লক্ষ্মীপুর-৩ (সদর) আসনের উপ-নির্বাচনে একটি ভোটকেন্দ্রে প্রকাশ্যে নৌকা মার্কায় (প্রতীক) সিল মারার ভিডিও সামাজিক মাধ্যম ফেইসবুকে ভাইরাল হয়েছে। এ সিল মারছেন বহিস্কৃত ছাত্রলীগ নেতা আজাদ হোসেন।
সোমবার (৬ নভেম্বর) সকাল থেকে বিভিন্ন ফেইসবুক একাউন্ট থেকে নৌকা মার্কা সিলমারা ৫৭ সেকেন্ডের ভিডিওটি ভাইরাল হয়।
বিজ্ঞাপন
বহিস্কৃত ছাত্রলীগ নেতা আজাদ হোসেন চন্দ্রগঞ্জ থানা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি পদে ছিলেন। সাংগঠনিক পরিপন্থী কার্যকলাপে সঙ্গে জড়িত থাকা গত ৮ অক্টোবর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুল ইসলাম রকি ও সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন ভূঁইয়া তাকে সহসভাপতি পদ থেকে সাংগঠনিক কার্যক্রম থেকে অব্যহতি দেয়।
সর্বশেষ বহিস্কৃত ছাত্রলীগ নেতা আজাদ হোসেন গতকাল (৫ নভেম্বর) অনুষ্ঠিত হওয়া লক্ষ্মীপুর-৩ (সদর) আসনের উপ-নির্বাচনে নৌকার এজেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
সদর উপজেলা দিঘলী ইউনিয়নের দক্ষিণ খাগুড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের ছিল তার দায়িত্ব। ওই ভিডিওতে দেখা যায় তার গলায় নৌকার কার্ডও ঝুলছে।
ভোটকক্ষের বেঞ্চে বসে একটি ব্যালট বইয়ের পাতা উল্টিয়ে একাধিক সিল মারেন আজাদ। ভিডিওতে দেখা গেছে খুব দ্রুত তিনি সিল মারছেন। এ সময় তাকে অন্য একজন তাকে সহযোগিতা করেন। ভিডিওটিতে দেখা যায় ৪৩টি ব্যালটে তিনি নৌকা প্রতীকে সিল মেরেছেন।
বিজ্ঞাপন
চন্দ্রগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওহাব বলেন, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে সম্প্রতি আজাদকে ছাত্রলীগের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়। দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করতেই সে প্রকাশ্যে নৌকায় সিল মেরেছে। এরা দলের জন্য বিপজ্জনক। তবে ভিডিওটি আমি দেখিনি। বিস্তারিত কিছু জানা নেই।
লাঙলের প্রার্থী জেলা জাতীয় পার্টির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ রাকিব হোসেন বলেন, ক্ষমতাসীনরা কেন্দ্রে প্রভাব খাটিয়ে জাল ভোট দিয়েছেন। নৌকায় সিল মারার ভিডিওটি তার বড় প্রমাণ। জালভোটসহ বিভিন্ন অভিযোগে আমি নির্বাচন চলাকালীন ভোট বর্জন করেছি। দলের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপ-নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও কুমিল্লা আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ফরহাদ হোসেন বলেন, ভিডিওটি আমার নজরে পড়েনি। সাংবাদিকদের মাধ্যমে আমি বিষয়টি জানতে পেরেছি। এ ব্যাপারে কেউ যদি অভিযোগ দেন তাহলে ট্রাইব্যুনালে যেতে হবে। আর ইতোমধ্যে আমরা নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করে দিয়েছি।
লক্ষ্মীপুর-৩ (সদর) সংসদীয় আসনের উপনির্বাচনের ১ লাখ ২০ হাজার ৫৯৯ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন নৌকা প্রতীকের প্রার্থী গোলাম ফারুক পিংকু। এছাড়া লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী মুহাম্মদ রাকিব হোসেন ৩ হাজার ৮৪৬ ভোট, গোলাপ ফুল মার্কার প্রার্থী সামছুল করিম খোকন ২ হাজার ১২৬ ভোট ও আম প্রতীকে সেলিম মাহমুদ পেয়েছেন ৫১৩ ভোট। তবে নির্বাচনে জাল ভোট, কেন্দ্রে ক্ষমতাসীনদের বল প্রয়োগ, কেন্দ্র এজেন্ট ঢুকতে না দেওয়া ও এজেন্টদেরকে বের করে দেওয়ার অভিযোগে রোববার দুপুরে লক্ষ্মীপুর প্রেস ক্লাবে পৃথক সংবাদ সম্মেলন করে জাতীয় পার্টি ও জাকের পার্টি প্রার্থী ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন।
প্রতিনিধি/একেবি