শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

বিমানের ঢাকা-নারিতা ফ্লাইট চালু হচ্ছে সেপ্টেম্বরে

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২১ মে ২০২৩, ০৪:৫১ পিএম

শেয়ার করুন:

বিমানের ঢাকা-নারিতা ফ্লাইট চালু হচ্ছে সেপ্টেম্বরে

আগামী সেপ্টেম্বর মাস থেকে ঢাকা টু জাপানের টোকিওর নারিতা রুটে বিমানের ফ্লাইট চালু হবে বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাটির এমডি ও সিইও শফিউল আজিম।

রোববার (২১ মে) বিকেলে রাজধানীর কুর্মিটোলায় বলাকা ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই ঘোষণা দেন।


বিজ্ঞাপন


বিমানের এমডি জানান, জাপানের নারিতায় বাংলাদেশ থেকে ফ্লাইট চলাচলের বিষয়টি চূড়ান্ত হয়েছে। সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে এটি চালু হবে। চলতি মাসে এ সংক্রান্ত একটি টিম জাপানে যাবে।

এর আগে গত ২৬ এপ্রিল বাংলাদেশ ও জাপানের প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে টোকিওতে যে আটটি বিষয়ে চুক্তি ও সমঝোতা স্মারকে সই হয় এর মধ্যে ঢাকার হজরত শাহজালাল রহ. আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে জাপানের রাজধানী টোকিওর নারিতা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের মধ্যে চলতি বছরই ফ্লাইট চালুর সিদ্ধান্তের বিষয়টি ছিল।

ফ্লাইট চালু প্রসঙ্গে সেদিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, চলতি বছরেই ঢাকা-নারিতা সরাসরি বিমান চলাচল শুরু হতে যাচ্ছে। চলতি বছরের মধ্যে ঢাকা-নারিতা সরাসরি বিমান চলাচলের ঘোষণা করতে পেরে আমরা খুশি।

ঢাকা থেকে সরাসরি আকাশপথে নারিতা যেতে সময় লাগে প্রায় সাড়ে আট ঘণ্টা। এ‌ই ফ্লাইট চালু হ‌লে ঢাকা থে‌কে জাপানের না‌রিতা বিমানবন্দরে যেতে ছয় ঘণ্টা সময় লাগ‌বে। এতে দুই দেশের মধ্যে যোগাযোগ আরও সহজ হবে বলে মনে করা হচ্ছে।


বিজ্ঞাপন


জাপানের নারিতায় ফ্লাইট চালু করতে কয়েক বছর ধরেই চেষ্টা চালিয়ে আসছিল বিমান। ফ্লাইট শুরুর বিষয়ে জাপান সরকারের অনুমোদনও বেশ আগেই পায় রাষ্ট্রীয় বিমান সংস্থাটি। প্রধানমন্ত্রীর জাপান সফর বিলম্বিত হওয়ায় এই ফ্লাইট চালুর বিষয়টিও বিলম্বিত হয়।

পূর্ব দিকে নেটওয়ার্ক বিস্তৃত করতে চায় বিমান

সংবাদ সম্মেলনে শফিউল আজিম বলেন, জাপান আমাদের অত্যন্ত বিশ্বস্ত ও পুরনো বন্ধু। নারিতার সাথে আমাদের আগেও বিমান যোগাযোগ ছিল। এই যে আমাদের আর্থিকভাবে আমরা লাভবান হবো কি না এটার সাথে আমাদের উন্নয়নও সম্পর্ক রয়েছে। এতে আন্তঃরাষ্ট্রীয় সম্পর্কও বৃদ্ধি পাচ্ছে। এশিয়াতে আমাদের একটা জায়গা করে নিতে হবে। অবশ্যই এই বিষয়ের সাথে আমাদের আর্থিক বিষয়টা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি নিয়ে আমরা দীর্ঘদিন থেকে কাজ করছি।

এমডি বলেন, আমরা আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে নারিতায় ফ্লাইট চালু করব। আগামী জুন থেকে আমাদের টিকেট বিক্রি শুরু হয়ে যাবে। অ্যাকশন প্লানের জন্য মার্কেটিং অব ভিউ থেকে আমরা কিন্তু দুই পক্ষই জাপান ও বাংলাদেশ গত সপ্তাহে বসে একটা জায়গায় এসেছি।

নারিতা রুটে ফ্লাইট চালু ও সম্ভাবনার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, গত সপ্তাহেও জাপানিজরা বাংলাদেশে এসেছিল। তারা দুই দিন এখানে ছিলেন। তাদের কাছে বিমান সাহায্য নিচ্ছে। বাংলাদেশ থেকে সরাসরি একটা ফ্লাইট করার পরিকল্পনাও করা হচ্ছে। সরাসরি ফ্লাইটের কিন্তু একটা ব্র্যান্ডিং রয়েছে। আপনারা জানেন, আমরা যখন টরন্টো ফ্লাইট শুরু করেছি তখন কিন্তু অনেকেই সমালোচনা করেছিলেন। সেই টরন্টো ফ্লাইট রুট এখন সবচেয়ে পপুলার।

