ঢাকার সাভার ও ধামরাইয়ে বেড়েছে লোডশেডিং। এলাকাভেদে এদুটি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সোমবার দিবাগত রাত ১২ টা থেকে মঙ্গলবার (১ জুলাই) দুপুর ১২ পর্যন্ত ২ থেকে ৫ বার লোড শেডিংয়ের ভোগান্তির পোহাতে হয়েছে বলে জানা গেছে।
এছাড়া লোড শেডিং এর কারণে ব্যহত হচ্ছে শিল্প প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন। ডিজেল চালিত জেনারেটর দিয়ে উৎপাদন ব্যবস্থা সচল রাখতে অতিরিক্ত টাকা ব্যয় করতে হচ্ছে কারখানা কর্তৃপক্ষকে।
বিজ্ঞাপন
ঢাকা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-৩ এর আওতায় সাভার ও ধামরাইয়ে বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা বলছেন, গতকাল সোমবার রাত ১২ টা থেকে মঙ্গলবার (১ আগস্ট) দুপুর ১২ টা পর্যন্ত ১২ ঘণ্টায় তাদের ৪-৫ বার লোড শেডিংয়ের ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। প্রতিবারই ২০ মিনিট থেকে ২ ঘণ্টা পর্যন্ত বিদ্যুত ছিলো না। এলাকাভেদে ভিন্ন সময়ে লোডশেডিং মোকাবেলা করেছেন তাঁরা। সাভারের ছায়াবিথী এলাকায় রাতে কোনো লোডশেডিং না থাকলেও সকাল থেকে বিকেল ৬টা পর্যন্ত ৪ বার লোড শেডিংয়ের ভোগান্তিতে পরতে হয়েছে তাদের।
ছায়াবীথী এলাকার বাসিন্দা রুমানা আক্তার বলেন, রাতে লোডশেডিং না থাকলেও সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত চারবার লোডশেডিং ছিলো। প্রতিবার ২০-৩০ মিনিটের মতো বিদ্যুৎ ছিলো না। সাভারের আশুলিয়ার কাঠগড়া এলাকায় রাত সাড়ে ১১ টা থেকে সাড়ে ১২ টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ ছিলোনা বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। এছাড়া আজ সকাল থেকে বেলা ১২ টা পর্যন্ত ২ বার লোড শেডিং হয়। এরপর থেকে কিছুক্ষণ পরপরই বিদ্যুত চলে যাচ্ছে বলে জানান তাঁরা।
কলমা এলাকার ফার্মেসী ব্যবসায়ী তরিকুল ইসলাম বলেন, মঙ্গলবার (১ আগস্ট) সকাল ৬ টা থেকে দুপুর ১২ টা পর্যন্ত দুইবার বিদ্যুৎ ছিলোনা। প্রতিবার কমপক্ষে ২ ঘণ্টা পর বিদ্যুত এসেছে। এর আগে রাত সাড়ে ১১ টার দিকে চলে গিয়ে আসে রাত সাড়ে ১২ টায়। তবে দুপুরের পর থেকে একটু পরপরই লোডশেডিং হয়েছে।
ধামরাইয়ের উত্তর পাঠানটোলা এলাকার বাসিন্দা স্কুল শিক্ষক সিদ্দিকুর রহমান বলেন, এখানে রাত দিন সবসময়ই লোডশেডিং থাকে। প্রতিবারে দেড় থেকে দুইঘণ্টা অবধি বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকায় এই এলাকায় বসবাস করাটাই দুষ্কর। এভাবে চলতে থাকলে বাসা ছেড়ে অন্য এলাকায় ভাড়া উঠা ছাড়া কোন উপায় দেখছিনা।
বিজ্ঞাপন
ঢাকা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-৩ এর সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) মো. খাদেমুল ইসলাম বলেন, সোমবার (৩১ জুলাই) দিবাগত রাতে আমাদের লোড শেডিং ছিলো না। তবে মঙ্গলবার (১ আগস্ট) সকালে লোড শেডিং ছিলো। সকাল ৯ টার দিকে সবচেয়ে বেশি ঘাটতি ছিলো। এসময় ২৬৪ মেগাওয়াট প্রয়োজন ছিলো বিপরীতে পেয়েছি ১৯৮ মেগাওয়াট।
এদিকে লোডশেডিং এর কারণে শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোতে উৎপাদন ব্যহত হচ্ছে। বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান তাদের উৎপাদন কার্যক্রম সচল রাখতে ডিজেল চালিত জেনারেট ব্যবহার করছেন। এতে করে আর্থিকভাবে ক্ষতির সম্মূক্ষিণ হচ্ছেন প্রতিষ্ঠানের মালিকেরা।
আশুলিয়ার বিলটেস্ক নীটওয়্যার লিমিটেডের তত্ত্বাবধায়ক মো. জাকির হোসেন বলেন, গতকাল সকাল থেকেই কয়েকবার লোডশেডিং হয়েছে। এইসময়ে উৎপাদন কার্যক্রম সচল রাখতে জেনারেটর ব্যবহার করতে হয়েছে। এতে ডিজেল খরচ বাবদ অনেক টাকা খরচ করতে হয়েছে।
ঢাকা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এ কর্মকর্তারা জানান, সাভারের আশুলিয়া থানার বিভিন্ন এলাকা, সাভার ও গাজিপুরের কিছু অংশে এখান থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। প্রয়োজনের তুলনায় বিদ্যুত না পাওয়ায় বিভিন্ন এলাকায় লোডশেডিং দিতে হচ্ছে তাঁদের।
ঢাকা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি- ১ এর সহকারী মহাব্যবস্থাপক-এজিএম (অপারেশন অ্যান্ড মেইনটেন্যান্স) সৈকত বড়ুয়া বলেন, গতকাল বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন পরিমানে বিদ্যুতের ঘাটতি ছিলো। ঘাটতি থাকায় এই সময়ে বাধ্য হয়েই আমাদের বিভিন্ন এলাকায় লোড শেডিং দিতে হয়েছে। গতকাল (মঙ্গলবার) সকাল ৯টায় সবচেয়ে বেশি ৯৮ মেগাওয়াট বিদ্যুতের ঘাটতি ছিলো। এসময় প্রয়োজন ছিলো ৩২৩ মেগাওয়াট বিপরীতে পেয়েছি ২২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুত।
প্রতিনিধি/একেবি

