কুমিল্লায় নির্বাচনে সহিংসতার রেশ এখনও কাটেনি। জেলার দেবিদ্বারে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য ঈগল প্রতীকের পক্ষে কাজ করায় মো. ছবির হোসেন (২৭) নামের এক যুবকের দুটি হাত ও এক পা ভেঙ্গে দিয়েছেন সাবেক এমপি রাজী মোহাম্মদ ফখরুলের কর্মীরা। শুক্রবার (১০ ফেব্রুয়ারি) গভীর রাতে উপজেলার জাফরগঞ্জ ইউনিয়নের জাফরগঞ্জ বাজারে এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঈগল প্রতীকের প্রার্থী মো. আবুল কালাম আজাদের পক্ষে কাজ করেন দক্ষিণ নারায়নপুর গ্রামের তোফাজ্জাল হোসেনের ছেলে মো. ছবির হোসেন। সে পেশায় একজন সিএনজি অটোরিকশা চালক। নির্বাচনে নৌকার পরাজয়ের কারণে ছবিরকে হুমকি দিয়ে আসছিল সাবেক এমপি রাজী মোহাম্মদ ফখরুলের কর্মীরা। শুক্রবার রাত ১০টায় উপজেলার জাফরগঞ্জ কলেজ গেইট এলাকা থেকে ছবির হোসেনকে তার সিএনজিসহ তুলে নিয়ে যায় একদল সন্ত্রাসী। পরে তারা গভীর রাতে ছবির হোসেনর দুটি হাত ও একটি পা ভেঙ্গে এবং মারধর করে গঙ্গমন্ডল এলাকার তিতু মিয়ার বাড়ির পাশে কবরস্থানের নিকট ফেলে যায়। গুরতর আহত অবস্থায় স্থানীরা ছবিরকে উদ্ধার করে দেবিদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাতেই কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন।
বিজ্ঞাপন
চিকিৎসারত ছবির হোসেন জানান, নির্বাচনে নৌকার পক্ষে কাজ করার জন্য আমাকে অনেক চাপ প্রয়োগ করেছে সাবেক চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন ও গঙ্গামন্ডল গ্রামের আওলাদ। নৌকার পরাজয়ের পরও আমাকে বিভিন্ন ভাবে তারা হুমকি দিয়ে আসছিলো। শুক্রবার রাতে কলেজ গেইটে আওলাদ, অপু, আক্তার, কামালসহ আরও কিছু লোক আমার সিএসজি থামিয়ে গলায় ছুরি ধরেন। পরে ওই জায়গা থেকে তারা জোরপূর্বক একটি নির্জন জায়গায় নিয়ে আমাকে অনেক মারধর করে এবং আমার হাত পা ভেঙ্গে একটি কবরস্থানের পাশে ফেলে আমার সিএনজি, মোবাইল ও সাথে থাকা টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়। আমি অনেক আকুতি মিনতি করে তাদের পা ধরেও রক্ষা পাইনি। শনিবার বিকালে ছবির হোসেনের বড় ভাই সোহাগ মিয়া বাদি হয়ে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছে।
শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) রাতে সাবেক সাংসদ রাজী মোহাম্মদ ফখরুলের মোবাইলে একাধিকবার কল করলে তিনি কলটি রিসিভ করেননি। সাংবাদিক পরিচয়ে এসএমএস দিলেও কোন রিপ্লাই পাওয়া যায়নি।
এ ব্যাপারে দেবিদ্বার থানার ওসি নয়ন মিয়া জানান, অভিযোগ পেয়েছি, প্রাথমিক তদন্ত কাজ চলছে। ঘটনার সত্যতা পেলে মামলা নেওয়া হবে। আসামি যেই হোক কেন, ছাড় দেওয়া হবে না।
প্রতিনিধি/এমএইচটি

