টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে দশম শ্রেণিতে পড়ুয়া এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ মামলায় শহীদুল ইসলাম খোকন (২৩) নামে এক যুবককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। সেই সঙ্গে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
বুধবার (২৯ নভেম্বর) দুপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালের বিচারক মাহবুবুর রহমান এ রায় দেন। এছাড়া ধর্ষণের ফলে জন্ম নেওয়া শিশুর ভরণপোষণ রাষ্ট্র বহন করবে বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
দণ্ডিত যুবক শহীদুল ইসলাম ঘাটাইল উপজেলার শেখ শিমুল গ্রামের আব্দুল আলিমের ছেলে।
টাঙ্গাইলের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) আলী আহমেদ জানান, ভুক্তভোগী ঘাটাইল উপজেলার স্থানীয় একটি মাদরাসায় ১০ম শ্রেণির শিক্ষার্থী।
শহীদুল ইসলাম খোকন ভুক্তভোগীর প্রতিবেশি চাচাতো ভাই। সেই সুযোগে খোকন বাড়িতে ও মাদরাসাতে যাওয়া আসার পথে তাকে প্রেমের প্রস্তাব দিতো। পরে তাদের মধ্যে প্রেমের সর্ম্পক গড়ে ওঠে। সেই সর্ম্পকের সূত্র ধরে ২০২১ সালের ১ অক্টোবর বিয়ের আশ্বাস দিয়ে খোকন নিজের বাড়িতে নিয়ে ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করে।
এরপর সুযোগ পেলেই খোকন ওই মাদরাসা ছাত্রীকে একাধিকবার ধর্ষণ করে। এতে ওই ছাত্রী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। পরে বিষয়টি ছাত্রীর পরিবারের লোকজন জানতে পারলে স্থানীয়ভাবে বিচার সালিসের ব্যবস্থা করা হয়। তখন খোকন তাকে বিয়ে করবে এবং ওই অনাগত সন্তানকে স্বীকৃতি দিবে বলে স্বীকার করে। পরবর্তীতে খোকন মাদরাসা ছাত্রীকে বিয়ে না করে পালিয়ে যায়।
বিজ্ঞাপন
পরে ওই ছাত্রীর মামা ছানোয়ার হোসেন বাদী হয়ে ২০২২ সালের ২০ মে ঘাটাইল থানায় শহীদুল ইসলাম খোকনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করতে গেলে থানা পুলিশ মামলা না নেওয়ায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালে মামলা দায়ের করেন। পরে ওই ছাত্রী পুত্রসন্তান জন্ম দেন।
ডিএনএ পরীক্ষায় আসামি খোকন ওই শিশুর বাবা বলে প্রমাণিত হয়। তদন্ত শেষে এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আদালতে প্রতিবেদনপত্র জমা দেন। পরে এই মামলায় নয়জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে বুধবার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯ (১) ধারায় শহীদুল ইসলাম খোকনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয় বিচারক।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন- টাঙ্গাইলের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) আলী আহমেদ। সহযোগিতা করেন সহকারী সরকারি কৌঁসুলি আব্দুর রহিম ও মোহাম্মদ আব্দুল কুদ্দুস। এ মামলায় আসামিপক্ষে আইনজীবী ছিলেন ইলিয়াস খান পারভেজ।
প্রতিনিধি/এসএস