সোমবার, ১৪ এপ্রিল, ২০২৫, ঢাকা

স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় আসামির মৃত্যুদণ্ড

জেলা প্রতিনিধি: মুন্সিগঞ্জ
প্রকাশিত: ২৪ আগস্ট ২০২৩, ০৭:৩৫ পিএম

শেয়ার করুন:

স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় আসামির মৃত্যুদণ্ড

মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগরে দশম শ্রেণির স্কুলছাত্রী লায়লা আক্তার লিমুকে (১৭) ধর্ষণের পর চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পাঁচ বছর পর অভিযুক্ত খোকনকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে সাত বছরের কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকার অর্থদণ্ড দেওয়া হয়।

বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টায় মুন্সিগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক ফাইজুনন্নেছা এ রায় ঘোষণা করেন।


বিজ্ঞাপন


কোর্ট পুলিশের ইনচার্জ জামাল হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

দণ্ডপ্রাপ্ত খোকন সিরাজদিখান উপজেলার পাউশার এলাকার বাবুলের ছেলে ছেলে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

আদালত ও মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ২৮ আগস্ট শ্রীনগর উপজেলার বাড়ৈখালী এলাকায় বিকেলে পোশাক কেনাকাটার জন্য বাসা থেকে বের হন কিশোরী লায়লা আক্তার লিমু। তারপর থেকে নিখোঁজ থাকে সে।

পরে ৩০ আগস্ট স্থানীয় বাড়ৈখালী বাজারে ঘটনাস্থল থেকে কিছুটা দূরে চাঁন মার্কেটের পাশের ইছামতী নদীর পাড় থেকে তার বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করা হয়।


বিজ্ঞাপন


আরও পড়ুনঃ হবিগঞ্জে ব্যবসায়ী হত্যা মামলায় আসামির মৃত্যুদণ্ড

এ ঘটনায় অভিযুক্ত খোকনকে আসামি করে শ্রীনগর থানায় হত্যা মামলা করেন নিহতের বাবা আব্দুল মতিন। মামলার তদন্তে লিমুকে ধর্ষণের পর ঘটনা ধামাচাপা দিতে মরদেহ বস্তা বন্দী করে ফেলে দেওয়া হয়। আসামির দেওয়া ১৬৪ ধারার জবানবন্দিতে উঠে আছে হত্যার চাঞ্চল্যকর এমন তথ্য।

ঘটনা প্রায় ৩ বছর পরে মামলার বাদী মৃত্যুবরণ করে। নিহত স্কুলছাত্রী লিমার বড়ভাই রিপন মিয়াসহ মোট ২০ জন সাক্ষ্য এবং আসামির সাফাই সাক্ষ্য গ্রহণের পর এই রায় প্রদান করা হয়।

কোর্ট-পুলিশের ইনচার্জ জামাল হোসেন ঢাকা মেইলকে বলেন, মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত খোকন দুই সন্তানের জনক। সে গ্রেফতারের পর আদালতে নিজ মালিকানাধীন দর্জি দোকানে ধর্ষণের হত্যা করে লাশ গুম করার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে প্রদান করে।

শ্রীনগর উপজেলার বাড়ৈখালী বাজারে চাঁন সুপার মার্কেটের দ্বিতীয় তলায় দর্জি দোকানে ১৮ সালের ২৮ আগস্ট বিকালে মা হারা এই কিশোরী পোশাক বানাতে যায়। সে সময় আসামি খোকন সেখানে কৌশলে আটকে রেখে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধ করে হত্যা করে স্কুলছাত্রী লিমুর লাশ বস্তাবন্দি করে পাশের ইছামতি নদীতে ফেলে দিয়ে গুম করে।

ঘটনার তিন দিন পর লাশ উদ্ধারের হলে সন্দেহজনক খোকনকে আটক করে স্থানীয়রা পুলিশে সোপর্দ করে। তার দোকানে জমাটবদ্ধ রক্তও ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট আলামত পাওয়া যায়। ঘটনা সাক্ষী আর সে সব তথ্য প্রমাণ বিশ্লেষণ করে ঘটনার সত্যতা মেলায় আদালত অভিযুক্ত আসামিকে এ রায় প্রদান করে।

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট লাবলু মোল্লা বলেন, পাঁচ বছর পর রায় ঘোষণা করেছেন আদালত। অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় ৩০২ ধারায় আসামির মৃত্যুদণ্ড ও ২০১ ধারায় মরদেহ গুম করার সাত বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন বিচারক।

এদিকে রায়ে সন্তুষ্ট নিহতের পরিবার তাই দ্রুত রায় কার্যকরের দাবি। নিহতের বড় ভাই রিপনসহ অন্যান্য স্বজনদের।

আদালতে উপস্থিত নিহত স্কুলছাত্রী লিমার বড় ভাই রিপন মিয়া ও ফুফু নাসিরন বেগম এ রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমরা আসামির শাস্তির জন্য অপেক্ষা করছিলাম। আজ আদালত অভিযুক্ত খোকনকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন। আমরা চাই যেন দ্রুত রায়ের বাস্তবায়ন হয়।

তবে এ রায়ের আপত্তি জানিয়ে উচ্চ আদালতে আপিলের কথা জানিয়েছেন আসামি পক্ষে লোকজন। আসামির বাবা বাবুল মিয়া জানান, এই রায়ের ব্যাপারে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন তারা।

প্রতিনিধি/এসএস

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর