সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

গোপনে নারীর গোসলের ভিডিও ধারণ করে ব্ল্যাকমেইল

জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ১১ আগস্ট ২০২৩, ১০:৩৩ এএম

শেয়ার করুন:

গোপনে নারীর গোসলের ভিডিও ধারণ করে ব্ল্যাকমেইল

নাটোরে গোসলের ভিডিও দিয়ে ব্লাকমেইল করে টানা দুই বছর এক নারীকে ধর্ষণের অভিযোগে উজ্জল মৃধা(৩২) নামে এক যুবককে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।

বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) বিকেলে নাটোর সদর আমলি আদালতের বিচারক মো. রওশন আলমের আদালতে আত্মসমর্পণ করলে উজ্জলকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত। 


বিজ্ঞাপন


এর আগে ভুক্তভোগী নারীর গোসলের ভিডিও ধারণ করে ব্লাকমেইলের মাধ্যমে টানা দুই বছর ধরে ধর্ষণের অভিযোগে নাটোর সদর থানায় মামলা করেন।

অভিযুক্ত উজ্জল মৃধা(৩২) নাটোর শহরের কানাইখালি এলাকার বিসমিল্লাহ হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। তিনি নলডাঙ্গা উপজেলার পূর্ব মাধনগর গ্রামের আক্তার হোসেনের ছেলে। 

ভুক্তভোগী নারীর অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ৪ বছর আগে এক রোগীকে ক্লিনিকে চিকিৎসা দিতে গিয়ে অভিযুক্ত উজ্জলের সাথে ওই নারীর পরিচয় হয়। 

তখন উজ্জল নির্দিষ্ট কমিশন প্রদানের শর্তে ভুক্তভোগী নারীকে ওই ক্লিনিকে রোগী পাঠাতে বলেন। এভাবে ধীরে ধীরে উজ্জলের সাথে সখ্যতা গড়ে ওঠে ভুক্তভোগী নারীর। এক পর্যায়ে উজ্জল ওই নারীকে ক্লিনিকের মাঠকর্মী হিসেবে কাজের প্রস্তাব দিলে তিনি রাজি হন। তখন থেকে হাসপাতালে চাকরির পাশাপাশি রোগী বেশি থাকলে বা কোনো রোগীর রাতে অপারেশন হলে ভুক্তভোগী নারী রাতে হাসপাতালে অবস্থান করতেন।


বিজ্ঞাপন


২০২১ সালের মাঝামাঝি রোগীর চাপে একদিন তিনি হাসপাতালে অবস্থান করেন। ওইদিন বাথরুমে গোসলের সময় উজ্জল গোপনে সেই ভিডিও ধারণ করেন। ভিডিওর কথা গোপন রেখে কথাবার্তার মাধ্যমে বন্ধুত্ব গড়ে তোলেন। এক পর্যায়ে অবৈধ শারীরিক সম্পর্কের প্রস্তাব দেন উজ্জল। রাজি না হওয়ায় গোপনে ধারণ করা গোসলের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেবার হুমকি দেন। ফোন থেকে গোসলের ভিডিওটি ডিলিট করার আশ্বাস দেন উজ্জল। বিশ্বাস করে ওই নারী বিকেলে হাসপাতালে কাজে যোগ দিতে গেলে হাসপাতালের ৬ তলায় উজ্জলের শোবার ঘরে ডেকে নিয়ে যান ও রাতভর তাকে ধর্ষণ করেন। এই ধর্ষণের ভিডিও গোপন ক্যামেরায় ধারণ করেন উজ্জল। পরে এই ভিডিও ছড়িয়ে দেবার হুমকি দিয়ে টানা দুই বছর উজ্জল তার শোবার ঘরে নিয়ে ওই নারীকে ধর্ষণ করেন। এই সময়ের মধ্যে ওই নারী গর্ভধারণ করলে উজ্জল জোরপূর্বক গর্ভপাত ঘটাতে বাধ্য করেন। সর্বশেষ গত ২জুন উজ্জল আবারও ওই নারীকে হাসপাতালে তার কক্ষে আটকে ধর্ষণ করে। পরে সইতে না পেরে ওইদিন সে নাটোর থানায় মামলা দায়ের করে।

ভুক্তভোগী নারী বলেন, গোপন ছবি ও গোসলের ভিডিও ধারণের পর ব্লাকমেইল করে উজ্জল শহরের একাধিক নারীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করেছেন। তার এই কাজে বিসমিল্লাহ হাসপাতালের অন্য পার্টনাররা জড়িত আছেন। তাদের সহযোগিতায় সে আমাকে দুই বছর ধরে ধর্ষণ করেছে। তার মোবাইল,ল্যাপটপ ও অন্য ডিভাইসে এসব ছবি ও ভিডিওর প্রমাণ পাওয়া যাবে। আমি এ ঘটনায় বিচার চাই।

নাটোর সদর থানার কর্মকর্তা (ওসি) নাসিম আহমেদ বলেন, ধর্ষণের অভিযোগ ভুক্তভোগী নারী থানায় মামলা দায়ের করে। পুলিশ গুরুত্বের সাথে মামলাটি নিয়েছে। আদালতের নির্দেশে অভিযুক্ত উজ্জলকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।

প্রতিনিধি/একেবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর