শনিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৪, ঢাকা

কথায় কথায় মামলায় জড়িয়ে দেন ‘লোকাল এসপি’!

জেলা প্রতিনিধি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
প্রকাশিত: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৫:৩১ পিএম

শেয়ার করুন:

কথায় কথায় মামলায় জড়িয়ে দেন ‘লোকাল এসপি’!

বড় ভাই বাংলাদেশ পুলিশের এসপি পদে কর্মরত। আরেক ভাই ট্রাফিক পুলিশের ইন্সপেক্টর (পরিদর্শক)। সেই হিসেবে নিজেকে ‘লোকাল এসপি’ হিসেবে পরিচয় দেন তিনি। কথায়-কথায় মামলায়ও জড়িয়ে দেন। কোনো মামলার সাক্ষী তিনি, আবার কোনোটির বাদী।

‘লোকাল এসপি’ হিসেবে পরিচিত ব্যক্তিটির নাম শফিউল আলম ইমন। বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলার সোহাগপুর গ্রামে। তার বড়ভাই নূরে আলম জয়পুরহাট জেলার এসপি। আর আরেক ভাই ঢাকায় ট্রাফিক পুলিশের কর্মরত আছেন।


বিজ্ঞাপন


মূলত দুই ভাইয়ের ক্ষমতাকে পুঁজি করেই শফিউল আলম ইমন এলাকায় দাপট দেখান বলে অভিযোগ রয়েছে। তার দাপটে অতিষ্ঠ এবং আতঙ্কিত সোহাগপুর গ্রামের এক পরিবার এ অবস্থা থেকে পরিত্রানের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি কামনা করছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সোহাগপুর গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আক্তারুজ্জামান ও বীর মুক্তিযোদ্ধা খোরশেদ আলম সম্পর্কে চাচাতো ভাই। তারা প্রতিবেশিও। পুকুরপাড়ের পাশ দিয়ে যাওয়া রাস্তা নিয়ে ওই দুই পরিবারের মধ্যে বিরোধ তুঙ্গে উঠে।

স্থানীয় লোকজন জানান, ভাইয়ের দাপট দেখিয়ে ইমন এলাকার এক প্রকার আতঙ্ক সৃষ্টি করে রেখেছেন। কথায় কথায় তিনি নিজেকে লোকাল এসপি বলে পরিচয় দেন। স্থানীয়দের মধ্যে বিরোধ লাগিয়ে রাখতেও পটু তিনি। তাদের আত্মীয় খোরশেদ আলমের পরিবার ইমনের যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ। 

খোরশেদ আলম ও তার পরিবারের লোকজন অভিযোগ করেন, বাড়ির অদূরে তারা একটি পুকুর কাটেন। ওই পুকুরপাড়ের সামনেই আকতারুজ্জমানের বাড়ি। তবে বাড়ির সামনে কোনো জায়গা না থাকলেও সেখানে বসার জায়গা করেন আক্তারুজ্জামানের পরিবারের সদস্যরা। এ বিষয়ে কথা বলতে গিয়েই খোরশেদ আলমের পরিবারের লোকজন ওই পরিবারটি রোষানলে পড়েন।


বিজ্ঞাপন


খোরশেদ আলম আরও জানান, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি পোস্টে কমেন্ট করাকে কেন্দ্র করে তাদের পরিবারের ৫৫ বছর বয়সি সদস্য মোশারফ হোসেনকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। জয়পুরহাটে দায়ের করা মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়। মোশারফ হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন শফিউল আলম ইমন- যা গোয়েন্দা পুলিশের তদন্তে মিথ্যা প্রমাণিত হয়। খায়রুল কবীর নামে এক পরিবারের এক ব্যক্তির দায়ের করা মামলা করা হয়- যেটিতে শফিউল আলম সাক্ষী। এছাড়া সোহাগপুর গ্রামের মোস্তাফা কামাল নামে আরেক ব্যক্তির দায়ের করা মামলায়ও প্রধান আসামী করা হয় খোরশেদ আলমকে।

মো. শাহ আলম নামে স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন, ‘এসপি’র পরিবারের সদস্যদের হেনস্থার শিকার আমিও। তাদের পরিবারের একজনের সঙ্গে ব্যবসা করে টাকা প্রতারণার শিকার হয়েছি। সালিশ করে রায়ে আমাকে টাকা দেওয়ার কথা বললেও সেটা করেননি।

অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানতে শফিউল আলম ইমনের মোবাইলে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ না করায় বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
তবে ইমনের বড়ভাই জয়পুরহাট জেলার পুলিশ সুপার মো. নূরে আলম জানিয়েছেন, এসব কিছু তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। তিনি পুলিশে যোগদানের পর থেকে নিকটাত্মীয়ের পরিবারের লোকজন পিছু লেগেছে। ৭৩টি অভিযোগ করেছে তার বিরুদ্ধে। এখন তার ভাইয়ের বিরুদ্ধে লেগেছে।

প্রতিনিধি/একেবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর