দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রংপুরের ৬টি সংসদীয় আসনে বেসরকারীভাবে নির্বাচিত হয়েছেন নৌকা প্রতীকে ৩ জন, লাঙ্গল প্রতীকে ১ জন এবং আওয়ামী লীগের ২ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী। সকাল ৮ টায় ভোট গ্রহণ শুরু হয়ে চলে বিরতিহীন ভাবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।
রোববার (৭ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ১০টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে বেসরকারিভাবে ফলাফল ঘোষণা করেন জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসান।
ফলাফল অনুযায়ী: রংপুর ১ আসনে বেসরকারীভাবে নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামীলীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী কেটলি প্রতীকের আসাদুজ্জামান বাবলু। তিনি পেয়েছেন ৭৩ হাজার ৯২৭ ভোট।
তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দি স্বতন্ত্র প্রার্থী মসিউর রহমান রাঙ্গা পেয়েছেন ২৪ হাজার ৩৩৩ ভোট।
বিজ্ঞাপন
রংপুর-২ (বদরগঞ্জ-তারাগঞ্জ) আসনে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী আবুল কালাম মোঃ আহসানুল হক চৌধুরী ডিউক। তিনি পেয়েছেন ৮১ হাজার ৫৯৯ ভোট। তার নিকতম আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী ট্রাক প্রতীকের বিশ্বনাথ সরকার বিটু পেয়েছেন ৬১ হাজার ৫৮৩ ভোট।
রংপুর-৩ সদর আসনে জাতীয় পার্টির চোয়ারম্যান জি এম কাদের বেসরকারীভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি লাঙ্গল প্রতীকে ভোট পেয়েছেন ৮১ হাজার ৮৬৮ পান। তার নিতটতম তৃতীয় লিঙ্গের আনোয়ারা ইসলাম রানী পেয়েছেন ২৩ হাজার ৩২৬ ভোট।
রংপুর-৪ (পীরগাছা-কাউনিয়া) আসনে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামীলীগের মনোনীত প্রার্থী টিপু মুনশি। তিনি পেয়েছেন ১ লাখ ২১ হাজার ৮৯৩ ভোট। তার তার নিকটতমপ্রতিদ্ধন্দি জাতীয় পার্টির সেলিম বেঙ্গল পেয়েছেন ৪১ হাজার ১২৫ ভোট।
রংপুর-৫ (মিঠাপুকুর) আসনে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী জাকির হোসেন সরকার। তিনি পেয়েছেন ১ লাখ ৯ হাজার ৭০৯ ভোট । তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দি আওয়ামীলীগের মনোনীত প্রার্থী রাশেক রহমান পেয়েছেন ৭৪ হাজার ৫৯০ ভোট।
রংপুর-৬ আওয়ামীলীগ মনোনিত প্রার্থী স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বেসরকারীভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি পেয়েছেন ১ লাখ ৮ হাজার ৬শ ৩৫ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দি আওয়ামীলীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী সিরাজুল ইসলাম পেয়েছেন ৩৬ হাজার ৮৩২ ভোট।
সরেজমিনে রংপুরের ৬ টি সংসদীয় আসনের মধ্যে রংপুর ৫ ও ৬ আসন পরিদর্শন করে দেখা গেছে, এবারের নির্বাচনে নারী ভোটারের উপস্থিতি লক্ষ করার মতো। নির্বাচনে শতবর্ষী মানুকেও ভোট কেন্দ্রে আসতে দেখা যায়। ৬টি সংসদীয় আসনে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ছিল স্বাভাবিক। কোথাও কোন অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। তবে ভোট শেষে রংপুর ২ আসনের বদরগঞ্জে নৌকা ও ট্রাক প্রতীকের সমর্থকের সাথে পুলিশের একটি অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটে। এতে পুলিশের লাঠি চার্জে ৩ জন আহত হন। তাছাড়া রংপুরের ৬ টি সংসদীয় আসনের আর কোথাও কোন ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
ভোটের দিন সকালে গোটা জেলায় আবহাওয়া ছিল কুয়াশাচ্ছান্ন। সকালের দিকে ভোটকেন্দ্রে ভোটারদের উপস্থিতি কম লক্ষ করা যায়। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোটাদের উপস্থিতি বাড়তে থাকে। তবে রংপুর সদর ৩ আসনে ভোটার উপস্থিতি খুবই কম ছিল। এছাড়া রংপুর ৫ ও ৬ মিঠাপুকুর ও পীরগঞ্জ আসনের কেন্দ্রগুলো ভোটার ও উৎসুক জনতার ভীড় ভোট কেন্দ্রের বাইরে পরিলক্ষিত হয়। সবমিলিয়ে কোন প্রকার বড় ধরনের কোন ঘটনা ছাড়াই রংপুরের ৬টি আসনে শান্তিপূর্ণ ভাবে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।
জেলায় মোট ভোটার ২৪ লাখ ৩২ হাজার ৫০৫ জন। এর মধ্যে নারী ভোটার রয়েছে ১২ লাখ ২০ হাজার ৩৯৪ জন। পুরুষ ১২ লাখ ১২ হাজার ৮৭ এবং তৃতীয় লিঙ্গের ২৪ জন ভোটার রয়েছে। জেলার মোট ৮৫৮টি ভোটকেন্দ্রের ৫ হাজার ১৭৬টি ভোটকক্ষে ভোটগ্রহণ করা হয়।
বিজ্ঞাপন
রংপুরের ৬টি সংসদীয় আসনে মোট ৩৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দিতা করেন। এরমধ্যে রংপুর-১ আসনে ৯ জন, রংপুর-২ আসনে ৩ জন, রংপুর-৩ আসনে ৬ জন, রংপুর-৪ আসনে ৩ জন, রংপুর-৫ আসনে ৮ জন এবং রংপুর-৬ আসনে ৭ জন প্রার্থী।
প্রতিনিধি/ এজে