স্বামীর খোঁজে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় এসেছিলেন ভারতীয় তরুণী রিয়া বালা হাওলাদার। কিন্তু স্বামীকে না পেয়ে বুকভরা বেদনা নিয়ে নিজ দেশে ফিরে গিয়েছিলেন তিনি। চারদিনের মাথায় আবারও বাংলাদেশে ছুটে এসেছেন এবং অবশেষে বাংলাদেশি স্বামীর ঘরেই ঠাঁই নিলেন আলোচিত সেই ভারতীয় নারী।
বুধবার (৬ ডিসেম্বর) বিকেলে পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেন তিনি।
বিজ্ঞাপন
ভারতীয় এ তরুণী আসার খবরে ইমিগ্রেশনে গিয়ে হাজির হন তরুণীর শ্বশুর শ্রী নিখিল চন্দ্র রায়। তখন সেখানে উপস্থিত ছিলেন তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ফজলে রাব্বি ও মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু সাঈদ চৌধুরী। প্রশাসনের উপস্থিতিতে ওই নারী ও ছেলের বাবার কাছ থেকে অঙ্গিকারনামা নিয়ে তেঁতুলিয়ায় স্বামীর বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয় তাকে।
জানা যায়, সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে এই তরুণীর প্রেমে পড়েন বাংলাদেশের পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ার উপজেলার দেবনগর ইউনিয়নের শিবচন্ডী এলাকার অখিল চন্দ্র রায়ের ছেলে বিটু রায়। প্রেমের এক পর্যায়ে বিটু রায় ভারতের জলপাইগুড়িতে গিয়ে প্রেমিকা রিয়া বালার সঙ্গে দেখা করেন।
বিজ্ঞাপন
গত ২১ সেপ্টেম্বর জলপাইগুড়ি জেলার রাজগঞ্জ থানার শিকারপুর এলাকায় তার পিসির বাড়িতে রিয়া বালাকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর তারা সেখানে ১ মাস বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকেন। এক পর্যায়ে দেশে ফিরে আসেন বিটু রায়।
দেশে ফিরে রিয়া বালার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। এমনকি বিয়ের বিষয়টিও অস্বীকার করতে থাকেন। উপায় না দেখে স্বামীর খোঁজে গত ২৯ নভেম্বর বাংলাবান্ধা ইমিগ্রেশন দিয়ে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ার বিটুর বাড়িতে যান রিয়া বালা। তার আসার খবরে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায় বিটু। তিনদিন শ্বশুর বাড়িতে থাকার পর স্বামীকে না পেয়ে নিরাপত্তাহীনতার আশঙ্কায় তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে ফোন করে সহযোগিতা চান ওই তরুণী।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স্থানীয় নারী ইউপি সদস্যের সহযোগিতায় তাকে উদ্ধার করে তেঁতুলিয়া থানার নারী ও শিশু সেলে থাকার ব্যবস্থা করেন। এ সময় বিটুর বাবা নিখিল চন্দ্র আশ্বাস দেন- ছেলে ফিরে এলে তাকে নিয়ে ভারতে গিয়ে বিষয়টি সমাধান করবেন।
পুরো ঘটনা বর্ণনায় রিয়া বালা বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইমুতে তার সঙ্গে আমার পরিচয় তারপর আমরা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হই। বিয়ে করে এক মাস আমার সঙ্গে থেকে কৌশলে টাকা, কাপড়সহ অনেক কিছু নিয়ে তিনি দেশে চলে যান। আমি স্বামীর অধিকার পেতে গত ২৯ ডিসেম্বর পাসপোর্ট ভিসা করে বাংলাদেশের পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় স্বামীর বাড়িতে যাই। কিন্তু স্বামী না থাকায় তিনদিন পর প্রশাসনের সহযোগিতায় আমাকে দেশে ফিরে যেতে হয়। আজ আবার এসেছি। আমাকে নিতে আমার শ্বশুরসহ তার পরিবারের লোকজন এসেছেন।
প্রতিনিধি/ এজে