নাটোরে যৌতুকের কারণে স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামী শরিফুল ইসলামকে (২৬) মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
সোমবার (৩০ অক্টোবর) দুপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালের বিচারক জেলা ও দায়রা জজ মুহাম্মদ আব্দুর রহিম এই আদেশ দেন।
বিজ্ঞাপন
আসামি শরিফুল ইসলাম নাটোর জেলার বড়াইগ্রাম উপজেলার কেচুয়াকোড়া গ্রামের সামছুল হকের ছেলে।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সালের ১৮ নভেম্বর নাটোর সদর উপজেলার গোয়ালডাঙ্গা গ্রামের জয়নাল আবেদীনের মেয়ে হাসনা হেনার সঙ্গে বড়াইগ্রামের শরিফুল ইসলামের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে স্বামী শরিফুল যৌতুকের জন্য স্ত্রী হাসনা হেনার ওপর নির্যাতন চালাতেন। এরই একপর্যায়ে ২০১৫ সালের ৫ ডিসেম্বর তাদের মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়।
পরবর্তীতে যৌতুকের কোনো দাবি বা এ নিয়ে হাসনা হেনাকে কোনো নির্যাতন করা হবে না মর্মে অঙ্গীকার করে শরিফুল। এতে উভয় পরিবারের সম্মতিতে ২০১৬ সালের ১৮ জানুয়ারি তাদের দু’জনের আবার মুসলিম শরিয়তের বিধান অনুযায়ী রেজিস্ট্রি কাবিনমুলে বিয়ে হয়। এই বিয়ের পর আবারও যৌতুকের জন্য হাসনা হেনার ওপর নতুন করে নির্যাতন শুরু করেন। পরে শরিফুলকে যৌতুক বাবদ এক লাখ টাকা দেন হাসনার পরিবার। কিন্তু এরপরও নানাভাবে নির্যাতন করতেন। পরবর্তীতে আরও ২ লাখ টাকা যৌতক দাবি করে স্বামী শরিফুল।
পরে ২০১৭ সালের ১ সেপ্টেম্বর রাতে নির্যাতনের এক পর্যায়ে হাসনা হেনাকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর মুখে বিষ ঢেলে মেঝেতে মরদেহ ফেলে পালিয়ে যায়। পরে লোকমুখে খবর পেয়ে পরদিন সকালে হাসনার মা মর্জিনা বেগমসহ পরিবারের সদস্যরা এসে মেয়েকে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায় করে।
বিজ্ঞাপন
এ ঘটনায় নিহতের মা মর্জিনা বেগম বাদী হয়ে স্বামী শরিফুল ইসলাম, তার মা সাহারা বেগম, দুলাভাই জহুরুল ইসলাম ও তার বোন সামিরুন আক্তার সুমাকে অভিযুক্ত করে নাটোর সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পরে তদন্ত শেষে পুলিশ আদালতে অভিযোগ দাখিলের পর মামলার বিচার কাজ শুরু হয়। সাক্ষীগ্রহণ শেষে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মুহাম্মদ আব্দুর রহিম আজ দুপুরে আসামি শরিফুল ইসলামকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন। অপর তিন আসামি দোষী প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের মামলা থেকে খালাস দেওয়া হয়।
প্রতিনিধি/এসএস