মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

সুনামগঞ্জে সব বয়সীদের নিয়ে হাফ ম্যারাথন অনুষ্ঠিত

জেলা প্রতিনিধি, সুনামগঞ্জ
প্রকাশিত: ২০ অক্টোবর ২০২৩, ০৬:১১ পিএম

শেয়ার করুন:

সুনামগঞ্জে সব বয়সীদের নিয়ে হাফ ম্যারাথন অনুষ্ঠিত

হাওরের জেলা সুনামগঞ্জে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হলো হাফ ম্যারাথন। এতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা প্রায় তিনশ রানার ম্যারাথনে অংশ নেন। এদের মধ্যে ১০ বছরের শিশু থেকে শুরু করে ৭৪ বয়সী বৃদ্ধও ছিলেন।

শুক্রবার (২০ অক্টোবর) সুনামগঞ্জ রানার্স কমিউনিটির উদ্যোগে এবার প্রথমবারের মতো হাফ ম্যারাথন অনুষ্ঠিত হয়।


বিজ্ঞাপন


সকাল পৌনে ছয়টায় পৌর শহরের ঐতিহ্য জাদুঘর প্রাঙ্গণ থেকে ম্যারাথন শুরু হয়। এতে দুটি ক্যাটাগরিতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে প্রায় ৩০০ রানার (নারী-পুরুষ) অংশ নেন। 

১০ কিলোমিটার ও ২১ কিলোমিটার দুইভাগে ম্যারাথন হয় সুনামগঞ্জ-দোয়ারাবাজার সড়কে।

sunamgonj-1

ম্যারাথনের সময় নির্ধারিত সড়কে যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়। মোড়ে মোড়ে স্বেচ্ছাসেবকেরা ম্যারাথনে অংশ নেওয়াদের জন্য পানি, স্যালাইন, হালকা খাবার নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন। প্রয়োজনে তাদের কাছ থেকে সেগুলো নিচ্ছেন দৌঁড়ে অংশ নেওয়া লোকজন। জরুরি প্রয়োজনে স্বাস্থ্যসেবার ব্যবস্থা ও অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত রাখা হয়েছিল।


বিজ্ঞাপন


পঞ্চম শ্রণি পড়ুয়া দুই ছেলে রিয়ান আলম ও রায়হান আলমকে সঙ্গে নিয় ম্যানাথনে অংশ নিয়েছেন সিলেটের বাসিন্দা শাহ আলম। লাফার্জ সিমেন্ট কোম্পানিতে চাকরি করেন তিনি। শাহ আলম বলছিলেন, সুস্থ থাকাটা জরুরি। পরিবারের সবাইকে নিয়েই হাঁটি, দৌঁড়াই। সিলেটের বিভিন্ন আয়োজনে ছেলেরা অংশ নেয়। তাঁদের আগ্রহে সুনামগঞ্জে এসেছি। রিয়ান, রাইয়ানও সুনামগঞ্জ ম্যারাথনে অংশ নিয়ে খুশি। ঢাকা থেকে আসা শিক্ষার্থী ঝরা বলেন, আমি একেবারে নতুন, দুইমাস হয় দৌঁড় শুরু করেছি। পরিবারের উৎসাহে সুনামগঞ্জ ম্যারাথনে অংশ নিয়েছি।

৬৯ বছর বয়সী সচীন্দ্র চন্দ্র অধিকারী ১০ কিলোটার দৌঁড়ে এসে অন্যদের সঙ্গে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন ঐতিহ্য জাদুঘর প্রাঙ্গণে। জানালেন দীর্ঘদিন শিক্ষকতা করেছেন। ক্রীড়া শিক্ষক ছিলেন। অবসরে যাওয়ার পর সিলেট ফিটনেস ক্লাবের সঙ্গে যুক্ত হন। শুরু করেন দৌঁড়ানো। এখনও সুস্থ আছেন। সুনামগঞ্জ ম্যারাথনে ৪৫ ঊর্ধ্ব বয়সীদের ১০ কিলোমিটারের দৌঁড়ে তিনি চতুর্থ হয়েছেন।

sunamgonj-4

পাশে বসা সিলেট ফিটনেস ক্লাবের সভাপতি জামাল উদ্দিন বলেন, আমরা ৪০জন সুনামগঞ্জ হাফ ম্যারাথনে অংশ নিয়েছি। সচীন্দ্র অধিকারী আমাদের প্রেরণা। সিলেট শহরের শাহী ঈদগাহ এলাকার বাসিন্দা রুনা বেগম বলেন, এক বছর হয় নিয়মিত হাঁটেন, দৌঁড়ান। সুস্থ থাকতে হলে সবার হাঁটা উচিত।

ঢাকার জেসমিন আক্তার ২০১৭ সাল থেকে দৌঁড়ান। দীর্ঘদিন একটি বেসরকারি সংস্থায় (এনজিও) চাকরি করেছেন, এখন ব্যবসা করেন। এ পর্যন্ত ২১ কিলোমিটার ম্যাাাথনের ৭টিতে অংশ নিয়েছেন। ১০ কিলোমিটারে অসংখ্যবার। তিনি বলছিলেন, সকালে দৌঁড়ালে সারাদিন আপনার ভালো যাবে। শরীরে কোনো ক্লান্তি, অবসাদ ভর করবে না। শারীরিক, মানসিক শক্তি অনেক বেড়ে যায়।

সুনামগঞ্জ রানার্স কমিউনিটির সদস্যসচিব আবু সালেহ সংগঠনের কর্মীদের নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন অন্য জেলা থেকে আসা রানারদের সুবিধা-অসুবিধা দেখতে।

sunamgonj-2

সুনামগঞ্জ রানার্স কমিউনিটির প্রধান সমন্বয়ক মোহাম্মদ মামুনুর রশীদ বলেন, সুনামগঞ্জে এটাই প্রথম হাফ ম্যারাথনের আয়োজন। আমি নিজেও একজন রানার। এই হয় ম্যারাথন আয়োজনে সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী, পৌর মেয়র নাদের বখতসহ বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার লোকজন সহযোগিতা করেছেন, আমরা তাদের কাছে কৃতজ্ঞ।

সুনামগঞ্জ হাফ ম্যরাথনে ১০ কিলোমিটারের দৌঁড়ে প্রথম হন দীপ তালুকদার, দ্বিতীয় আমির হোসেন, তৃতীয় হন কাওসার আহমদ। ২১ কিলোমিটার দৌঁড়ে প্রথম হন গোলাম রাহাত তোফায়েল, দ্বিতীয় আশরাফুল আলম কাশেম, তৃতীয় ফাহিন্স আহমদ আরমান। ৪৫ ঊর্ধ্ব বয়সীদের ১০ কিলোমিটার দৌঁড়ে প্রথম হন ওয়াহাব খান, দ্বিতীয় বিশ্বিজৎ দাশ, তৃতীয় হসমন জিয়া উদ্দিন।

শেষ পর্বে ছিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও পুরস্কার বিতরণ।

প্রতিনিধি/এসএস

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর