সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

সংসদ বিলুপ্ত করে নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা তুলে দিন: মঈন খান

জেলা প্রতিনিধি, ময়মনসিংহ
প্রকাশিত: ০১ অক্টোবর ২০২৩, ১০:৫১ পিএম

শেয়ার করুন:

সংসদ বিলুপ্ত করে নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা তুলে দিন: মঈন খান

ময়মনসিংহ থেকে শুরু হওয়া বিএনপির রোডমার্চ শেষে কিশোরগঞ্জের সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড.আব্দুল মঈন খান বলেছেন, অবৈধ এই সরকারকে মানুষ আর চায় না। এখনও সময় আছে অতিদ্রুত পদত্যাগ করেন। সংসদ বিলুপ্ত করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা তুলে দিন।

কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার ময়মনসিংহ-ভৈরব মহাসড়কের পাশে লতিবাববাদ বালুর মাঠে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।


বিজ্ঞাপন


সরকারের পদত্যাগ, সংসদ বিলুপ্ত, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন ও খালেদা জিয়ার মুক্তির লক্ষ্যে জেলা বিএনপি এ সমাবেশের আয়োজন করে। 
সমাবেশে কিশোরগঞ্জ জেলা ছাড়াও ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, শেরপুর ও জামালপুরের নেতা-কর্মীরা যোগ দেন। বিএনপির ময়মনসিংহ বিভাগের সহসাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা বিএনপির সভাপতি মো. শরীফুল আলমের সভাপতিত্বে বিকেল তিনটায় এই সমাবেশ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও ৬৭ কিলোমিটার পথের বিভিন্ন মোড়ে আরও পাঁচটি সমাবেশ করতে গিয়ে রোডমার্চ কিশোরগঞ্জে পৌঁছে রাত আটটার দিকে।এর আগেই সন্ধ্যা ছয়টায় সেখানে সমাবেশ শুরু হয়ে যায়। রাত পৌনে নয়টায় ড. মঈন খান বক্তব্য দেওয়া শুরু করেন।

আব্দুল মঈন খান বলেন, বাংলাদেশ আজ গভীর সংকটের সম্মুখীন। আমরা স্বাধীন জাতি হিসেবে বিশ্বের দরবারে থাকতে পারব কি না সে প্রশ্ন এখন দেখা দিয়েছে। আওয়ামী লীগ আমাদের সকল অর্জন ধ্বংস করে দিয়েছে। গণতন্ত্রের জন্য আমরা মুক্তিযুদ্ধ করে স্বাধীনতা এনেছিলাম। ১৯৯০ সালে আমাদের নেতা–কর্মীরা লড়াই করে গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছিল, ফ্যাসিবাদী এ সরকার গণতন্ত্রের শেষ অংশটুকুও ধ্বংস করে দিয়েছে। আদালত, বিচার বিভাগ, প্রশাসন সবকিছুকে তারা ভেঙে দিয়েছে। বাংলাদেশকে নিয়ে এখন বিশ্ববাসীও উদ্বিগ্ন। বাংলাদেশে যারা তাদের বিরুদ্ধে যাচ্ছে, তাদের গুম করা হচ্ছে, হত্যা করছে, অসংখ্য নেতা–কর্মীকে মিথ্যা মামলা দিয়ে জেলে পুরে দিয়েছে। তারা সবচেয়ে খারাপ কাজটি করেছে, খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে সাজা দিয়ে আটক করে রেখেছে। আজকে তিনি অত্যন্ত অসুস্থ হয়ে জীবন–মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। নেত্রীকে বিনা চিকিৎসায় এমন অবস্থায় রেখেছে, বাইরে চিকিৎসা নিতে যেতে দিচ্ছে না।

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রসঙ্গ তুলে মঈন খান বলেন, মানুষ আজ তিন বেলা খেতে পারছে না। মূল্যস্ফীতি ও মুদ্রাস্ফীতির কারণে বাংলাদেশের জনগণের নাভিশ্বাস উঠেছে। মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তদের দিকে কান পাতলে এখন কান্নার আওয়াজ শোনা যায়। বাংলাদেশের এখন মুক্তি প্রয়োজন। তাই আসুন ঐক্যবদ্ধ হই। সব রাজনৈতিক দল এক হয়েছে। বিশ্ববাসীও এ দেশে অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন চায়। এর জন্য প্রয়োজন এই সরকারের পতন এবং সংসদ বিলুপ্ত করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার। বিএনপি এ দাবি নিয়েই মাঠে নেমেছে। আমরা সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত ঘরে ফিরব না।

জনসভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, ময়মনসিংহ বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, সহসাংগঠনিক সম্পাদক শাহ ওয়ারেস আলী মামুন, যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য শেখ মুজিবুর রহমান ইকবাল, লায়লা বেগম প্রমুখ বক্তব্য দেন। রোডমার্চ কিশোরগঞ্জে পৌঁছার আগেই সমাবেশের অংশ নিতে জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে হাজার হাজার নেতা–কর্মী খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে যোগদান করেন। বিকেল তিনটার আগেই জেলার নেতাকর্মীদের দিয়ে সমাবেশ স্থলের অর্ধেক পূর্ণ হয়ে যায়। তারা রোডমার্চের লোকজনের জন্য দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে থাকেন। রাত আটটার দিকে বড়পুল এলাকা হয়ে রোডমার্চ কিশোরগঞ্জের লতিবাবাদে প্রবেশ করলে মাঠ ছাড়িয়ে আশপাশের রাস্তা লোকজনে পূর্ণ হয়ে যায়। সমাবেশে বিপুল সংখ্যক নেতা–কর্মীদের আগমনের কারণে ভৈরব-ময়মনসিংহ সড়কের লতিবাবাদ অংশে যানবাহন চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়।

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর