যশোর বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিকমানে উন্নীত করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী। তিনি বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এভিয়েশন শিল্পে নীরব বিপ্লব সাধিত হয়েছে। যশোর, সৈয়দপুরসহ দেশের সাতটি বিমানবন্দর আন্তর্জাতিক মানের করার লক্ষে সক্ষমতা বাড়ানোর কাজ চলছে। পর্যায়ক্রমে এসব বিমানবন্দরে আন্তর্জাতিক বিমান উঠানামা করবে।
সোমবার (৩১ জুলাই) যশোর বিমানবন্দরে নবনির্মিত আধুনিক টার্মিনাল ভবন উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
বিজ্ঞাপন
বিমান প্রতিমন্ত্রী বলেন, 'শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে দেশের এভিয়েশন শিল্প আন্তর্জাতিক মানের হয়েছে। তার নির্দেশে দেশের সব বিমারবন্দরে যাত্রীসেবার মান উন্নয়ন করা হচ্ছে। শুধু মান উন্নয়ন নয়; নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হচ্ছে। আকাশপথ নিরাপদ রাখতে নিজস্ব পরিচালনায় দেশের সব বিমানবন্দরে উন্নতমানের রাডার স্থাপন করা হচ্ছে।’
দেশের প্রাচীনতম যশোর বিমানবন্দর আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে উন্নীতকরণ প্রসঙ্গে প্রতিমন্ত্রী বলেন, যশোর ঐতিহ্যেবাহী জেলা। এখানে অনেক কিছু আমাদের করার দরকার। অনেক আগেই শেখ হাসিনা আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন। যশোরের পর্যটনশিল্প হাতছানি দিচ্ছে। মাইকেল মধুসূদন দত্তের বাড়ি, গদখালি ফুলের রাজ্য, ঐতিহ্যবাহী কৃষি পণ্যের জেলা। এখান থেকে ফুল-ফল কার্গো বিমানের মাধ্যমে বিদেশে রফতানি করে বৈদ্যশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, সেই ধারাবাহিকতায় যশোর বিমানবন্দরে ৩২ কোটি ৮৯ লাখ টাকা ব্যয়ে নতুন টার্মিনাল ভবন আজ উদ্বোধন করা হয়েছে। এর ফলে এই অঞ্চলের জনগণ বিমানবন্দর ব্যবহার করে বিমানযাত্রায় আরও উন্নত ও আধুনিক সেবা পাবেন। এই অঞ্চলের পর্যটকসহ অন্যান্য অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড প্রসারে ভূমিকা রাখবে।
মাহবুব আলী জানান, যশোর বিমানবন্দর আন্তর্জাতিককরণ প্রক্রিয়া চলমান। ইতোমধ্যে সাড়ে তিনশ কোটি টাকা ব্যয়ে যশোরে রানওয়ে শক্তি বৃদ্ধির জন্য প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। যাতে সুপরিসরে বিমান যশোর রানওয়ে উঠানামা করতে পারে। এগুলোই আন্তর্জাতিক মান উন্নয়নের পূর্বশর্ত।
বিজ্ঞাপন
প্রতিমন্ত্রী বলেন, যশোরকে যাতে দ্রুত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে রূপ দেওয়া যায় সেই লক্ষে আমরা কাজ করছি। শুধু যশোর নয়, দেশের সব বিমানবন্দর আন্তর্জাতিককরণে কাজ করছে সরকার। যশোরের পাশাপাশি রাজশাহী বিমানবন্দরে ২৮০ কোটি টাকা ব্যয়ে আধুনিক করার প্রকল্প হাতে নেওয়া হচ্ছে।

এর আগে উদ্বোধন অনুষ্ঠানে যশোরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উন্নীত করার প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য। তিনি বলেন, যশোরে সবজি, ফুল মাছ পর্যটনে সম্ভাবনার জায়গা। এখানে স্থল ও নৌবন্দর রয়েছে। যশোরে যদি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উন্নীত হয় তাহলে সরকার হাজার হাজার কোটি টাকা বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করবে সরকার। এই অঞ্চলের চাষি উদ্যোক্তারা তাদের পণ্যে ফসলের ন্যায্যমূল্য পাবে। ভারতের কলকাতা বিমানবন্দর যশোরের কাছে। বাংলাদেশের বিমান কলকাতার বন্দরে প্রচণ্ড চাপ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এমনকি তাদের সক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে। ফলে যশোর-কলকাতা রুটে বিমান চালু হলে এটা শুধু যশোরবাসী উপকৃত হবে না; দেশবাসীর সময় ও অর্থ দুটোই সাশ্রয় হবে।
বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (সিএএবি) সভাপতি এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমানের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন যশোর-৩ আসনের সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ, যশোর-২ আসনের সংসদ সদস্য মেজর জেনারেল (অব.) নাসির উদ্দিন, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোকাম্মেল হোসেন, বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (সিএএবি) প্রধান প্রকৌশলী আব্দুল মালেক।
অনুষ্ঠানে যশোর সেনাবাহিনী, বিমান বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রতিনিধি/জেবি

