সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

বরিশালে ক্রেতা শূন্য পশুর হাট

অনিকেত মাসুদ
প্রকাশিত: ২৫ জুন ২০২৩, ০৮:৫১ পিএম

শেয়ার করুন:

বরিশালে ক্রেতা শূন্য পশুর হাট

কয়েক দিন পর পবিত্র ঈদ আজহা। কিন্তু রোববার পর্যন্ত বরিশাল নগরীর কাগাশুরা, রূপাতলী, চরমোনাই, বানারীপাড়ার গুয়াচিত্রাসহ কয়েকটি হাটে কিছুটা ক্রেতা সমাগম দেখা গেছে। তবে অধিকাংশ হাটে কোরবানির পশু ও ক্রেতা শুণ্য ছিলো। যে কটা গরু উঠেছে তার দামও গত বছরের চেয়ে অনেক বেশি। এ বছর খাবার, পরিবহণ খরচসহ অন্যান্য ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় কোরবানির পশুর দাম বেড়েছে। ফলে সাধ আর সাধ্যের ফাঁরাকের কারণে অনেকেই বাধ্য হয়ে ছোট বা মাঝারি সাইজের গরু খুঁজছেন। এসব গরুর চাহিদা বেশি থাকায় বড় গরুর চেয়ে দামও বেশি। তবে অধিকাংশ হাটে এক লাখের নিচে গরু খুঁজে পাওয়া ছিলো দুস্কর। দাম বেশি থাকার কারনে বিক্রি কম হওয়ায় দুশ্চিন্তায় রয়েছেন গরু ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, দুই এক দিনের মধ্যে হাটে গরুর সংখ্যা বাড়বে। পাশাপাশি ক্রেতা সমাগমও হবে।  

সরেজমিনে দেখা যায়, বরিশালে এবারে মোট ৬৩টি কোরবানির পশুর হাট বসেছে। এবার খামারিদের কাছেও প্রস্তুত রয়েছে ১ লাখ ১০ হাজার গরু। আলমডাঙ্গা, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুর থেকে গরু আসছে এসব হাটে। এর মধ্যে নগরীর বাঘিয়া ঝাউতলা হাটে ৩৫-৪০ গরু উঠেছে। ক্রেতা না থাকায় এসব গরুর পরিচর্যা করে সময় কাটাতে দেখা গেছে গরু ব্যবসায়ীদের। এই হাটে কুষ্টিয়া ও চুয়াডাঙ্গা থেকে বেশি গরু এসেছে। শনিবার মাত্র ১৫-১৬টি গরু বিক্রি করেছে এই বলে জানিয়েছে ইজারাদার। তবে চাঁদ রাত পর্যন্ত চলা এই হাটে কয়েক দিনের মধ্যেই পশুর সংখ্যা বাড়বে। একই অবস্থা বরিশালের মোট ৬৩টি কোরবানির পশুর হাটের অধিকাংশের। এসব হাটের অধিকাংশে রোববার পর্যন্ত প্রায় ক্রেতা শূন্য ছিল। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে পাইকাররা গরু ও ছাগল নিয়ে এসব হাটে হাজির হলেও চাহিদা অনুযায়ী ক্রেতা নেই। যারা আসছেন তারাও ছোট বা মাঝারি আকারের গরু খুঁজছেন। এবছর হাটে গৃহস্থদের পশু কম উঠেছে। ফলে গত বছর যে সাইজের গরুর দাম নেওয়া হয়েছিল সর্বোচ্চ ১ লাখ ১০ হাজার টাকা। এবার সেই গরুর দাম হাঁকা হচ্ছে ১ লাখ ৮৫ থেকে ৯০ হাজার টাকা। সাধারণ সাইজের যে গরু গত বছরও ৬৫-৭০ হাজার টাকায় মিলেছে, এবার তার দাম ৯০-৯৫ হাজার টাকা। আর তাই হাটে অসংখ্য গরু আসার পরও বেচাকেনা নেই।


বিজ্ঞাপন


ক্রেতা আলামিন জানান, হাটে অনেক গরু, তবে দাম অনেক বেশি। পশু কিনতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। ক্ষণে ক্ষণে নানা অজুহাতে বাড়ানো হচ্ছে কোরবানির গরুর দাম।

ক্রেতা মোতালেব হাওলাদার জানান, তিনটি হাট ঘুরেও সাধ্যের মধ্যে গরু খুঁজে পাইনি। হাটে গরুর সংখ্যাও কম, দাম অনেক বেশি। তাই স্বাভাবিকভাবে ক্রেতাও কম। দুই এক দিন পর বোঝা যাবে পশুর হাটের সার্বিক অবস্থা কেমন।

গরু ব্যবসায়ী আতাহার উদ্দিন জানান, গো-খাদ্যের দাম অনেক বেড়েছে। গরু লালন-পালনে খরচ বেশি হচ্ছে। পরিবহণ ব্যয় অস্বাভাবিক বেড়েছে। ন্যায্য দাম না পেলে আমাদের লোকসান হবে। তবে গরুর দাম একটু বেশি হওয়ায় গত বছরের তুলনায় বিক্রি কম। হাটে এক লাখে ২ হাজার টাকা খাজনা দিতে হয় বলে জানান তিনি।

চুয়াডাঙ্গা থেকে ৫টি গরু নিয়ে আসা ব্যাপারী আরাফাত মিয়া জানান, একটি মাত্র গরু বিক্রি করেছি।  গতবছরের চেয়ে দাম অনেক বেশি তাই ক্রেতা কম। খাবারের দাম বৃদ্ধিসহ অন্যান্য খরচ বেড়ে যাওয়ায় গরুর দাম বেড়েছে।


বিজ্ঞাপন


বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার সাইফুল ইসলাম বলেন, ক্রেতাদের কাছ থেকে সরকার বা ইজারা কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নির্ধারিত খাজনার বেশি আদায় করা যাবে না। সেই সঙ্গে পশুর হাটে যেন কোনো প্রকার দালাল না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখা হচ্ছে। পশুর হাট যেন রাস্তার সঙ্গে সংযুক্ত হয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থার কোনো প্রকার বিঘ্ন না ঘটায় সে বিষয়েও আমরা সজাগ আছি। আর্থিক লেনদেনের সময় প্রয়োজনে পুলিশের সহযোগিতা নিতে পারেন যে কেউ। এছাড়াও ইজারাদারদের নিজস্ব বিদ্যুৎ ব্যবস্থা, স্বেচ্ছাসেবক ও নৈশ প্রহরী রাখাসহ পশুর হাটে অবশ্যই সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করে নিরাপত্তা বাড়ানোর বিষয়ে বলা হয়েছে।

এছাড়া কোরবানির বর্জ্য অপসারণে  তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় থেকে প্রত্যেক হাটের সামনে মাইকিং, লিফলেট বিতরণ করতে দেখা গেছে।

প্রতিনিধি/একেবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর