শুক্রবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

পাইলট হওয়ার স্বপ্ন পূরণে পাশে আছে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স

মো. কামরুল ইসলাম
প্রকাশিত: ১৬ নভেম্বর ২০২৫, ১০:৫৭ এএম

শেয়ার করুন:

পাইলট হওয়ার স্বপ্ন পূরণে পাশে আছে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স
মেধাবীদের বিনা খরচে পাইলট বানাবে ইউএস-বাংলা, আবেদন আহ্বান।

ধন-সম্পদ থাকলেই যেমন লক্ষ্যে পৌঁছানো যায় না তেমনি অনেক মেধাবী শিক্ষার্থীও পর্যাপ্ত মেধা থাকা সত্ত্বেও সুযোগের অভাবে অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌছাতে পারে না। ওড়ার ইচ্ছে অনেকের আছে কিন্তু উড়তে পারছে কয় জন? শৈশবকালে বাচ্চাদের যদি জিজ্ঞেস করা হয়, বড় হয়ে তুমি কি হতে চাও?

কয়েকটি কমন উত্তরের মধ্যে উল্লেখযোগ্য তিনটি হচ্ছে- কেউ ডাক্তার, কেউ ইঞ্জিনিয়ার আবার কেউ পাইলট হতে চায়। মেধাবী হলেই সরকারের শিক্ষানীতির কারনে ডাক্তার কিংবা ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার পথটা কিছুটা সুগম হয়। কিন্তু পাইলট? মেধাবী হলেই হয়ে উঠে না। সঙ্গে প্রয়োজন অর্থ ও সামর্থ্যের। পর্যাপ্ত অর্থ-বিত্ত না থাকার কারনে অনেক মেধাবীর পাইলট হওয়ার স্বপ্ন, দূঃস্বপ্ন হয়েই থেকে যায়।  


বিজ্ঞাপন


ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স বাংলাদেশের অন্যতম বেসরকারি এয়ারলাইন্স। আজ প্রায় ১২ বছর অতিক্রম করতে চলেছে আকাশ পরিবহন ব্যবসায়। শুরু থেকে একটি অন্যতম সেবাধর্মী প্রতিষ্ঠান হিসেবে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছে।

সামাজিক দায়বদ্ধতার অংশ হিসেবে নানাবিধ কাজ ছাড়াও দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে দক্ষ জনশক্তি  তৈরিতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। ক্রমবর্ধমান চাহিদার বিপরীতে পাইলট সংকটে পতিত হচ্ছে বিশ্বের প্রায় সব বিমানসংস্থা। আর এই সংকট থেকে উত্তরণের জন্য ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স পরিকল্পনামাফিক মেধাবী শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে পাইলট তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে।

২০১৪ সালের ১৭ জুলাই দুইটি ড্যাশ-৮-কিউ৪০০ নিয়ে যাত্রা শুরু করা ইউএস-বাংলার বিমান বহরে বর্তমানে তিনটি ৪৩৬ আসনের এয়ারবাস ৩৩০-৩০০, ৯টি বোয়িং ৭৩৭-৮০০সহ মোট ২৫টি এয়ারক্রাফট রয়েছে। খুব শিগগিরই বহরে আরো অধিক সংখ্যক এয়াক্রাফট যুক্ত করতে চলেছে ইউএস-বাংলা।

যেকোনো বিমানসংস্থার বিমানবহরে এয়ারক্রাফট সংযুক্তির সঙ্গে সঙ্গে অতিরিক্ত পাইলটের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয় কিন্তু তা সহজেই স্বল্পতম সময়ে পূরণ করা যায় না। বহরে নতুন এয়ারক্রাফট সংযোজন ও নতুন রুটের ব্যপ্তি ঘটানোর পূর্বেই পাইলট নিয়োগের বিষয়টি চূড়ান্ত করা এয়ারলাইন্সের পরিকল্পনারই অংশ।


বিজ্ঞাপন


অতিরিক্ত পাইলটের চাহিদা পূরণে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স ২০২২ সালের শুরুতে স্টুডেন্ট পাইলট ও এয়ারক্রাফট মেইনটেন্যান্স ইঞ্জিনিয়ার নিয়োগের পরিকল্পনা করে। তারই ধারাবাহিকতায় হিউম্যান রিসোর্স এর বিশেষজ্ঞদের সহায়তা নিয়ে নানাবিধ পরীক্ষার পর চূড়ান্তভাবে বাছাই করে থাকে। 

ইতিমধ্যে ২২ জন প্রশিক্ষণার্থী যুক্তরাষ্ট্রে ফ্লোরিডায় এপিক ফ্লাইট একাডেমিতে ফ্লাইট ট্রেনিং কোর্স শেষ করে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সে পাইলট হিসেবে যোগ দিয়েছেন। আরো ৫ জন প্রশিক্ষণার্থী খুব শিগগিরই কোর্স শেষ করে ইউএস-বাংলায় যোগদানের অপেক্ষায় আছে। ধারাবাহিকভাবে পাইলট ট্রেনিং কোর্স করার জন্য ৭ জন অপেক্ষমান। ফ্লাইট ট্রেনিং কোর্স শেষ করার পর ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন কমার্শিয়াল পাইলট লাইসেন্সপ্রাপ্ত (এফএএ সিপিএল) হন প্রশিক্ষণার্থীরা।

একই প্রক্রিয়ায় ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স এর অর্থায়নে মেধাবীদের মধ্য থেকে যাচাই-বাছাই করার পর পরবর্তী ক্যাডেট পাইলট তৈরির লক্ষ্যে আবেদনপত্র সংগ্রহ করার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। 

যে সকল মেধাবী শিক্ষার্থী বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৫.০০ প্রাপ্ত হলে আবেদন করার যোগ্যতা অর্জন করবে। পদার্থ বিজ্ঞান, সাধারণ ও উচ্চতর গনিত তিনটি বিষয়ের মধ্যে নূন্যতম দুইটি বিষয়ে জিপিএ ৫.০০ এবং একটি বিষয়ে জিপিএ ৪.০০ এবং ইংরেজিতে জিপিএ ৪.০০-সহ  এসএসসি এবং এইচএসসি-তে গণিত ও পদার্থ বিজ্ঞানে জিপিএ ৫.০০ ও ইংরেজিতে জিপিএ ৪.০০ প্রাপ্ত হলে আবেদন করতে পারবেন। এছাড়া ‘ও’ লেভেলে পদার্থ ও গণিতসহ ৫ (পাঁচ) বিষয়ে গ্রেড-এ  এবং এবং‘এ’ লেভেলে গণিত ও পদার্থ বিজ্ঞানে গ্রেড-বি পেয়েছেন শুধুমাত্র সেসকল শিক্ষার্থীরাই আবেদনের জন্য যোগ্য হবেন। জিইডি কে একাডেমিক যোগ্যতা হিসেবে বিবেচনা করা হবে না। ইংরেজিতে সকল আবেদনকারীকে দক্ষ হতে হবে।

us-bangla-20220421150348

ক্যাডেট পাইলটদের নির্বাচন প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে আইকিউ টেস্ট, লিখিত পরীক্ষা (ইংরেজি, গণিত ও পদার্থ বিজ্ঞান), পাইলট যোগ্যতা পরীক্ষা, সাইকোমেট্রিক, মেডিকেল ও মৌখিক পরীক্ষা। সকল টেস্টে উত্তীর্ণদের মধ্য থেকে নির্বাচিতদের ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনায় পৃথিবীর যেকোনো দেশে ফ্লাইট ট্রেনিংয়ের জন্য পাঠানো হবে। নির্দিষ্ট মেয়াদী প্রশিক্ষণ সাফল্যের সঙ্গে সম্পন্নের পর উত্তীর্ণ ক্যাডেট পাইলটগণ ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সে ফার্স্ট অফিসার হিসেবে যোগদান করতে পারবেন।

আবেদনকারীকে অবশ্যই বাংলাদেশি হতে হবে এবং অন্য কোনো দেশের নাগরিক হতে পারবে না। আবেদনের সময় বয়স হতে হবে ১৭ থেকে ২২ বছর। উচ্চতা – পুরুষদের ক্ষেত্রে ১৬৮ সেন্টিমিটার (৫ ফুট ৬ ইঞ্চি) এবং মেয়েদের ক্ষেত্রে ১৬৪ সেন্টিমিটার (৫ ফুট ৪ ইঞ্চি) হতে হবে। প্রার্থীর ওজন হতে হবে বিএমআই এর উচ্চতার আনুপাতিক হারে। প্রার্থীকে অবশ্যই অবিবাহিত হতে হবে। দৃষ্টিশক্তি হতে হবে ৬/৬। অধুমপায়ী ও নন-অ্যালকোহলিক হতে হবে। যেকোনো ধরনের অপরাধের সাথে সম্পৃক্ততা অযোগ্যতা হিসেবে বিবেচিত হবে।

সিভিল এভিয়েশন অথরিটি অব বাংলাদেশ থেকে ক্লাস-১ মেডিকেল সার্টিফিকেট প্রাপ্ত হতে হবে।

আরও পড়ুন: মেধাবীদের বিনা খরচে পাইলট বানাবে ইউএস-বাংলা, আবেদন আহ্বান

ক্যাডেট পাইলট এর যোগ্যতা নির্ধারণে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স উপরোক্ত শর্তাবলীর পরিবর্তন কিংবা পরিমার্জন করার অধিকার সংরক্ষণ করে থাকে। ক্যাডেট পাইলটের এর মতো এভিয়েশনে দক্ষ জনশক্তি তৈরীতে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছে। আবেদন করার জন্য ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন।

আবেদনের শেষ সময় ৩০ নভেম্বর ২০২৫

যারা ইউএস বাংলার মাধ্যমে পাইলট হওয়ার স্বপ্ন দেখেন তারা https://usbair.com/career/student-pilot এই ঠিকানায় যোগাযোগ করতে পারেন। 

লেখক: মো. কামরুল ইসলাম, মহাব্যবস্থাপক-জনসংযোগ, ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স

এজেড

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর