গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ পৌর শহরে কচ্চপের গতিতে চলছে ড্রেন নির্মাণ কাজ। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব অবহেলার কারণে কয়েক বছর ধরেও নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করেনি। ফলে অল্প বৃষ্টিতে সড়কে জলাবদ্ধতায় চলাচলে চরম ভোগান্তির সৃষ্টি হয়েছে।
সম্প্রতি সুন্দরগঞ্জ পৌর শহরের কাঁঠালতলী মোড় হয়ে মীরগঞ্জ বাজার থেকে কন্নিপাড়া পর্যন্ত দেড় কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই নির্মাণাধীন ড্রেনটির কাজ বন্ধের দৃশ্য দেখা গেছে।
বিজ্ঞাপন
স্থানীয়রা জানান, ড্রেনের নির্মাণ কাজ শেষ না হওয়ায় সামন্য বৃষ্টি হলেই পৌর শহরে হাঁটুপানি জমে। এতে করে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে পৌরবাসী। কারণ একটাই ড্রেন আছে, ঢাকনা নেই। এমনকি পানি নিষ্কাশনও হয় না। ঢাকার প্রভাবশালী ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের গাফিলতির কারণে ড্রেনেজ ব্যবস্থার এই অবস্থা। বিশেষ করে স্কুলগামী শিশুদের অতিকষ্ট করে জামা কাপড় ভিজে প্রতিষ্ঠানে যাতায়াত করতে হচ্ছে।
জানা গেছে, ২০১৮ সালে ওই ড্রেন নির্মাণ কাজ শুরু করে। ঢাকাস্থ খোকন ট্রেডিং এজেন্সি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এই ড্রেন নির্মাণের কাজ করে। ১ কোটি ৪ লাখ টাকা ব্যয়ে ড্রেনটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। দায়সারা গোছের ড্রেন নির্মাণ করলেও আজ পর্যন্ত ড্রেনের ওপরে ঢাকানা দেওয়া হয়নি। ড্রেনে পানি নিষ্কাশনও বন্ধ রয়েছে। সে কারণে বৃষ্টি হলেই ওই এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। এ ছাড়া কলেজ মোড় হয়ে হাবলুর মোড় এবং মীরগঞ্জ বাজার থেকে বালাপাড়া পর্যন্ত ড্রেনেজ ব্যবস্থা অসম্পূর্ণ থাকায় পানি নিষ্কাশন হচ্ছে না। তাই পৌরবাসীকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দা ফরহাদ মিয়া জানান, বৃষ্টি হলেই এই এলাকায় হাঁটুপানি জমে যায়। ড্রেন দিয়ে পানি চলাচল করতে না পারায় তার বাড়ির ভেতর দিয়ে পানি গড়ে যাচ্ছে। ড্রেনের ওপরে ঢাকনা না থাকায় ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে পৌরবাসীকে।
মীরগঞ্জ বাজারের জুয়েল রানা জানান, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নিজের মনগড়া মতো ড্রেন নির্মাণ করেছেন। দীর্ঘ ৫ বছরেও ড্রেনের ৬০ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়নি। যার কারণে বর্ষাকালের জলাবদ্ধতা পৌরবাসীকে নাকাল করে তুলেছে।
বিজ্ঞাপন
এ বিষয়ে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি নিপুন সরকার বলেন, বর্ষার কারণে কাজ বন্ধ রয়েছে। আর কিছুদিন পরই চালু করা হবে।
পৌর ইঞ্জিনিয়ার আবুল বাশার জানান, পৌর শহরের বেশিভাগ ড্রেন জাইকা এবং জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর নির্মাণ করে থাকেন। দীঘদিন থেকে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর পৌর শহরের দেড় কিলোমিটার ড্রেন নির্মাণ করে আসছেন। ড্রেন সম্পূণভাবে নির্মাণ না হওয়ায় ড্রেন পরিষ্কার করা দূরহ ব্যাপার হয়ে পড়েছে। তারপরও জরুরি ভিত্তিতে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হবে।
উপজেলা জনস্বাস্থ্য উপ-সহকারী প্রকৌশলী খোকন রানা জানান, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান আগামী ২৮ দিনের মধ্যে ড্রেনের কাজ সম্পন্ন করার জন্য চুড়ান্ত তাগাদাপত্র দেওয়া হয়েছে। এরপরও যদি কাজ না করে তাহলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সুন্দরগঞ্জ পৌর মেয়র আবদুর রশিদ রেজা সরকার ডাবলু জানান, ড্রেনের কাজ সম্পন্ন করার জন্য বহুবার তাগাদা দেওয়া হয়েছে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাউকে তোয়াক্কা না করে নিজের মনগড়া মোতাবেক কাজ করে যাচ্ছে। একমাসের মধ্যে কাজ সম্পন্ন না করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রতিনিধি/এসএস