মানিকগঞ্জে চাঞ্চল্যকর প্রবাসী ফেরত রোখসানা (৩৮) হত্যার ঘটনায় দুই দিনের মধ্যে রহস্য উদঘাটন করে আসামি বাবুলকে (৪২) গ্রেফতার করেছেন পুলিশ। গ্রেফতার বাবুল রোখসানার স্বামী।
শুক্রবার (২০ অক্টোবর) দুপুরে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রউফ সরকার এই বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বিজ্ঞাপন
রোখসানার বাড়ি মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার বায়রা নয়াবাড়ী গ্রামে। সে এই গ্রামের মৃত ছাইজুদ্দীনের মেয়ে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে পুলশি সুপার মোহাম্মদ গোলাম আজাদ খান জানান, পারিবারিক তুচ্ছ ঘটনাকে কন্দ্রে করে খুনের শিকার হন প্রবাসী রোকসানা। নিজ বাড়িতে স্ত্রী রোকসানাকে খুন করে তার লাশ পাশরে রুমের মেঝেতে পুতে রেখে পালিয়ে যায় তার স্বামী বাবুল।
পুলিশ তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় বৃহস্পতবিার রাতে বাবুলকে খুলনা থেকে গ্রেফতার করে। তবে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বাবুল রোখসানাকে হত্যার কথা স্বীকার করছেন বলে জানান তিনি।
সদর থানার পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মানকিগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার দরিকান্দি এলাকার শেখ কাশেম আলীর ছেলে বাবু্ল। সে ৩ বছর আগে রোকসানাকে গোপনে বিয়ে করেন। বাবুলের দ্বিতীয় স্ত্রী ছিল রোখসানা। বিয়ের পরেই সৌদি আরব চলে যায় রোকসানা। বিদেশে থেকে প্রায় প্রতি মসে নিয়মিতভাবে স্বামীর কাছে টাকা পাঠাতেন তিনি। সেই টাকা দিয়ে সদর উপজেলার সানবান্দা এলাকায় জামি ক্রয় করে একতলা বাড়ি নির্মাণ করেন বাবুল। চলতি মাসের ৬ তারিখে ছুটিতে দেশে আসেন রোকসানা। পরে সাভারের একটি ভাড়া বাসায় স্বামী বাবুলকে নিয়ে থাকতেন।
বিজ্ঞাপন
গত ১৩ তারিখে শানবান্দার নির্মাণাধীন বাড়িতে আসেন তারা। রাতে সেখানে বাবুলের প্রথম স্ত্রীকে তালাকের বিষয়ে রোকসানার সঙ্গে কথাকাটাকাটি হয়। এর পরে একসময় রোখসানা ঘুমিয়ে যায়। ভোর রাতে ঘুমন্ত রোখসানাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে পাশের রুমের মেঝেতে বালুর মধ্যে লাশ পুতে রেখে পালিয়ে যায় বাবুল।
পুলিশ হেফাজতে থাকা বাবুল জানান, বেশ কয়েক বছর আগে রোখসানার সঙ্গে পরিচয় হয়। এর পরে প্রায় ৩ বছর হলো আমরা বিয়ে করি। বিয়ের পরে রোখসানা সৌদি আরব যায়। সেখানে গিয়ে সাত থেকে আট লাখ টাকা পাঠায়। ঘটনার দিন ১৩ অক্টোবর রাতে তার বাবা মা ও প্রথম স্ত্রী সন্তানদের গালিগালাজ করায় আমার সঙ্গে তার বেশ কিছুক্ষণ কথা কাটাকাটি হয়। সেই রাগেই আমার দ্বিতীয় স্ত্রীকে হত্যা করি বলে জানান তিনি।
সদর থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুর রউফ সরকার জানান, এ ঘটনায় মামলার পর তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে খুলনা হাদিস পার্কের সামনে থেকে গত বৃহস্পতিবার বাবুলকে গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামি বাবুল তার দ্বিতীয় স্ত্রীকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। আদালতে সে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেওয়ার জন্য রাজি হয়েছেন। আজ দুপুরে তাকে আদালতে পাঠানো হব।
উল্লেখ, গত ১৭ অক্টোবর মঙ্গলবার সানবান্দা এলাকার নির্মাণাধীন ওই বাড়ি থেকে প্রচণ্ড র্দুগন্ধ আসলে আশপাশের লোকজন বাড়িতে প্রবশে করে এবং রুমের ভেতরে গন্ধের কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে রুমের ভেতরের মাটি বালু সরালে নিহত ওই নারীর হাত বেড়িয়ে আসে।
পরে বিষয়টি পুলিশকে অবহিত করলে পুলিশ অজ্ঞাত পরিচয়ে ওই নারীর লাশ উদ্ধার করে হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। পরে নিহতের ভাই ফজল খবর পেয়ে পাসপাতালে এসে বোনের লাশ শনাক্ত করেন।
প্রতিনিধি/এসএস