BBB

এসময় তিনি জানান, মূলত জাপানে ফ্লাইট চালু হচ্ছে পূর্ব দিকে নেটওয়ার্ক বিস্তৃতির জন্য। পর্যায়ক্রমে নেটওয়ার্ক বিস্তৃতি করে পশ্চিমে আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়াতেও বিস্তৃতি চায় বিমান। এজন্য বিমান নারিতা থেকে ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া ও সিডনি রুট নিয়ে কাজ করছে। এক লাখ ৪০ হাজার নেপানি জাপানে আছেন। যারা নিয়মিত যাওয়া-আসা করেন। আবার যারা জাপানিজ তারাও নেপালে যাওয়া-আসা করেন। নারিতায় ফ্লাইট চালু হলে কলকাতা, দিল্লি থেকে জাপান যাওয়ার জন্য ‍বিমান যাত্রী পাবে বলে আশাবাদী তিনি। তবে এক্ষেত্রে অন্যান্য এয়ারলাইন্সগুলোর সাথে শেয়ারিং পদ্ধতিতে বিমানকে যাতে লাভবান করা যায় সে চিন্তার কথাও জানান সিইও।

‘স্টাডি করেই এয়ারবাস কেনার সিদ্ধান্ত’

এয়ারবাস কেনার চুক্তি ও সিদ্ধান্তে বিমান কতটুকু লাভবান হবে-এমন প্রশ্নে  তিনি বলেন, পৃথিবীর দুটি কোম্পানি এয়ারবাস ও বোয়িং। আমেরিকা কিন্তু এয়ারবাস চালাচ্ছে। তাই এটি আমাদের জাতীয় সামর্থে্যর বিষয় এবং বিমানের জন্য আস্থার বিষয় যে, এয়ারবাসের মতো একটি কোম্পানি এগিয়ে প্রপোজাল নিয়ে এসেছে। এটা কিন্তু পজিটিভ বিষয়। তার মানে তারা নিশ্চয় আমাদের মাঝে সম্ভাবনা দেখেছে। তারা বলেছে, মার্কেট ডিমান্ড যেমন রয়েছে, এখানে যে এভিয়েশনের গ্রোথ হচ্ছে, সবকিছু স্টাডি করেই তারা এসেছে। এটা একটা লং টার্ম পার্টনারশিপ। তারই অংশ হলো ম্যাসেঞ্জার বিমান ও কার্গো বিমান এবং এটি ন্যূনতম ১০ বছরের পরিকল্পনায় এসেছে। প্রাথমিকভাবে আমরা সম্মত হয়েছি।

বিমানের এয়ারবাস কেনার সিদ্ধান্তে ভালোভাবে  স্টাডি করে মাঠে নামা হয়েছে এবং বিমান আর্থিকভাবে লাভবান হবে বলে মনে করেন তিনি। টেকনিক্যাল, আর্থিক ও মার্কেটিং সকল বিষয় যাচাই করেই এমন সিদ্ধান্ত বলেও জানান তিনি। বোয়িংয়ের কোম্পানি থেকে বিমানকে এখনো নানা সার্ভিস দেওয়া হচ্ছে। বিমানের বহরে থাকা বোয়িংয়ের সার্ভিসের জন্য তাদের একটি টিমও বাংলাদেশে রয়েছে। 

সিইও বলেন, আমাদের ক্ষতি করে আমরা কোনো পদক্ষেপ নেব না। এ বিষয়ে স্ট্যাডি করছি। আমরা মনে করি, যেহেতু বোয়িং আছে, পৃথিবীর অন্যতম আধুনিক বিমান এয়ারবাস, সেটিও যদি আমাদের বহরে যুক্ত হয় তাহলে আমাদের ব্র্যান্ডিংটা বাড়বে। আন্তর্জাতিক বিমানের চেহারায় বৈচিত্র্য আসবে। আমরা যখন চিন্তা করব, তখন আমাদের সক্ষমতা বাড়বে। এ ক্ষেত্রে আমরা পজিটিভলি চিন্তা করছি। তবে এটি আমাদের সাবজেক্ট টু টেকনো ফাইনানসিয়াল এবিলিটি স্ট্যাডি এবং আলমেটলি আমাদের মার্কেট ডিমান্ড করে কি না সেই ক্ষেত্রে লাভজনক হবে কি না।

এমআইকে/জেবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর