পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার। আজ ১৪ ফেব্রুয়ারি বসন্ত ও ভালোবাসা দিবস কেন্দ্র করে পুরো সমুদ্র এলাকায় পর্যটকের ঢল নেমেছে। বসন্ত ও ভালোবাসার পোশাকে রঙিন হয়ে ওঠেছে চারপাশ । সমুদ্রের উত্তাল ঢেউয়ের সঙ্গে চলছে ভালোবাসার মিতালী। পর্যটকদের পাশাপাশি সৈকতে স্থানীয়রাও মেতেছেন বসন্ত আর ভালোবাসার আনন্দে।
বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে সমুদ্র সৈকতের সুগন্ধা, লাবনী ও কলাতলী পয়েন্টে পর্যটকদের আনাগোনা বৃদ্ধি পায়। প্রিয়জনের সাথে বিশেষ মুহূর্ত কাটাতে সৈকতে ভিড় করেছেন লাখো ভ্রমণপিপাসু।
বিজ্ঞাপন
বসন্ত ও ভালবাসা দিবসে পর্যটকের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় দারুণ খুশি পর্যটন সংশ্লিষ্টরা।
পর্যটন সংশ্লিষ্টদের দেওয়া তথ্যে জানা গেছে, বসন্ত আর ভালোবাসা দিবসকে কেন্দ্র করে সাগরের নীল জলরাশি ও প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য কক্সবাজারে বেড়াতে এসেছেন অন্তত লক্ষাধিক পর্যটক।
কেউ প্রিয়জনের সঙ্গে, কেউ বাবা-মা আর কেউবা প্রিয় বন্ধুর সঙ্গে ছুটে এসেছেন বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র নগরী কক্সবাজার। সৈকতের বালিয়াড়িতে বসে সময় কাটানো, সমুদ্র স্নান, বিকেলে প্রিয়জনের পাশে দাঁড়িয়ে সুর্যাস্ত অবলোকনসহ প্রিয়সব মুহূর্ত যেন রঙিন হয়ে উঠেছে ভালোবাসা আর বাসন্তীর রঙে।
দিনাজপুর থেকে ঘুরতে আসা সাবিনা আক্তার বলেন, স্বামীকে নিয়ে ভালবাসা দিবস উদযাপন করার জন্যে কক্সবাজার চলে এলাম। বিয়ের পর এবার আমরা কক্সবাজারে প্রথম এসেছি। এখানকার পরিবেশ ও আবহাওয়া বেশ ভাল।
বিজ্ঞাপন
ঢাকা থেকে ভ্রমণে আসা পর্যটক হাসান আলী জানান, প্রতিবছর শীত মৌসুমে সমুদ্র সৈকতে প্রায় বন্ধু-বান্ধবরা বেড়াতে আসেন। কিন্তু কর্মব্যস্ততার কারণে কক্সবাজারে খুব একটা আসা হয় না। তাই এ ধরনের বিশেষ দিনগুলোতে অন্তত সৈকতের নরম বালু আর লোনাজলে পা ভেজানোর জন্য চলে এসেছি । চারিদিকে যেন ভালোবাসার রঙ লেগে আছে। আসলেই খুব ভালো লাগছে।
ঢাকার উত্তরা থেকে আসা মিজানুর রহমান বলেন, আজ ভালোবাসা দিবস এবং বসন্তের প্রথম দিন। কিন্তু আমাদের জন্য এই দিনটি আরো স্পেশাল। কারণ চারবছর আগে এই দিনে আমাদের বিয়ে হয়েছিল। তাই বিশেষ দিনে প্রিয়জনের সঙ্গে বিশেষ একটি জায়গায় ঘুরে বেড়ানো, সময় কাটানো আসলেই আমার কাছে অন্যরকম অনুভূতি। সত্যিই ভালো লাগছে।
ভালোবাসা দিবসে ভালোবাসার মানুষকে নিয়ে সময় কাটানো, আড্ডা দেওয়া, ঘুরে বেড়ানো আসলেই বিষয়টি খুবই আনন্দের। আর জায়গাটি যদি হয় এই সমুদ্র সৈকতের মতো সুন্দর, তাহলে বুঝতেই পারছেন অনুভূতিটা কেমন হবে এভাবেই বলছিলেন ঢাকার সাভার থেকে আসা পর্যটক আব্দুল্লাহ আল মামুন।
এদিকে ভালোবাসা দিবস ও বসন্তকে ঘিরে কক্সবাজারের প্রায় চার শতাধিক হোটেল-মোটেল ও গেস্ট হাউসে পড়েছে বাড়তি চাপ। সব হোটেলেই ৮৫ ভাগেরও বেশি রুম আগে থেকেই বুকিং হয়ে গেছে। আবার কোনো কোনো হোটেলে বিশেষ এই দিন উপলক্ষে ৫০ শতাংশ ছাড়সহ পর্যটকদের জন্য রাখা হয়েছে নানা আয়োজন।
হোটেল রয়েল বীচ রিসোর্টের পরিচালক জয়নাল আবেদীন জানান, পর্যটকদের জন্য বিশেষ ছাড়ের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। পাশাপাশি আগত পর্যটকদের শতভাগ সেবা নিশ্চিত করার বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি।
হোটেল কক্স টুডের ম্যানেজার আবু তালেব শাহ জানান, ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে এবারে বেশ ভাল সাড়া পাওয়া যাচ্ছে । পর্যটকদের বাড়তি সেবা দিতে আমাদের বিভিন্ন প্রস্তুতি আছে। আশা করছি ভ্রমণের আনন্দদায়ক এবং ভালো কিছু স্মৃতি নিয়েই পর্যটকেরা ফিরতে পারবেন।
কক্সবাজার জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলাম বলেন, যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে শহরের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। এছাড়াও সৈকতসহ আশপাশের এলাকায় পর্যটকদের আগমন ও স্থানীয়দের পদচারণা নিরাপদ করতে পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকধারী পুলিশ কাজ করছে।
প্রতিনিধি/একেবি

