মাঝ আকাশে, শত শত কিলোমিটার উচ্চতায় ভেসে থাকা যুদ্ধবিমান কীভাবে আবার জ্বালানি নেয়? এই কথা অনেকেই হয়তো শোনেননি। কেউবা শুনে থাকবেন হয়তো। এই পদ্ধতিতেকে বলা হয়, মিড এয়ার রিফুয়েলিং বা এরিয়াল রিয়েফুয়েলিং। কীভাবে কাজ করে এই চমকপ্রদ প্রযুক্তি? চলুন জেনে নিই বিস্তারিত।
কী এই মিড এয়ার রিফুয়েলিং?
এরিয়াল রিফুয়েলিং হচ্ছে এমন একটি প্রক্রিয়া, যেখানে একটি বিশেষ রিফুয়েলিং বিমান (Tanker Aircraft) মাঝ আকাশে উড়ে থাকা অন্য একটি বিমানকে জ্বালানি সরবরাহ করে।
এটি মূলত মিলিটারি বা যুদ্ধবিমানগুলোর জন্য ব্যবহৃত হয়, যাতে তারা মিশনের মাঝখানে ল্যান্ড না করেও অনেক দূর পর্যন্ত যেতে পারে।
কীভাবে কাজ করে এই প্রক্রিয়াটি?
মাঝ আকাশে রিফুয়েলিংয়ের সময় দুটি বিমান নির্দিষ্ট উচ্চতায় এবং গতি মিলে খুব কাছাকাছি অবস্থানে থাকে। এরপর শুরু হয় জ্বালানি স্থানান্তরের প্রক্রিয়া।
বিজ্ঞাপন
দুটি পদ্ধতি রয়েছে-
১. বুম মেথড
প্রধানত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ব্যবহৃত
একটি রিফুয়েলিং ট্যাঙ্কার বিমানের পেছন থেকে একটি বুম বা শক্ত নল বের হয়ে আসে।
এটি নিচের বিমানের জ্বালানি গ্রহণকারী অংশে (receptacle) ঢুকিয়ে দেওয়া হয়।
নিয়ন্ত্রণকারী ব্যক্তি বুমটি পরিচালনা করে সঠিকভাবে সংযোগ ঘটায়।
খুব দ্রুত জ্বালানি সরবরাহ করা যায় (~1,000 gallons/minute)।
২. প্রোব অ্যান্ড ড্রগ পদ্ধতি
ইউরোপ, রাশিয়া ও ন্যাটো সদস্যদের মাঝে প্রচলিত
রিফুয়েলিং বিমানের পেছনে একটি ফ্লেক্সিবল পাইপ বা হোস ঝুলে থাকে যার মাথায় একটি ড্রগ (ঝাঁটা সদৃশ গঠন) থাকে।
যুদ্ধবিমানটি তার প্রোব (পাইপ/নল) নিয়ে সেই ড্রগে ঢুকিয়ে দেয়।
স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংযোগ হলে জ্বালানি প্রবাহিত হয়।
এই প্রযুক্তির গুরুত্ব কী?
যুদ্ধবিমানকে ল্যান্ড না করেই দীর্ঘ সময় আকাশে টিকে থাকার সুযোগ দেয়।
দূরবর্তী মিশনে (যেমন শত্রুর ভূখণ্ডে) গোপন অভিযান পরিচালনা করা সম্ভব হয়।
বিমানবাহী রণতরী বা বিদেশি ঘাঁটির ওপর নির্ভরতা কমে।
এই প্রক্রিয়ার চ্যালেঞ্জ
উভয় বিমানের গতি ও উচ্চতা নিখুঁতভাবে সমন্বয় করতে হয়।
খারাপ আবহাওয়ায় এটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে।
একটুও ভুল হলে সংঘর্ষ বা দুর্ঘটনার সম্ভাবনা থাকে।
আরও পড়ুন: বি ২ বোমারু বিমান: পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী ও ভয়ংকর যুদ্ধ বিমান
মাঝ আকাশে রিফুয়েলিং আধুনিক যুদ্ধবিমানের একটি অসাধারণ প্রযুক্তি যা বিমানকে ল্যান্ড না করেই হাজার হাজার কিলোমিটার পাড়ি দিতে সক্ষম করে। এটি সামরিক কৌশলে বিপ্লব এনেছে এবং আজকের এভিয়েশন জগতের একটি বিস্ময়কর অধ্যায়।
এজেড