শুক্রবার, ১১ এপ্রিল, ২০২৫, ঢাকা

দাওয়াত কার্ডে এমপির ছবি 

বঙ্গবন্ধু-প্রধানমন্ত্রীর ছবি পায়ের নিচে ফেললেন আ.লীগের উপদেষ্টা

জেলা প্রতিনিধি, সিরাজগঞ্জ
প্রকাশিত: ১১ নভেম্বর ২০২৩, ০৯:৪৬ এএম

শেয়ার করুন:

loading/img
ছবি: সংগৃহীত

আওয়ামী যুবলীগের ৫১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানের দাওয়াত কার্ডে স্থানীয় সংসদ সদস্যের ছবি থাকায় বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি যুক্ত দাওয়াত কার্ড পায়ের নিচে ফেলেছেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য, সাবেক পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান ও সিরাজগঞ্জ-৩ আসনের দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশী ড. হোসেন মনসুর।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া ১৫ মিনিট ২৬ সেকেন্ডের একটি অডি ক্লিপে এখন সিরাজগঞ্জ-৩ (রায়গঞ্জ-তাড়াশ) আসনসহ পুরো জেলার নেতাদের মোবাইল ফোনে ঘুরে বেড়াচ্ছে।


বিজ্ঞাপন


দাওয়াত কার্ডে স্থানীয় এমপি ডা. আব্দুল আজিজের পাশাপাশি যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা ফজলুল হক মনি, কেন্দ্রীয় যুবলীগের চেয়ারম্যান ফজলে শামস পরশ, সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিলের ছবি ছিল। একই সঙ্গে জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক রাশেদ ইউসুফ জুয়েলসহ কমিটির অন্য নেতাদের ছবির সঙ্গে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্বলিত কার্ডটি পায়ের নিচে ফেলে চিৎকার করে বললেন, এই কার্ডটি আমি মানি না, বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীকেও আমি মানি না। কার্ডটি পায়ের নিচে ফেলে পিষে ফেলারও নির্দেশ দেন। এ সময় দলীয় নেতাকর্মীদের রোষানলে পড়ার আশঙ্কায় তিনি দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।

বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) সন্ধ্যায় তাড়াশ উপজেলা আওয়ামী লীগ দলীয় কার্যালয়ে এই ঘটনা ঘটে। বিষয়টি সমাধানের জন্য হোসেন মনসুরের পক্ষ থেকে তাড়াশ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সঞ্চিত কর্মকার দলীয় কার্যালয়ে উপস্থিত হলে তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরেন উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। এ সময় সঞ্জিত কর্মকার ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে দলীয় নেতাকর্মীদের শান্ত থাকার অনুরোধ জানান।

এ সময় রায়গঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ইমরুল হাসান তালুকদার ইমন, তাড়াশ পৌরসভার মেয়র আব্দুর রাজ্জাক, তাড়াশ উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ও ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন খান, সাধারণ সম্পাদক মো. ফরহাদ আলী ও যুবলীগ নেতা কামাল হোসেনসহ অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।

 


বিজ্ঞাপন


আরও পড়ুন 

 

অডিও ক্লিপে তাড়াশ উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ আলী বিদ্যুৎ বলেন, ড. হোসেন মনসুর আওয়ামী লীগের বিভেদকারী। তিনি বিভিন্ন সময় আওয়ামী লীগের দলীয় নেতাকর্মীদের বিএনপি-জামায়াত বলে বিভ্রান্ত করেছেন। অথচ নিজে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টার পদ নিয়ে দলের মধ্যে বিভেদ তৈরির জন্য বিভিন্ন সময় বিভিন্ন উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়েছেন। আমাদের সঙ্গে একই আচরণ করেছেন তিনি। যুবলীগের ৫১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর দাওয়াত কার্ড দিতেই তিনি আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেছেন। 

 

ফরহাদ আলী বলেন, ওই সময় কার্ডে থাকা স্থানীয় এমপির ছবি কেটে পায়ের নিচে ছুড়ে ফেলেন। বারবার অনুরোধ করেছি, স্যার চিঠির খামের উপর বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি আছে। আপনি পায়ের নিচে দিয়েন না। তিনি কারও কথা শুনেননি। বরং চিৎকার করে বলেছে, আমি মানি না বঙ্গবন্ধুকে, আমি মানি না প্রধানমন্ত্রীকে। তিনি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। একই সঙ্গে তদন্তপূর্বক ড. হোসেন মনসুরের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।

একই অডিও ক্লিপে তাড়াশ উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন খাঁন বলেন, যুবলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে একখানা দাওয়াতপত্র ড. হোসেন মনসুরের হাতে দেওয়া হয়। খামের উপরে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবির নিচে কেন্দ্রীয় যুবলীগ, জেলা যুবলীগের পাশাপাশি স্থানীয় সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুল আজিজের ছবি থাকায় পায়ের নিচে ফেলে চিৎকার করে বলেছেন, আমি মানি না বঙ্গবন্ধুকে, আমি মানি না প্রধানমন্ত্রীকে। 

আনোয়ার বলেন, বিষয়টি তাৎক্ষণিক তাড়াশ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জিত কর্মকারকে বলেছি। আমরা এর বিচার চাই।

তাড়াশ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জিত কর্মকার ঢাকা মেইলকে বলেন, যুবলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর দাওয়াত কার্ডে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের ছবি না থাকায় ড. হোসেন মনসুর স্যার যুবলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে উছৃঙ্খল আচরণ করেন। তাদের সঙ্গে বাজে ল্যাইগুয়েজ ব্যবহার করেছেন। এটা আসলে ঠিক হয়নি।

এ বিষয়ে কথা বলতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ড. হোসেন মনসুরকে একাধিকবার ফোন করেও পাওয়া যায়নি। 

প্রতিনিধি/এইউ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন