রাজশাহীর বাগমারায় ঘুমন্ত অবস্থায় আগুনে পুড়ে ফরিদা ইয়াসমিন (৪২) নামের এক স্কুল শিক্ষিকা নিহত হয়েছেন। গভীর রাতে রান্না ঘরের খড়ি থেকে আগুনের সূত্রপাত। শিক্ষিকার দুই সন্তান মৃত্যুশয্যায় কাতরাচ্ছেন।
বৃহস্পতিবার (২৯ জুন) দিনগত রাত ২টার দিকে বাগমারা উপজেলার মাদারীগঞ্জ বাজারে আশা সিনেমা হল সংলগ্ন এলাকায় এ মর্মান্তিক আগুনের ঘটনা ঘটে।
বিজ্ঞাপন
আগুনে পুড়ে নিহত ফরিদা ইয়াসমিন দুর্গাপুর উপজেলার শিবপুর বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা। তার স্বামী এজাজুল বাশার স্বপনের দুর্গাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক্স-রে বিশেষজ্ঞ।
তাদের দুই সন্তানের একজন ডা. রাশিদুল বাসার (২৫) রাজশাহীর বরেন্দ্র মেডিকেল কলেজ থেকে সম্প্রতি এমবিবিএস শেষ করেছেন। অন্যজন রাফিউল ইসলাম (১৬) এবারের এইচএসসি পরিক্ষার্থী।
গুরুতর অবস্থায় দু’ভাইকেই প্রথমে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের ঢাকায় পাঠানো হয়।
রামেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের বিভাগীয় প্রধান ডা. আফরোজা নাজনীন আশা এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বিজ্ঞাপন
জানা যায়, গতকাল (বৃহস্পতিবার) পবিত্র ঈদুল আজহার দিন পশু কোরবানি শেষে রাতে খাওয়া-দাওয়া শেষ করেন। রাতে খাওয়া শেষে এজাজুল বাশার স্বপন রাজশাহী নগরীর বাসায় চলে আসেন। আর শিক্ষিকা মা ও সন্তানরা আলাদা আলাদা কক্ষে ঘুমিয়ে পড়েন। রাতের এক পর্যায়ে রান্না ঘর থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়।
মুহূর্তের মধ্যে সেই আগুন পুরো বাসায় ছড়িয়ে পড়ে। ফলে ঘুমন্ত অবস্থাতেই শিক্ষিকা মা ফরিদা ইয়াসমিনের দগ্ধ লাশ উদ্ধার করা হয়। তবে পাশের কক্ষে থাকা দু’ভাই শরীরে আগুন লাগলে বাসার ছাদে উঠে নিচে লাফ দিয়ে বাঁচার চেষ্টা করেন। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেন।
ডা. আফরোজা নাজনীন আশা বলেন, রাশিদুলের ২২ শতাংশ পুড়ে গেছে এবং তার ছোট ভাই রাফিউল বাসার ৫০ শতাংশ পুড়টে গেছে। তাদের দু’জনেরই শ্বাসনালী পুড়ে গেছে। আর শ্বাসনালী পুড়ে গেলে সে রোগী রিকভার করা কঠিন হয়ে পড়ে। এ কারণে এখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে দু’জনকেই ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। দু’জনেরই অবস্থা গুরুতর।
বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রবিউল ইসলাম ফায়ার সার্ভিসের বরাদ দিয়ে বলেন, ধারণা করা হচ্ছে, রান্নাঘর থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছিল। তারপরও বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করা হবে।
প্রতিনিধি/এসএস