কুড়িগ্রামের রৌমারীতে ৩৫ ভূমিহীন হরিজন পরিবারের আবাসনের দাবিতে ঝাড়ু হাতে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করা হয়েছে। সোমবার (১৪ আগস্ট) দুপুর ২টার দিকে উপজেলার থানা মোড় থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি বের হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
পরে রৌমারী-ঢাকা মহাসড়কের উপজেলা গেটের সামনে এসে মানববন্ধন করেন তারা।
বিজ্ঞাপন
এতে বক্তব্য দেন শ্রীরাম বাসফোর, জ্যোতি রানী বাসফোর, জোনাকি রানী বাসফোর, কালাচান বাসফোর প্রমুখ।
তারা বলেন, সারাদেশে সরকার সব কিছুতেই উন্নয়ন করেছে। কিন্তু তাদের (হরিজন সম্প্রদায়) কোনো উন্নয়ন দূরের কথা, সরকারি সব সুযোগ-সুবিধা থেকে তারা বঞ্চিত। তাদের সন্তানদের স্কুলে ভর্তি নেওয়া হয় না। এনজিও ও ব্যাংক থেকেও দেওয়া হয় না কোনো ধরনের ঋণ। তারা কি বাংলাদেশের নাগরিক নয়- এমন প্রশ্ন করেন তারা।
তারা আরও বলেন, তাদের থাকার মতো ঘরবাড়ি নেই। বৃষ্টির পানি ঘরের একদিক দিয়ে ঢুকে অন্য দিক দিয়ে বের হয়ে যায়। দীর্ঘদিন থেকে রৌমারী সদর ইউনিয়নের থানার পাশে ও যাদুরচর ইউনিয়ন পরিষদের রাস্তার ধারে ৩৫টি হরিজন পরিবার অসহায়ভাবে মানবেতর জীবনযাপন করে আসছে। তাদের অভিযোগ, সরকারি ঘরের বরাদ্দ এলেও টাকার বিনিময়ে দেওয়া হয় ঘর। তারা টাকা দিতেও পারেন না, ঘরও পান না।
প্রশাসনের কাছে তাদের প্রশ্নু চিলমারী হরিজন সম্প্রদায়কে সরকারিভাবে ঘর দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তারা কেন সরকারি ঘর পাবেন না? প্রধানমন্ত্রীর কাছে সরকারি ঘরসহ অন্য সব সুযোগ-সুবিধার দাবি জানান তারা।
বিজ্ঞাপন
রৌমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাকের ভাষ্য, মাসিক সমন্বয় সভায় হরিজন সম্প্রদায়ের বাসস্থানের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। কিন্তু প্রশাসন শুধু আশ্বাস দেয়, ব্যবস্থা করে না।
রৌমারী সদর ইউনিয়ন পরিষদের ২ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য রবিউল ইসলাম রানার দাবি, এখানে যেসব হরিজন সম্প্রদায়ের লোক বসবাস করেন, তারা তার ওয়ার্ডের বাসিন্দা ও ভোটার।
রৌমারীর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাহিদদ হাসান খান বলেন, ঘরের জন্য হরিজন সম্প্রদায়ের লোকজন তার কাছে এসেছিলেন। একটি লিখিত আবেদন দিতে বলা হয়েছে তাদের।
হরিজন সম্প্রদায়ের লোকজন আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর পাওয়ার যোগ্য কিনা-এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ঘর পেতে হলে এখানকার ভোটার হতে হবে। তাহলে সরকারি খাস জমি বের করে তাদের বাসস্থানের ব্যবস্থা করা হবে। সম্প্রতি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর ১৭টি পরিবারকে দেওয়া হয়েছে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।
প্রতিনিধি/এইচই