শুক্রবার, ১১ এপ্রিল, ২০২৫, ঢাকা

এজেন্টের সামনে নৌকায় সিল মারতে হবে, সেই আ.লীগ নেতাকে খুঁজছে পুলিশ

জেলা প্রতিনিধি, ভোলা
প্রকাশিত: ০৪ জানুয়ারি ২০২৪, ০৫:৪৯ পিএম

শেয়ার করুন:

loading/img

লালমোহন উপজেলার ফরাজগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি ফয়েজ উল্লাহ খোকন হাওলাদার ‘এজেন্টের সামনে নৌকায় সিল মারতে হবে’ ভোটারদের এমন উদ্দেশ্য করে হুমকি ও উসকানিমূলক বক্তব্যের কারণে পুলিশ তাকে আটকের জন্য বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে যাচ্ছেন।

বুধবার মধ্যরাত থেকে পুলিশ এ অভিযান শুরু করলেও বৃহস্পতিবার (৪ জানুয়ারি) দুপুর পর্যন্ত তাকে আটক করা যায়নি।


বিজ্ঞাপন


পুলিশ বলছে, ভোটারদের উদ্দেশ করে হুমকি ও উসকানিমূলক বক্তব্য ভাইরাল হওয়ার পর অভিযুক্ত ওই নেতা আত্মগোপনে চলে যান। তাকে আটকের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।

বৃহস্পতিবার (৪ জানুয়ারি) দুপুরে লালমোহন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম মাহবুব উল আলম ঢাকা মেইলকে এ তথ্য জানিয়েছেন।

ওসি বলেন, গেল মঙ্গলবার বিকেলে লালমোহন উপজেলার ফরাজগঞ্জ ইউনিয়নের সাতকানিয়া বাড়ির উঠানে একটি উঠান বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে ভোলা-৩ আসনে আওয়ামী লীগের নৌকা মনোনীত প্রার্থী নূরনবী চৌধুরী শাওন উপস্থিত ছিলেন। তার উপস্থিতিতে ফরাজগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি ফয়েজ উল্লাহ খোকন হাওলাদার ভোটারদের উদ্দেশ্য করে বলেন, প্রত্যেক ভোটার আমাদের এজেন্টদের সামনে সিল মারবেন, যে ভোটার মারবেন না তার সঙ্গে নির্বাচনের পর দেখা করব।

ভোটারদের উদ্দেশে হুমকি ও উসকানিমূলক এ বক্তব্যের এক মিনিটের একটি ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বুধবার রাত থেকে লালমোহন থানা পুলিশের একটি টিম আওয়ামী লীগের এ নেতাকে খুঁজে বেড়াচ্ছেন। তাকে আটকের জন্য বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালানো হচ্ছে। পুলিশ আশা করছেন খুব শীগ্রই তাকে আটক করতে পারবেন।


বিজ্ঞাপন


এদিকে, লালমোহন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. তৌহিদুল ইসলাম বলেন, আওয়ামী লীগ নেতা ফয়েজ উল্লাহ খোকন হাওলাদারের বক্তব্যটি আমাদের নজরে আসার পর লালমোহন থানা পুলিশকে এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। পুলিশ এ ঘটনায় খোকন হাওলাদারের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিবে।

আজ বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতা ফয়েজ উল্লাহ খোকন হাওলাদারের সঙ্গে মুঠোফোনে ঢাকা মেইলের কথা হয়েছে। তার ভাইরাল বক্তব্যের কারণে পুলিশ তাকে খোঁজছে এ বিষয়ে তার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আজ সকালে পুলিশ আমার বাড়ির সামনে গিয়ে আমাকে খোঁজেছিল। কিন্তু তখন আমি ফরাজগঞ্জ ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে ছিলাম। পুলিশের সঙ্গে মুঠোফোনে আমার কথা হয়েছে।

এক প্রশ্নের জবাবে খোকন হাওলাদার বলেন, 'না', আমি আত্মগোপনে নেই। আমি নিয়মিত নৌকা প্রতীকের প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছি।

এদিকে, একই আসন থেকে নির্বাচনে অংশ নেওয়া ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী মেজর (অবঃ) মো. জসিম উদ্দিন ঢাকা মেইলকে বলেন, খোকন হাওলাদারকে আটকের বিষয়টি চোর-পুলিশ খেলার মতো। দল থেকে নৌকা প্রতীক পাওয়া প্রার্থী নূরনবী চৌধুরী শাওন প্রভাব খাটিয়ে পুলিশকে বাধ্য করছে, যাতে খোকন হাওলাদারকে আটক না করা হয়। পুলিশ চাইলে সবকিছুই পারে। কিন্তু প্রশাসনকে নিরপেক্ষ থাকার কথা থাকলেও প্রশাসন নিরপেক্ষ নেই। নৌকা প্রতীকের সমর্থক ও কর্মীরা প্রতিনিয়ত ভোটারদেরকে হুমকি দিচ্ছে, যেন ভোটাররা ভোট কেন্দ্রে গিয়ে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ না করতে পারে।

প্রতিনিধি/ এজে

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর