১২০ বছর আগেও আকাশে ওড়ার স্বপ্ন মানুষের কাছে অধরাই ছিল। মানুষকে আকাশে ওড়ার স্বপ্ন দেখিয়েছেন রাইট ভ্রাতৃদ্বয়। যাদেরকে সারা দুনিয়া 'রাইট ব্রাদার্স' হিসেবে চেনে। উনবিংশ শতাব্দীর শেষভাগে জন্ম নেওয়া দুই সহোদরের কল্যাণে আজ মানুষ পাখির মতো আকাশে উড়ছে। অনেকের মনেই প্রশ্ন টনকে টন ওজনের ভারী উড়োজাহাজ কীভাবে আকাশে ওড়ে।
উড়োজাহাজ আকাশে ওড়ে ‘লিফট’ পদ্ধতির মাধ্যমে। আর ভেসে থাকে থার্স্ট পদ্ধতির মাধ্যমে।
বিজ্ঞাপন
আধুনিক বিমানে পাখা বাদ দিয়ে আরো চারটি প্রধান অংশ থাকে। এগুলো হলো-১. ফিউজিলেজ, ২. কন্ট্রোল সারফেস, ৩. প্রপেলার, ৪. লেজ বা টেল। লেজের অংশ এবং পাখাই বিমানকে ওঠা-নামায় সাহায্য করে, প্রপেলার সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যায় আর সব রকম ভার বহন করে দেহ।
উড়োজাহাজ যখন রানওয়েতে চলতে শুরু করে তখন এর সামনের বাতাসকে কেটে সামনে এগিয়ে যেতে হয়। উপরের বাতাসকে একই সময়ে নিচের বাতাস থেকে বেশি দূরত্ব অতিক্রম করতে হয়। অর্থাৎ, বিমানের উপরের অংশের বাতাসের বেগ নিচের অঞ্চলের বাতাসের বেগ অপেক্ষা বেশি হতে হয়।
ওপরের বাতাস বিমানের উপর যে চাপ প্রয়োগ করে, নিচের বাতাস বিমানের উপর তার থেকে বেশি চাপ প্রয়োগ করার সুযোগ পায়। অর্থাৎ বিমানটি নিচের দিক থেকে বেশি চাপ অনুভব করে, তাই ওপরে উঠে যায়। এভাবেই বিমান টেক অফ করে।
বিমান আকাশে টেক অফ করার পর তাকে ভেসে থাকতে হয়। কিন্তু বাতাস এটাকে পিছনের দিকে ড্রাগ করে নামিয়ে দিতে চায়। কাজেই এই বলকে অতিক্রম করে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হলে চাই বল বা থার্স্ট। এ বল নিউটনের গতির তৃতীয় সূত্র কাজে লাগিয়ে সৃষ্টি করা হয়।
বিজ্ঞাপন
বিমানের ইঞ্জিন থাকে এর ডানায়। বিমানের উইং বা ডানায় জেট ইঞ্জিনচালিত কম্প্রেসর ঘুরলে বাইরের বায়ু প্রচুর পরিমাণে ইঞ্জিনের ভিতরে প্রবেশ করে। ইঞ্জিনে ২টি চেম্বার থাকে। একটি কম্বাশসন চেম্বার, অন্যটি এয়ার চেম্বার। এই দুই চেম্বার থেকে প্রচন্ড বেগে বের হওয়া এক্সহস্ট গ্যাস পেছনের বায়ুতে আঘাত করে, ফলে নিউটনের তৃতীয় সূত্র অনুসারে পিছনের বায়ু থার্স্ট প্রয়োগ করে বিমান কে সামনের দিকে চলতে সাহায্য করে।
আধুনিক জেট বিমানে প্রপেলার থাকে না। তাহলে বিমান কীভাবে উড়ে? এটি ওড়ে নিউটনের তৃতীয় গতিসূত্র অনুযায়ী। এর লম্বা নলে হাওয়া ভর্তি করে তা সরু পথে বের করা হয়, হাওয়া তীব্রভাবে বিমানের পিছন দিক থেকে বেরিয়ে গেলে বিমান হাওয়ার চাপে সামনের দিকে এগিয়ে যায়।
আধুনিক জেট-বিমান র্যাম জেট, প্রপ জেট, টারবো জেট এই তিন রকম হয়। রকেটও অনেকটা জেট-বিমানের মত, তবে এর ভেতরেই নিজস্ব অক্সিজেন থাকে, জেটের মত বাইরে থেকে হাওয়া সংগ্রহ করতে হয় না।
এজেড