যারা বিমান ভ্রমণ করেন তাদের কাছে জেট ল্যাগ শব্দটা পরিচিত। জেট লেগ হচ্ছে বিমানে পূর্ব থেকে পশ্চিমে ভ্রমণের কারণে সৃষ্ট উপসর্গ। জেট ল্যাগ একটি ক্রোনোবায়োলজিক্যাল সমস্যা। দীর্ঘ ভ্রমণে টাইম জোন বদলানোর ফলে শারীরিক কার্যক্রমের ছন্দ নষ্ট হয়। ফলে ক্ষুধা, ঘুম, হরমোন নিঃসরণ ইত্যাদি ব্যাহত হয়। সাধারণত জেট লেগ কাটিয়ে উঠতে কয়েকদিন লাগে।
জেট ল্যাগের লক্ষণ ও কারণ
বিজ্ঞাপন
জেট ল্যাগের পরিচিত লক্ষণগুলো হল, ভালো ঘুম না হওয়া, দিনের বেলাতেও ক্লান্তবোধ করা, কাজে মন বসাতে না পারা ইত্যাদি৷ বিমান যাত্রার পরে টানা দুই-তিন ধরে এই সমস্যায় ভোগা কিছু অস্বাভাবিক নয়।
এই সব সমস্যা ছাড়া পেটের সমস্যাও দেখা দিতে পারে ৷ বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক ট্রিপের পরেই এই জেট ল্যাগের সমস্যা দেখা দেয়৷ দুই বা তার বেশি টাইম জোন পেরোলেই এই সমস্যাটা দেখা দেয়৷ আসলে এই সময়ে আমাদের বায়োলজিকাল ক্লকের অনেকটাই বদলে যায়৷ অর্থাত্ আমরা সাধারণত যে সময়ে ঘুমোতে যাই, যে সময় জেগে থাকি, সেই অভ্যাসের অনেকটাই এই টাইম জোনের পরিবর্তনের ফলে বদলে যায়।
তাই বায়োলজিক্যাল ক্লকের সঙ্গে সময় ঘড়ির ভারসাম্যটা বজায় থাকেন স্বাভাবিক ভাবেই ৷ তাছাড়া বিমানে যাত্রাকালীন অনেক উঁচুতে থাকার ফলে রক্তে অক্সিজেনের খানিকটা অভাব হয়। ফলে শরীরে একটা অস্বস্তি এবং ডিহাইড্রেশনের সমস্যা তৈরি হতে পারে ৷ সব মিলিয়ে তৈরি হয় জেট ল্যাগের সমস্যা ৷ তবে জেট ল্যাগে কাবু হয়ে না পড়ার কয়েকটা টিপস আছে৷
জেট ল্যাগ দূর করার উপায়
বিজ্ঞাপন
বিদেশে যাওয়ার আগে, প্রথমেই টাইম জোন সম্পর্কে তথ্য নিন ৷ হিসেব করে দেখে নিন, সেই সময় আপনি যেখানে থাকবেন, ঠিক কোন কাজটি করবেন ৷ ট্রিপের কয়েক দিন আগে থেকে সেই অনুযায়ী আপনার দিনের রুটিন ঠিক করুন ৷ একটু একটু করে প্রতিদিনই সময় পালটে নিজেকে প্রস্তুত করুন৷
ধরুন আপনি রাতের ফ্লাইট ধরলেন ৷ হিসেব করে দেখা গেল টাইম জোন অনুযায়ী আপনি সেখানে সকাল বা দুপুরে পৌঁছানোর কথা। ডিনারের পর আপনার ফ্লাইটে ঘুমনোরই সম্ভাবনা বেশি ৷ তাই সকালে পৌঁছালে আপনার বায়োলিজিকাল ক্লকের তেমন পরিবর্তন হবে না ৷ তাই সময়ের হিসেব করে ফ্লাইটের সময় ঠিক করুন।
বিমান যাত্রার ১২ ঘন্টা আগে চা- কফির মতো ক্যাফেইন জাতীয় পানীয় খাবেন না ৷ ভালো ঘুমের জন্য কফি মোটেই ভালো নয় ৷ রাতের বিমান ধরলেও আপনার তাড়াতাড়ি ঘুম নাও আসতে পারে ৷ তাছাড়া হালকা ডিনার করে ফ্লাইট ধরাই বুদ্ধিমানের কাজ৷ অ্যালকোহলও ভুলেও পান করবেন না।
দীর্ঘ বিমান যাত্রার সময়, নিয়ম করে প্রত্যেক ঘন্টায় একটু করে পানি পান করুন।৷ আপনার তেষ্টা না পেলেও পানি পান করা জরুরি৷ তাতে শরীর হাইড্রেটেড থাকবে ৷ তাছাড়া কন্ট্যাক্ট লেন্স থাকলে, পরিষ্কার লেন্স পরুন। বিমানে ঘুমোনোর আগে কন্ট্যাক্ট লেন্স খুলে নিন ৷ সঙ্গে আই ড্রপ ক্যারি করুন।
দিনের বেলায় গন্তব্যে পৌঁছালে যতটা পারেন সূর্যের আলো গায়ে লাগান ৷ সেখানকার সময়ের সঙ্গে অ্যাডজাস্ট করে নিতে সুবিধা হবে ৷
বিদেশ যাওয়ার জেট ল্যাগের সমস্যা কাটাতে চিকিত্সকের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ খেতে পারেন ৷ তবে নিজে থেকে কোনও ওষুধ একেবারেই খাবেন না ৷ তাতে হিতে বিপরীত হতে পারে৷
এজেড

