শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

‘ছেলের পাইলট হওয়াটা যেন এখনো স্বপ্নের মতো’

মোস্তফা ইমরুল কায়েস
প্রকাশিত: ২৮ মে ২০২৩, ১১:১৭ পিএম

শেয়ার করুন:

‘ছেলের পাইলট হওয়াটা যেন এখনো স্বপ্নের মতো’
ছবি: ঢাকা মেইল।

‘চেয়েছিলাম ছেলে বড় হয়ে নিজের স্বপ্ন পূরণ করবে। তবে সে যে মনের ভেতর পাইলট হওয়ার স্বপ্ন পুষে রেখেছিল, তা পূরণের সামর্থ্য ছিল না আমাদের। ভাগ্যক্রমে তার পাইলট হওয়ার পথ খুলে দেয় ইউএস-বাংলা। আর মাত্র ১০-১২ মাস পর পুরোপুরিভাবে পাইলটের ক্যারিয়ার শুরু হবে ছেলের। ছেলে প্লেন নিয়ে আকাশে উড়বে। কোনো টাকা খরচ না করে মায়ের কাছে ছেলের পাইলট হওয়াটা যেন এখনো স্বপ্নের মতো লাগছে।’

রোববার (২৮ মে) পড়ন্ত বিকেলে রাজধানীর হোটেল প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁওয়ের হলরুমে বসে এভাবেই ছেলের ট্রেইনি পাইলট হয়ে ওঠার নেপথ্যের গল্প শোনাচ্ছিলেন মা শামীমা ইসলাম।


বিজ্ঞাপন


ঢাকা মেইলকে কথাগুলো বলার সময় শামীমা ইসলামের চোখেমুখে যেন আনন্দের ঝলকানি ফুটে উঠছিল। একই সময় নিশ্চুপ হয়ে পাশে দাঁড়িয়ে মায়ের কথাগুলো শুনছিলেন ট্রেইনি পাইলট মাহিদ ইসলাম।

US-Banglaশামীমা ইসলাম বলেন, ইউএস-বাংলা সাপোর্ট না দিলে আমার ছেলে পাইলট হতে পারত না। তারা আমাদের এই সুযোগটা করে দিয়েছে বলে আজ আমার ছেলে ট্রেইনি পাইলট হয়ে উচ্চতর প্রশিক্ষণের জন্য আমেরিকার ফ্লোরিডায় যাচ্ছে।

শামীমা জানান, পাইলট প্রশিক্ষণের জন্য ইউএস-বাংলার পক্ষ থেকে দেওয়া সার্কুলার দেখে মাহিদ আমার কাছে এসে বিষয়টি জানায়। পরে সে আবেদন করবে কি না জানতে চাইলে বলেছিলাম- ‘আবেদন করো। যা থাকে কপালে।’ আলহামদুলিল্লাহ, তাদের পরীক্ষা নিয়েছে। অনেক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। অনেকগুলো পরীক্ষার মধ্যদিয়ে আমার ছেলে আজ ট্রেইনি পাইলট হওয়ার আজকের এই অবস্থানে আসতে পেরেছে।


বিজ্ঞাপন


US-Banglaঢাকা মেইলকে শামীমা বলেন, ছেলে পাইলট হবে কখনো কল্পনা করিনি। তবে সবসময় চেয়েছিলাম ছেলে সবার আগে ভালো মানুষ হবে। কোনো কিছু হওয়া-না হওয়ার স্বপ্ন তার ওপরই ছেড়ে দিয়েছিলাম। ছেলে যখন সার্কুলার দেখে পাইলট হওয়ার স্বপ্নের কথা জানিয়েছিল তাতেও সাড়া দিয়েছিলাম। কারণ, আমাদের সামর্থ্য না থাকলেও সব খরচ তো বহন করবে ইউএস-বাংলা। এ জন্য নিশ্চিন্ত ছিলাম।

তবে আমি সবসময় সে (ছেলে মাহিদ ইসলাম) কি হতে চায়, সেটা তার ওপরই ছেড়ে দিয়েছিলাম। ও যা ভালো বুঝবে আর মহান আল্লাহ ওর জন্য যেটা লিখে রেখেছেন সেটাই হবে- এটাই সবসময় ভাবতাম।

মা শামীমা ইসলামের কথা শেষ হলে আমেরিকার ফ্লোরিডায় ইপিক একাডেমীতে পাইলটের উচ্চতর প্রশিক্ষণের জন্য যাওয়ার অপেক্ষায় থাকা ট্রেইনি পাইলট মাহিদ ইসলাম ঢাকা মেইলকে জানান, কুমিল্লা ক্যাডেট কলেজ থেকে সবেমাত্র এইচএসসি পাশ করেছেন তিনি। পরে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য পরীক্ষায়ও দিচ্ছিলেন। এর মাঝেই সার্কুলারের মাধ্যমে জানতে পারেন ইউএস-বাংলা পাইলট তৈরি করবে। অবশ্য সার্কুলার দেখেও তখন মনে ততটা জোর ছিল না যে তিনি সত্যিই পাইলট হতে পারবেন। তবুও মনে দ্বিধাদ্বন্দ্ব নিয়েই আবেদন করেন।

US-Banglaকলেজে পড়াকালীন পাইলট হওয়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন জানিয়ে মাহিদ বলেন, কলেজের প্রিন্সিপাল স্যার বারবার মোটিভেট করতেন যে, এমন কিছু করতে হবে যেটা আন্তর্জাতিকভাবে সকলে স্বীকৃতি দেয় এবং বাংলাদেশকে যাতে ভালোভাবে রিপ্রেজেন্ট করা যায়। আমি মনে করি, এ ক্ষেত্রে পাইলট জবটা গুড অপশন। এর জন্য আড়াই মাস পরীক্ষা হয়। এছাড়াও আরও নানা পরীক্ষার মধ্যদিয়ে ট্রেইনি সেশন শেষ হয়।

মাহিদ ইসলাম বলেন, ইউএস-বাংলা এমন পাইলট হওয়ার সুযোগ না দিলে হয়তো অন্য পেশা বেছে নিতে হতো। পাইলট হওয়ার জন্য যে খরচ তা কোনো মধ্যবিত্ত পরিবারের পক্ষে বহন করা সম্ভব না। আমরা স্বাবলম্বী কিন্তু এতবেশি না, যতটা একজন পাইলট হওয়ার জন্য খরচ বহন করা প্রয়োজন। এই কাজটিই করেছে ইউএস-বাংলা। এটা আমাদের ২১ জনের একটা স্বপ্ন পূরণ।

এমআইকে/আইএইচ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর