সাচালকরা আজও টানা বৃষ্টিতে, গায়ের সাথে লেপ্টে থাকা ভিজে কাপড়ে যাত্রীবহন করছেন। জেলা শহরের সেন্ট্রালরোডে আলাপকালে হাছন আলী নামের এক রিক্সাচালক বলেন, সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ৬০ টাকা রোজগার হয়েছে, বাকি দিনে কী যে হবে। ভাড়ায় রিক্সা চালাই, মালিককে কী দেবো, নিজে কী নেবো।’
বিজ্ঞাপন
‘এ বৃষ্টিতে আজকের রুজি শেষ, বাজার না করেই ফিরতে হবে বাসায়।’ এমন মন্তব্য করেন দিনমজুর আলম মিয়া। তিনি বলেন, ভোর থেকেই বৃষ্টি শুরু হয়েছে। সকালে হয়তো বৃষ্টি কমবে, সেই আশা নিয়ে বেরিয়েছিলাম বাড়ি থেকে। সকাল পেরিয়ে দুপুর হতে যাচ্ছে এখনও কোনো কাজ পাইনি। তাই ফিরে যাচ্ছি বাড়ির পথে।’
কালিপদ দত্ত নামের একজন। যিনি কোর্টরোড এলাকায় রাস্তার পাশে ফুটপাতে প্রতিদিন কলা ও মৌসুমি ফল বিক্রি করেন। এখানেই সকাল থেকে রাত অবধি চলে তার ক্ষুদ্র পুঁজির ব্যবসা। রোজকার মতো কালিপদ বাবু এসেছেন কলা নিয়ে নিয়ে, বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে। বেলা সকাল গড়িয়ে দুপুর। মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছিলো, অবিরাম বৃষ্টিতে ছাতা মাথায় দিয়ে আক্ষেপ করে তিনি বলেন, ‘না আজ আর ব্যবসা হবে না। এ বৃষ্টি থামবে না, ক্রেতাও আসবে না। পচনশীল পণ্যের ক্ষতি হয়ে গেলো।’
এমন বৃষ্টিতে আলম মিয়া, হাছন আলী আর কালিপদ বাবুর মতো অনেকে নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষেরা পড়েছেন চরম বিপাকে। তবুও পরিবারের খরচ যোগাতে অনেকেই বৃষ্টিতে ভিজে বের হয়েছেন কাজের সন্ধানে।
মৌলভীবাজারে ভোররাত থেকে টানা বৃষ্টিপাতে জনজীবন হয়ে পড়েছে বিপর্যস্ত। গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির কারণে অনেকেই সারাদিন ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। বৃষ্টিপাতে জেলার সর্বস্তরের মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রার ওপর বিভিন্নভাবে প্রভাব পড়েছে। তবে সব থেকে বেশি বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের শ্রমজীবী মানুষজন।
বিজ্ঞাপন
এএ