সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

শীতে জবুথবু নীলফামারীর জনজীবন, ৮ দিনেও দেখা মেলেনি সূর্যের

জেলা প্রতিনিধি, নীলফামারী
প্রকাশিত: ১৫ জানুয়ারি ২০২৪, ০৯:৩১ এএম

শেয়ার করুন:

শীতে কাবু নীলফামারীর জনজীবন, ৮ দিনেও দেখা মেলেনি সূর্যের

উত্তরের জেলা নীলফামারীতে হিমেল হাওয়ার সঙ্গে জেঁকে বসা শীতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। শীতের দাপটে জবুথবু পড়েছে দিনমজুর ও খেটে খাওয়া মানুষেরা।

টানা ৮ দিন ধরে সূর্যের দেখা নেই। ঘন কুয়াশায় ব্যাহত হচ্ছে যান চলাচল ও স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। সেই সঙ্গে শীতজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে হাসপাতালে।


বিজ্ঞাপন


সোমবার (১৫ জানুয়ারি) সকালে নীলফামারীর সৈয়দপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সপ্তাহ ধরে জেলার তাপমাত্রা ৯ থেকে ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ওঠানামা করছে। দিনের অধিকাংশ সময় আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকায় সূর্য উত্তাপ ছড়াতে না পারায় বেড়েছে শীতের তীব্রতা।

001

এমন অবস্থায় জরুরি প্রয়োজন ছাড়া লোকজন ঘরের বাইরে বের না হওয়ায় রাস্তাঘাট, হাটবাজার, রেলস্টেশন বাস টার্মিনালসহ পাবলিক প্লেসে লোকজনের উপস্থিতি নেই বললেই চলে। সরকারি-বেসরকারি অফিসে চাকরিজীবীরা আসলেও কাজকর্মে চলছে স্থবিরতা। জীবিকার তাগিদে নিম্ন আয়ের মানুষরা বের হলেও কাজ না পেয়ে পড়েছেন চরম দুর্ভোগে। রিকশা-ভ্যানচালক, দিনমজুর, কৃষিশ্রমিকরা পড়েছেন চরম বিপাকে।

জেলা ডোমার উপজেলার মিরজাগঞ্জ এলাকার দিনমজুর হাফিজুল ইসলাম ঢাকা মেইলকে বলেন, তীব্র ঠান্ডায় কাজে যেতে পারছি না। অভাবের সংসার, কাজে যেতে না পারায় খুব সমস্যায় আছি।


বিজ্ঞাপন


শহরের চৌরঙ্গী মোড় এলাকায় কথা হয় রিকশাচালক হামিদুর রহমান সঙ্গে। তিনি ঢাকা মেইলকে বলেন, ঠান্ডার কারণে মানুষ বাইরে বের হচ্ছেই না, চলাচল কমে গেছে। বাড়িতে বসে থাকলে পেটে খাবার জুটবে না। বাধ্য হয়ে প্রচন্ড শীতের মধ্যেও রাস্তায় বেরিয়েছি।

ডোমার উপজেলার মিরজাগঞ্জ এলাকার কৃষক সুজন ইসলাম ঢাকা মেইলকে বলেন, প্রচন্ড ঠান্ডায় কাজ করতে খুব সমস্যা হচ্ছে। শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। যারা পেটের দায়ে কাজে আসছেন তারাও শীতের মধ্যে টিকতে পারছেন না। প্রায় ছয়-সাতদিন থেকে সূর্যের দেখা নাই।

003

সৈয়দপুর বিমানবন্দর আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা লোকমান হোসেন বলেন, উত্তরের হিমেল হাওয়া ও ঘন কুয়াশার কারণে শীতের তীব্রতা বেশি অনুভূত হচ্ছে। কয়েক দিন থেকে নীলফামারীর তাপমাত্রা ৯ থেকে ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ওঠানামা করছে। এ রকম তাপমাত্রা আরও কয়েক দিন থাকতে পারে। বৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত তাপমাত্রা বাড়ার সম্ভাবনা কম।

এদিকে, ঠান্ডা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শীতজনিত রোগে আক্রান্তের হার বেড়েছে। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্করা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। হাসপাতালগুলোতে রোগীর চাপও বেড়েছে।

নীলফামারীর সিভিল সার্জন ডা. মো. হাসিবুর রহমান বলেন, শীতজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। এ সময় চলাফেরায় সবাইকে সাবধান হতে হবে, বিশেষ করে শিশু ও বয়স্কদের ঠান্ডা লাগানো একেবারেই যাবে না।

নীলফামারীর জেলা প্রশাসক পঙ্কজ ঘোষ ঢাকা মেইলকে বলেন, শীত মোকাবিলায় পর্যাপ্ত সরকারি সহায়তা প্রস্তুত রয়েছে। শীতবস্ত্র হিসেবে জেলার ৬ উপজেলা ও চার পৌরসভায় তিন দফায় ৩৬ হাজার ৮৮০টি কম্বল পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া শীতার্ত মানুষদের কথা চিন্তা করে আরও শীতবস্ত্রের চাহিদা পাঠানো হয়েছে। আশা করি দ্রুত শীতবস্ত্র পাওয়া যাবে। তা পেলেই শিগগির বিতরণের ব্যবস্থা করা হবে।

টিবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর