সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

বাউফলে ভুল চিকিৎসায় প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ

জেলা প্রতিনিধি: পটুয়াখালী
প্রকাশিত: ২৭ আগস্ট ২০২৩, ০৮:০০ পিএম

শেয়ার করুন:

বাউফলে ভুল চিকিৎসায় প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ

পটুয়াখালীর বাউফলে ভুল চিকিৎসায় লিমা আক্তার (২২) নামে এক প্রসূতি মায়ের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে।

দায় এড়াতে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেরে-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর চেষ্টা করেন ক্লিনিকের ওই ডাক্তার।


বিজ্ঞাপন


শনিবার (২৬ আগস্ট) সন্ধ্যা ৬টার দিকে উপজেলার কালিশুরী বাজারের মাজেদা মেমোরিয়াল ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত লিমা আক্তার উপজেলার ধুলিয়া ইউনিয়নের চাঁদকাঠি গ্রামের আইউব আলী শেখের মেয়ে।

নিহতের পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বছর দেড়েক আগে পার্শ্ববর্তী বাকেরগঞ্জ উপজেলার ফরিদপুর গ্রামের কামাল হোসেনের সঙ্গে লিমার বিয়ে হয়। শনিবার সকালে লিমার প্রসব ব্যাথা শুরু হলে তার পরিবার দুপুর ১২টার দিকে স্থানীয় মাজেদা মেমোরিয়াল ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভর্তি করেন। এসময় ক্লিনিকের কর্তব্যরত চিকিৎসক সিজারিয়ান অপারেশন করতে হবে বলেন।

নির্দিষ্ট টাকার চুক্তিতে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে লিমাকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হয়। সিজারে কন্যা সন্তান জন্ম দেন লিমা। দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হলেও লিমার জ্ঞান ফেরেনি। অপারেশন থিয়েটারেই মৃত্যু হয় লিমার। স্বজনরা বিষয়টি টের পেলে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ জানায় রোগী সুস্থ আছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল পাঠাতে হবে। ক্লিনিকের লোকজন তড়িঘড়ি করে লিমাকে অ্যাম্বুলেন্সে উঠিয়ে দেন। লিমার স্বজনেরা বরিশাল না নিয়ে বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন।


বিজ্ঞাপন


লিমার খালা জাকিয়া বেগম বলেন, সামান্য ব্যাথা নিয়ে লিমাকে মাজেদা ক্লিনিকে ভর্তি করি। ডাক্তার সিজার অপারেশন করার পরে লিমার জ্ঞান আসে না। পরে ডাক্তার বলেন, উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল নিয়ে যেতে হবে। অক্সিজেন দিলেই রোগী সুস্থ হয়ে যাবে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের সন্দেহ হওয়ায় আমরা বরিশাল না নিয়ে বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসি। পরে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডাক্তার বলেন, রোগী আরও দেড় ঘণ্টা আগেই মারা গিয়েছে।

বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক শোয়েব মাহমুদ জানান, লিমাকে মৃত অবস্থায় এখানে নিয়ে আসা হয়েছে। তিনি আনুমানিক এক দেড় ঘণ্টা আগেই মারা গেছেন।

আরও পড়ুনঃ শরীয়তপুরে মায়ের বিরুদ্ধে সন্তান হত্যার অভিযোগ

এ বিষয় জানতে ক্লিনিকের ওই ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তাকে পাওয়া যায়নি। তার মুঠোফোনে একাধিক বার কল দিলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।

উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা প্রশান্ত কুমার সাহা বলেন, তদন্ত করে সত্য ঘটনা উদঘাটন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা অভিযুক্ত ক্লিনিকটি বন্ধের সুপারিশ করব।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বশির গাজী জানান, মাজেদা ক্লিনিকে সিজারিয়ান অপারেশন করার সক্ষমতা আছে কি না দেখতে হবে। যে ডাক্তার অপারেশন করেছেন তার বিষয়ে খোঁজ নিয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

উল্লেখ্য, এর আগে ২০২০ সালে ভুল চিকিৎসায় একই ক্লিনিকে হ্যাপী বেগম (২৪) নামের এক প্রসূতির মৃত্যু হয়েছিল। পরে মোটা অংকের টাকার বিনিয়ম নিহতের পরিবারের সঙ্গে সমঝোতা করে মাজেদা ক্লিনিকি কতৃপক্ষ।

প্রতিনিধি/এসএস

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর