গাড়ি, মোটরসাইকেল, ট্রেন এবং জাহাজ চলে ডিজেল ও পেট্রোলে। কিন্তু বিমান ওড়াতে কোন ধরনের জ্বালানি লাগে? বিমানের জ্বালানি নিয়ে অনেক ধরনের মিথ আছে। সেগুলোর পুরোটা সত্যি নয়। অনেকেই মনে করেন বিমান বুঝি কেরোসিনে চলে। জানুন বিমানের জ্বালানি সম্পর্কে।
এভিয়েশন ফুয়েল
বিজ্ঞাপন
একটি বিশেষ ধরনের পেট্রোলিয়ামভিত্তিক জ্বালানি এভিয়েশন ফুয়েল। এটি পাওয়ার এয়ারক্রাফটে ব্যবহৃত হয়। হিটিং বা রোড ট্রান্সপোর্টের মতো কম তাৎপর্যপূর্ণ ব্যবহৃত জ্বালানির তুলনায় এটি উচ্চ মানের হয়ে থাকে। এতে কিছু বিশেষ মিশ্রণ থাকে যার কারণে উচ্চ তাপমাত্রায় আইসিং বা বিস্ফোরণের ঝুঁকি কমায় এটি।
জেট জ্বালানি বা কেরোসিন
বর্তমানে বাণিজ্যিক বিমান সংস্থা এবং সামরিক বিমানগুলো সর্বাধিক জ্বালানির দক্ষতা এবং সর্বনিম্ন ব্যায়ের জন্য জেট জ্বালানি ব্যবহার করে।
জানলে অবাক হবেন যে এক্ষেত্রে সুপরিচিত কেরোসিন ব্যবহৃত হয়ে থাকে। জেট ফুয়েল বলতে পরিশোধিত কেরোসিন ভিত্তিক জ্বালানিকে বোঝায় যা টারবাইন ইঞ্জিন, টার্বোপ্রপস এবং জেট ইঞ্জিনসহ বিমানে ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা হয়।
বিজ্ঞাপন
দুই ধরনের জেট ফুয়েল রয়েছে। এগুলো হলো জেট এ এবং জেট এ১। এই দুই ধরনের জ্বালানির মধ্যে উৎপাদনগত মৌলিক পার্থক্য রয়েছে। জেট এ১ এর ফ্রিজিং পয়েন্ট -৪৭ ডিগ্রি। অর্থাৎ এই তাপমাত্রায় এই জ্বালানি হিমায়িত হয়। অন্যদিকে, জেটএ এর ফ্রিজিং পয়েন্ট -৪০ ডিগ্রি। নিম্ন হিমাঙ্ক হওয়ায় দীর্ঘ আন্তর্জাতিক উড়ানে জেট এ১ ব্যবহৃত হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে জেট এ জ্বালানি বেশি প্রচলিত। তবে বিশ্বের অন্যান্য দেশে জেট এ১ বেশি ব্যবহৃত হয়।
বিমানে গ্যাসের পরিবর্তে জেট ফুয়েল ব্যবহৃত হয় কেন?
এই ব্যাপারটি পরিষ্কার যে, বিমান ধোঁয়ায় চলতে পারে না। তাই, ইঞ্জিনের শক্তির যোগান দিতে এটি জ্বালানিতে সঞ্চিত রাসায়নিক শক্তি ব্যবহার করে। এছাড়াও এর পেছনে আরও কিছু কারণ রয়েছে।
এভিয়েশন ফুয়েল, জেট ফুয়েল, এভিয়েশন গ্যাসলাইন, বাইও ফুয়েল এসব ধরনের বিভিন্ন জ্বালানি বিমানে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
একটি বিমানের জ্বালানি কী হবে তার নির্ভর করে ওই বিমানের কী ধরনের ইঞ্জিন আছে তার ওপর।
বিমানে কেন কেরোসিন তেল ব্যবহার করা হয়?
বিমান যখন আকাশে উঠে যায় সেখানকার বাইরের তাপমাত্রা থাকে অনেক কম। কেরোসিনের তরল হতে বরফ (ফ্রিজিং পয়েন্ট) হতে লাগে মাইনাস ৪০ ডিগ্রি থেকে মাইনাস ৪৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা।
কেরোসিনের বদলে যদি গ্যাসোলিন ব্যবহার করা হত তাহলে বিমান উপরে উঠা মাত্র তা বরফ হয়ে যেত। কেরোসিনে এই সমস্যা নেই।
কেরোসিনের ফ্ল্যাশ পয়েন্ট গ্যাসোলিনের চেয়ে অনেক বেশি। ফ্ল্যাশ পয়েন্ট হল সেই তাপমাত্রা যে তাপমাত্রায় দাহ্য কোনো পদার্থ জ্বলে উঠে এবং বাষ্পে রূপান্তরিত হয়। বিমানের আকাশে উড়া এবং দ্রুত গতি অর্জনের ক্ষেত্রে ফ্ল্যাশ পয়েন্ট অনেক দরকার।
কেরোসিনে অকটেনের পরিমাণ বেশি, তাই গ্যাসোলিনের চেয়ে দ্রুত গতি অর্জনে করতে পারে। কেরোসিন গ্যাসোলিনের চেয়ে অনেক বেশি পাতলা ও মসৃণ হয়ে থাকে। কেরোসিন দামেও সস্তা গ্যাসোলিনের চেয়ে।
এজেড