শনিবার, ৯ ডিসেম্বর, ২০২৩, ঢাকা

ভেসে গেল ৭ লাখ টাকার সেতু, ভোগান্তিতে দু’পারের মানুষ

জেলা প্রতিনিধি, নীলফামারী
প্রকাশিত: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৬:০১ পিএম

শেয়ার করুন:

ভেসে গেল ৭ লাখ টাকার সেতু, ভোগান্তিতে দু’পারের মানুষ

নীলফামারীতে টানা চারদিনের প্রবল বর্ষণে জলঢাকা উপজেলার চারালকাটা নদীর উপর নির্মিত তিন ইউনিয়নের প্রায় ৪০ হাজার বাসিন্দার যাতায়াতের একমাত্র কাঠের সেতু স্রোতের প্রবল ধাক্কায় ভেঙে গেছে।

রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) সকালে নদীর পানি বেড়ে গিয়ে স্রোতের ধাক্কায় ভেঙে যায় সেতুটি। দুই পাড়ের সঙ্গে যোগাযোগবিচ্ছিন্ন হয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে ওই গ্রামের মানুষ। সেতুটি নির্মাণের পর থেকেই ওই এলাকায় কাঠের সেতুটি দেখতে সেখানে ভিড় জমাচ্ছেছিলেন বিভিন্ন এলাকার মানুষ। ছবি তোলা ও আনন্দের উচ্ছ্বাস বইছিলো।


বিজ্ঞাপন


উপজেলার পূর্বাংশ দিয়ে বয়ে গেছে চাড়ালকাটা নদী। এ নদী জেলা থেকে বিভক্ত করেছে সদর উপজেলার রামনগর, জলঢাকা উপজেলার শিমুলবাড়ি এবং খুটামারা ইউনিয়ন। ফলে কখনো হাঁটুপানি আবার কখনো নৌকায় যাতায়াত করতে হতো তিন ইউনিয়নের প্রায় ৪০ হাজার বাসিন্দাকে। বার বার একটি সেতুর দাবি জানালেও দীর্ঘ বছরেও নির্মাণ হয়নি। তাই নিজেদের উদ্যোগে ৭ লাখ টাকা ব্যয়ে নদীর ওপর একটি সেতু নির্মাণ করেছিলেন এলাকাবাসী। তাদের স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে গেল, বর্তমানে এটিও ভেঙে যাওয়ায় যাতায়াত পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে।

দুলাল ইসলাম বলেন, ‘যাতায়াতের একমাত্র কাঠের সেতুটি ভেঙে গেছে, যার কারণে শহরসহ গ্রামীণ হাটবাজারের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে।’

ওই এলাকার আব্দুল করিম নামে আরেক বাসিন্দা বলেন, ‘শহরের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে পড়ায় আমরা খুবই বিপাকে পড়েছি। যত দিন না এখানে সেতু নির্মাণ হবে, তত দিন শহরে যেতে পারব না। তাই আমাদের যাতায়াতের দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানাচ্ছি।’

স্থানীয় করিম মিয়া বলেন, ‘চলাচলের একমাত্র সেতুটি ভেঙে পড়ায় অনেক কষ্ট হচ্ছে। আর এরকম সেতু আমরা গ্রামবাসীরা তৈরি করতে পারব কিনা সন্দেহ।’


বিজ্ঞাপন


সেতু নির্মাণ কমিটির সভাপতি মমিনুর রশিদ বলেন, কয়েকদিন থেকে বৃষ্টি হওয়ার কারণে

সকাল হতে নদীতে প্রবল স্রোত নেমে আসে, স্রোতের প্রবল ধাক্কায় আমাদের সেতুটি ভেঙে যায়।

জানা যায়, চারালকাটা নদীর ঘুঘুমারী নাওঘাটে ১৯৭১ সালে একটি বাঁশের সাঁকো ছিল। বন্যায় সাঁকোটি ভেঙে গেলে স্বাধীনতার ৫০ বছরেরও সেখানে নির্মাণ হয়নি কোন সাঁকো। এতে রামনগর, শিমুলবাড়ি ও খুটামারা ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রাম থেকে জেলা সদরে যেতে প্রায় ৩০ কিলোমিটার পথ ঘুরতে হতো স্থানীয়দের। ঘুরে না গেলে ঝুঁকি নিয়ে পার হতে হতো নদী। শিক্ষা, স্বাস্থ্য সেবা, সরকারি অফিস আদালতে যাতায়াতে পোহাতে হতো চরম দুর্ভোগ। কেউ অসুস্থ হলে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়ার ছিল না কোনো ব্যবস্থা।

আরও জানা গেছে, সম্প্রতি স্থানীয় সামাজিক সংগঠন ঘুঘুমারী সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার উদ্যোগ নিয়ে এলাকাবাসীর ৭ লাখ টাকার চাঁদায় রড সিমেন্টের পিলার ও কাঠ দিয়ে বানানো হয় দৃষ্টি নন্দন সেতুটি। ৫৩টি খুঁটির ওপর দাঁড়ানো লাল সাদা সবুজ রঙ আকর্ষণীয় করে তুলেছে নাওঘাট এলাকার সেতুটিকে।

নীলফামারীতে টানা কয়েকদিন যাবৎ মৌসুমী বর্ষণ হচ্ছে। একনাগাড়ে প্রবল বর্ষণ হওয়ায় জেলার বিভিন্ন নদী-নালা, খাল-বিল সহ নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে শুরু করেছে। এছাড়াও বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক রাস্তা-ঘাট তলিয়ে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।

প্রতিনিধি/   এজে

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর