শনিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৪, ঢাকা

মার্কেটে ভাংচুর-লুটপাট, বিচার চেয়ে ভুক্তভোগীদের মানববন্ধন বিক্ষোভ

উপজেলা প্রতিনিধি, সাভার ও ধামরাই (ঢাকা)
প্রকাশিত: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৬:৪৪ পিএম

শেয়ার করুন:

মার্কেটে ভাংচুর-লুটপাট, বিচার চেয়ে ভুক্তভোগীদের মানববন্ধন বিক্ষোভ

সাভারে তুচ্ছ ঘটনা কেন্দ্র বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাংচুর ও মারধরের ঘটনায় ৫ ব্যবসায়ী আহত হয়েছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে স্থানীয় প্রায় দুই শতাধিক দোকান মালিক তাদের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে মার্কেটের সামনের সড়কে অবস্থান নিয়ে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে। 

শনিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে উপজেলার বিরুলিয়া ইউনিয়নে খাগান বাজারে এসব কর্মসূচী পালন করেন ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীরা।


বিজ্ঞাপন


আয়োজিত মানববন্ধন থেকে ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীরা জানান, স্থানীয় সিটি ইউনিভার্সিটির কিছু বখাটে শিক্ষার্থী বিভিন্ন সময়ে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আমাদেরকে মারধরসহ দোকানে হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও লুটপাট চালিয়ে আসছে। তাদের অত্যাচারের প্রতিবাদ করলে ব্যবসায়ীদেরকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতরে ধরে নিয়ে নির্যাতন করা হয়। তারা উদ্দেশ্যমূলকভাবে ঝামেলা তৈরী করে এবং পরবর্তীতে তারা সেগুলো মীমাংসার কথা বলে মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করে। তাদের কথা অমান্য করলেই ব্যবসায়ীদের উপর হামলা, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান তান্ডব চালানো হয়। 

মুদি দোকানী নজরুল ইসলাম বলেন, ২১ শে ফেব্রুয়ারির দিন বিকেলে খাবার পানিকে কেন্দ্র করে সিটি ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী হৃদয় (২৩), হিমেল (২৯), শুভ (২৬), রাশেদ (২৮) ও শাহেদ (২৫) আমার ছোট ছেলে শামীমের সাথে বাক-বিতণ্ডায় জড়িয়ে তাকে ইট দিয়ে আঘাত করে। এসময় শামীম মাটিতে লুটিয়ে পড়লে তাকে কিল-ঘুষি ও লাথি মারতে থাকে। একপর্যায়ে আমার বড় ছেলে সেলিম এগিয়ে আসলে তাকেও মারধর করে হামলাকারীরা। 

পরবর্তীতে ক্যাম্পাস থেকে আরও ২০-২৫ জন শিক্ষার্থী তাদের সাথে যোগ দিয়ে আমার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে পুনরায় হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে। এছাড়া হামলাকারীদের হাত থেকে বাঁচার জন্য আমার ছেলে শামীম পাশ্ববর্তী তরিকুল ইসলামের দোকানে আশ্রয় নিলে বখাটে শিক্ষার্থীরা সেখানেও হামলা চালিয়ে তরিকুল ও তার ছেলে আসিফকে মারধর করে। এসময় আমি আগাইয়া গেলে তারা আমাকেও মারধর করে দোকানে ক্যাশ বাক্স ভাংচুর করে নগদ টাকা, সিগারেট, চানাচুর, কেক ও কোমলপানীয়সহ প্রায় পঞ্চাশ হাজার টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। 

বিষয়টি জানিয়ে সাভার মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করলেও পুলিশ হামলাকারীদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করছেনা।


বিজ্ঞাপন


রাজ্জাক স্টোরের মালিক রাজ্জাক বলেন, কিছুদিন আগে ৪-৫ জন বখাটে শিক্ষার্থী আমার দোকানে এসে তাদের বড় ভাইয়ের নাম বলে এক বক্স ফেদার চায়। কিন্তু আমি টাকা ছাড়া ফেদার না দেয়ায় পরবর্তীতে তারা ক্যাম্পাস থেকে আরও বন্ধুদের নিয়ে এসে আমার দোকানে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে প্রায় ১৫ হাজার টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। 

অপর দোকানী সাদ্দাম হোসেন বলেন, প্রতিনিয়ত সিটি ইউনিভার্সিটির কিছু বখাটে শিক্ষার্থী হিমেল, শুভ, রাশেদ ও সাহেদের নেতৃত্বে বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে পরিকল্পিতভাবে হামলা চালিয়ে আসছে। তাদের ভয়ে অনেকেই চুপ করে থাকেন। কিন্তু বর্তমানে তাদের অত্যাচারের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় ব্যবসায়ীদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। পুলিশের কাছে অভিযোগ করা হলেও তারা কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করছেনা। তাই বাধ্য হয়ে আমরা মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করছি। 

জানতে চাইলে মার্কেট মালিক মো. সিফাত বলেন, সিটি ইউনিভার্সিটির কিছু বখাটে শিক্ষার্থী এলাকায় মাদক সেবনসহ নানা অপকর্ম চালিয়ে আসছে। তারা ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে জোর করে সদাই নিয়ে টাকা দেয়না। বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষসহ স্থানীয় চেয়ারম্যান এবং ফাঁড়ির পুলিশকে অবহিত করা হলেও আমরা কোন প্রতিকার পাচ্ছিনা। তাই আমরা ব্যবসায়ীদের জানমালের নিরাপত্তার স্বার্থে এসব বখাটেদেরকে আইনে আওতায় এনে কঠিন শাস্তি প্রদানের জন্য প্রশাসনের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

বিরুলিয়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্য মো. দিদার হোসেন বলেন, বখাটে কিংবা সন্ত্রাসী যেই হোক তাদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেলে বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে।

প্রতিনিধি/একেবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর