চাকরির প্রলোভনে অর্থ আত্মসাতের মামলায় শেরপুরের জমশেদ আলী মেমোরিয়াল ডিগ্রি কলেজের সেই অধ্যক্ষ শহিদুল ইসলাম রেজা (৫২) ও তার ৩ সহযোগীকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩ আগস্ট) দুপুরে ঢাকা মেইলকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কোর্ট পরিদর্শক খন্দকার শহিদুল হক।
বিজ্ঞাপন
কারাগারে পাঠানো অপর ৩ জন হলেন— একই কলেজের প্রভাষক আলফাজ উদ্দিন (৪২), আত্মীয় মো. শেখ জামাল (৪৩) ও মো. হযরত আলী (৪৫)।
কোর্ট পরিদর্শক খন্দকার শহিদুল হক জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরে শেরপুর সদর জি.আর আমলি আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন জানালে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফারিন ফারজানা উভয় পক্ষের শুনানি শেষে তাদের সকলকে জেলা কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
কোর্ট পরিদর্শক খন্দকার শহিদুল হক বলেন, আসামিরা উচ্চ আদালতের নির্দেশনা মোতাবেক আমলি আদালতে নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে জামিননামা দাখিল ও আত্মসমর্পণ না করে সেই নির্দেশনা অমান্য করেছেন। এ বিষয়টি বিবেচনায় নিয়েই তাদের কারাগাারে পাঠানো হয়েছে।
জমশেদ আলী মেমোরিয়াল ডিগ্রি কলেজের প্রতিষ্ঠাতা মিনহাজ উদ্দিন মিনাল বলেন, এই অধ্যক্ষ ও তার ৩ সহযোগীকে কারাগারে পাঠানোর ঘটনায় স্বস্তি ফিরে এসেছে আন্দোলরত অভিভাবক ও এলাকাবাসীর মাঝে।
বিজ্ঞাপন
আদালত সূত্রে জানা যায়, সদর উপজেলার লছমনপুর ঘিনাপাড়া গ্রামের মো. নুর ইসলামের ছেলে মো. মোতালেব মিয়াকে (২৩) জমশেদ আলী মেমোরিয়াল ডিগ্রি কলেজে ল্যাব এ্যাসিস্ট্যান্ট পদে চাকরি দেওয়ার প্রলোভনে অধ্যক্ষ শহিদুল ইসলাম রেজা প্রভাষক আলফাজ উদ্দিন ও আত্মীয়ের সহযোগিতায় ২০২২ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা নেন। পরবর্তী ৩ মাসের মধ্যে চাকরির ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিলেও চাকরি না হওয়ায় মোতালেব মিয়া চলতি বছরের ২৬ মে অধ্যক্ষের কাছে টাকা ফেরত দাবি করলে তিনি সহযোগীদের প্ররোচনায় তা দিযে অস্বীকার করেন। ওই ঘটনায় ৭ জুন মোতালেব মিয়া বাদী হয়ে অধ্যক্ষসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে শেরপুর সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এরপর আসামিরা ১৩ জুন উচ্চ আদালত থেকে ৬ সপ্তাহের অর্ন্তবর্তীকালীন জামিন লাভ করেন। কিন্তু উচ্চ আদালতের নির্দেশনা মোতাবেক আসামিরা আমলি আদালতে নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে জামিননামা দাখিল ও আত্মসমর্পণ করেনি। এরপর আজ দুপুরে শেরপুর সদর জি.আর আমলি আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন জানালে উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত তাদের সকলকে জেলা কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
উল্লেখ্য, অধ্যক্ষ শহিদুল ইসলাম রেজার বিরুদ্ধে দুর্নীতি, স্বাক্ষর জালিয়াতি, নিয়োগ বাণিজ্যসহ নানা অভিযোগ তুলে তার অপসারণের দাবিতে জমশেদ আলী মেমোরিয়াল ডিগ্রি কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ও কলেজ গভর্নিং বডির সাবেক সভাপতি মিনহাজ উদ্দিন মিনালের নেতৃত্বে দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির ব্যানারে দীর্ঘদিন ধরে লাগাতার আন্দোলন করে এলাকাবাসী।
টিবি

